ইসলাম অন্য ধর্মাবলম্বীদের প্রতি কতটা সহানুভূতিশীল সেটা তাদের কথায়-কাজে প্রমাণ পাওয়া যায়।

বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা হিন্দু হওয়ার কারণে  পদত্যাগ করেছেন। ৯৫% মুসলমানদের দেশে একজন হিন্দু কি করে একটা স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার প্রধান হন এই নিয়ে গত ২ বছর প্রচুর উস্কানিমূলক প্রচারণা চলেছে। শেষ পর্যন্ত সাম্প্রদায়িকতার কাছে হার মেনে পদত্যাগে ঘোষণা দিলেন কিশোর কুমার। বিদ্যানন্দ থেকে আনন্দ বা বিদ্যা শব্দ দুটো হারিয়ে গেলেও আমার কিছু বলার নাই। কারণ ধর্মটাই এমন যে, বিধর্মীদের সাথে সম্পর্ক রাখাও নাজায়েজ। ইসলাম ধর্মের মূল শিক্ষাটাই হচ্ছে জন্মের পর থেকে বিধর্মীদেরকে শত্রু হিসেবে, কাফের হিসাবে চিহ্নিতকরণ। বিদ্যানন্দ নামটি নিয়ে শুরু থেকে বাংলা ভাষা ভাষী মুসলমানদের আপত্তি ছিল। এই নাম অবশ্যই হিন্দু গন্ধযুক্ত। বাংলা ভাষাটাই ঘোরতর হিন্দুত্ব ধারণ করে। বাংলা নাম শুনলেই ধূপধুনোর গন্ধ আসে। মুসলমানের নাম হবে ইসলামিক। "বিদ্যানন্দ" শুনলেই মুসলমানের বিবেকানন্দ মনে হয়! অনেকের কাছে মনে হয় নিশ্চয় রামকৃষ্ণ মিশন ছদ্মনামে গরীব মুসলমানের ঈমান নষ্টের গভীর ষড়যন্ত্র শুরু করেছে! স্পষ্টত ইহুদী নাসারাদের ষড়যন্ত্র সম্ভবত!!

"ইসলামই একমাত্র শান্তির ধর্ম, ইসলামই সহনশীলতার ধর্ম" যারা বলেন তারা আসলে মিথ্যাবাদী। ইসলাম অন্য ধর্মাবলম্বীদের প্রতি কতটা সহানুভূতিশীল সেটা তাদের কথায়-কাজে প্রমাণ পাওয়া যায়। বৌদ্ধদের বলতে শুনি "জগতের সকল প্রাণী সুখী হউক"। আর মুসলমানদের বলতে শুনি- "হে আল্লাহ তুমি সারাবিশ্বের মুসলমানদের হেফাজত করো।" খ্রিস্টান, বৌদ্ধ ও হিন্দুদেরও ইফতার বিতরণ করতে দেখেছি, অথচ করোনা'য় ত্রাণ সহায়তা বিতরণ করার সময় দেখেছি হিন্দুদের লাইন থেকে বের করে দিতে! ইসলাম পরমতসহিষ্ণু না, এটাই বাস্তবতা..

এছাড়া যে ধর্ম তার উম্মতদের শেখায়, 
"কাফেরদেরকে গর্দানের উপর আঘাত হানো এবং তাদেরকে কাটো জোড়ায় জোড়ায়" - (কুরআন ৮:১২)
"মুশরিকদের হত্যা করো যেখানে তাদের পাও, তাদের বন্দী করো এবং অবরোধ করো; আর প্রত্যেক ঘাঁটিতে তাদের সন্ধানে ওঁৎ পেতে বসে থাকো" - (কুরআন ৯:৫)

يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا لَا تَتَّخِذُوا الْيَهُودَ وَالنَّصَارَىٰ أَوْلِيَاءَ ۘ بَعْضُهُمْ أَوْلِيَاءُ بَعْضٍ ۚ وَمَنْ يَتَوَلَّهُمْ مِنْكُمْ فَإِنَّهُ مِنْهُمْ ۗ إِنَّ اللَّهَ لَا يَهْدِي الْقَوْمَ الظَّالِمِينَ [٥:٥١

হে মুমিণগণ! তোমরা ইহুদী, খ্রীষ্টানদেরকে বন্ধু হিসাবে গ্রহণ করিও না। তারা একে অপরের বন্ধু। তোমাদের মধ্যে যে তাদের সাথে বন্ধুত্ব করবে সে তাদের অন্তর্ভুক্ত। আল্লাহ জালেমদেরকে পথ প্রদর্শন করেন না। 
-- {সূরা মায়েদা-৫১}

إِنَّمَا يَنْهَاكُمُ اللَّهُ عَنِ الَّذِينَ قَاتَلُوكُمْ فِي الدِّينِ وَأَخْرَجُوكُمْ مِنْ دِيَارِكُمْ وَظَاهَرُوا عَلَىٰ إِخْرَاجِكُمْ أَنْ تَوَلَّوْهُمْ ۚ وَمَنْ يَتَوَلَّهُمْ فَأُولَٰئِكَ هُمُ الظَّالِمُونَ [٦٠:٩]

আল্লাহ কেবল তাদের সাথে বন্ধুত্ব করতে নিষেধ করেন, যারা ধর্মের ব্যাপারে তোমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছে, তোমাদেরকে দেশ থেকে বহিস্কৃত করেছে এবং বহিস্কারকার্যে সহায়তা করেছে। যারা তাদের সাথে বন্ধুত্ব করে তারাই জালেম। -- {সূরা মুমতাহিনা-৮}

يَٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُوا۟ لَا تَتَّخِذُوا۟ بِطَانَةً مِّن دُونِكُمْ لَا يَأْلُونَكُمْ خَبَالًا وَدُّوا۟ مَا عَنِتُّمْ قَدْ بَدَتِ ٱلْبَغْضَآءُ مِنْ أَفْوَٰهِهِمْ وَمَا تُخْفِى صُدُورُهُمْ أَكْبَرُۚ قَدْ بَيَّنَّا لَكُمُ ٱلْءَايَٰتِۖ إِن كُنتُمْ تَعْقِلُونَ

হে মুমিনগণ, তোমরা তোমাদের ছাড়া অন্য কাউকে অন্তরঙ্গ বন্ধুরূপে গ্রহণ করো না। তারা তোমাদের সর্বনাশ করতে ত্রুটি করবে না। তারা তোমাদের মারাত্মক ক্ষতি কামনা করে। তাদের মুখ থেকে তো শত্রুতা প্রকাশ পেয়ে গিয়েছে। আর তাদের অন্তরসমূহ যা গোপন করে তা অধিক ভয়াবহ। অবশ্যই আমি তোমাদের জন্য আয়াতসমূহ স্পষ্ট বর্ণনা করেছি। যদি তোমরা উপলব্ধি করতে। -- (সুরা আলে ইমরান -১১৮)

0/Post a Comment/Comments

যুক্তি সংগত কথা বলুন.................

Stay Conneted