🤔কেউ মারা গেলে শ্রাদ্ধে আমিষ বাদ দিয়ে নিরামিষ কেন খাবেন...?
👉একজন সনাতন ধর্মের লোক মারা গেলে বলতে হয়,"দিব্যান লোকান্ স্ব গচ্ছতু" অর্থাৎ তিনি দিব্যধাম প্রাপ্ত হোক।
দিব্য মানে দেবতার স্থান যেখানে দেবতারা ভগবানের আরাধনায় মগ্ন থাকেন । অপরদিকে, মাছ মাংস মদ ইত্যাদি রাক্ষসদের খাবার ।
আমরা দেখি অধিকাংশ হিন্দু পরিবারে মানুষ মারাগেলে মৃত দেহের আত্মার শান্তির লক্ষ্যে এবং ভগবান কিংবা দেবধামে যাওয়ার লক্ষ্যে আত্মীয় স্বজনকে শ্রাদ্ধে মাছ খাওয়ান তাহলে কি বুঝলেন?
শাস্ত্রের নিয়মে আমরা একদিকে দিব্যধামে যাওয়ার জন্য ভগবানের কাছে প্রার্থনা করছি, অন্যদিকে ভূত পেতনীর খাবার মানুষকে খাইয়ে ভগবানের কাছে প্রার্থনা করছি যে তিনি দিব্যধামে প্রবেশ করুক । রাক্ষসদের খাবার যদি মানুষকে খাইয়ে শ্রাদ্ধে বিষ্ণুর নিয়ম অমান্য করে রাক্ষসদের উদ্দেশ্যে শাদ্ধ করি তাহলে মৃত ব্যক্তি কি স্বর্গে যাবে নাকি নরক লোকে যাবে সেটা নিশ্চয় সকলে বুঝতে পারছেন।
ন দদ্যাদামিষং শ্রাদ্ধে ন চাদ্যাদ ধর্মতত্ত্ববিৎ।
মনান্নৈ মৎপরা প্রীতির্যথা ন পশুহিংসয়া।।
নৈতাদৃশঃ পরো ধর্ম নৃণাৎ সদ্ধর্মমিচ্ছতাম্।
ন্যাসো দন্ডস্য ভূতেষু মনো বাক্কায়জস্য।।
(ভাগবত ৭।১৫।৭-৮)
--- ধর্মতত্বজ্ঞ ব্যক্তি পুরুষ শ্রাদ্ধকর্মে আমিষ(মাছ-মাংস) অর্পন করবেন না। এবং নিজেও ভোজন করবেন না। কারন পিতৃগণ মুনি ঋষিদের যোগ্য হবিষান্ন দ্বারা যেরুপ প্রসন্ন লাভ করেন, সেরূপ পশু হত্যার দ্বারা নয়। সৎ ধর্মপালনে অভিলাষী ব্যক্তির কাছে কোন জীবকে কায়মনোবাক্যে কোনরূপ কষ্ট না দেওয়ার মতো ধর্ম আর নেই।
শ্রীমদ্ভাগবতে (৫/২৬/৫-৩৬) বর্ণনা আছে ২৮টি নরক কুণ্ডের কথা তারমধ্যে ৩ নাম্বার নরক রৌরব, ৫নাম্বার নরক কুম্ভীপাক, ৯নাম্বার নরক অন্ধকূপ, ১৬নাম্বার নরক প্রাণরোধ, ১৭ নাম্বার নরক বিশসন, ২৩ নাম্বার নরক রক্ষোভোজন, ২৪নাম্বার নরক শূলপ্রোত । সবগুলো নরককুন্ড পশু হত্যাও, খাওয়া কিংবা অন্যকে খাওয়ানোর অপরাধে তৈরি অর্থাৎ ভাগবতের ২৮টি নরককুন্ডের মধ্যে এই কুণ্ডগুলোতে পাঠানো হবে যারা পশুকে বিভিন্নভাবে হত্যা করে, নিজে আহার করে কিংবা অন্যকে আহার করায় ।
সুতরাং শ্রাদ্ধ মানে বিষ্ণুর_প্রীতির_উদ্দেশ্যে যা কিছু দান করা হবে তাই শ্রাদ্ধ আর,গীতা ও ভাগবতে যেহেতু নিরামিষ আহারের প্ররোক্ষ নির্দেশ দেওয়া আছে, তাই শ্রাদ্ধ হবে পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণের নিয়ম অনুসারে যেখানে পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণ বলেছেন-
"পত্রং পুষ্পং ফলং তোয়ং যো মে ভক্ত্যা প্রযচ্ছতি।
তদহং ভক্ত্যুপহৃতমশ্নামি প্রযতাত্ননঃ।।"( গীতা ৯/২৬)
অনুবাদঃ যে বিশুদ্ধ চিত্ত নিষ্কাম ভক্ত আমাকে ভক্তি সহকারে পত্র পুষ্প ফল ও জল অর্পণ করে, তার সেই ভক্তিপ্লুত উপহার আমি প্রীতিসহকারে গ্রহন করি।।
Post a Comment
যুক্তি সংগত কথা বলুন.................