টিপু_সুলতানের_সত্যতা!

#টিপু_সুলতানের_সত্যতা

টিপু সুলতানকে আমাদের দেশের কমিউনিস্ট স্বঘোষিত ইতিহাসবিদরা আমাদের সামনে একজন "বীর স্বাধীনতা সংগ্রামী; যিনি কোনদিন ইংরেজদের সামনে মাথানত করেননি।" বলে পেশ করেছে। কিন্তু সত্যিই কি টিপু সুলতান এইরকম ছিল ??? আমাদের দেশের স্বঘোষিত ইতিহাসবিদরা তাকে আমাদের মধ্যে গ্রহণযোগ্য নায়ক করে তুলতে মিথ্যা সুন্দর ছবি আঁকার চেষ্টা করেছে। তার সঠিক সত্য জানার ও বলার এইবার সময় চলে এসেছে।

● ২২ শে মার্চ, ১৭৮৮ সালে টিপু সুলতান তার বিশ্বস্ত আবদুল কাদিরকে চিঠিতে লেখেছেন যে :- "১২০০০ -এর উপর হিন্দুকে আজ আমি ইসলামের ছায়াতলে সামিল করলাম। তার মধ্যে প্রচুর নাম্বুদ্রি ব্রাক্ষ্মনও ছিল। এই গৌরবপূর্ন ঘটনাটি সব যায়গায় ছড়িয়ে দাও। বিশেষ করে হিন্দুদের মধ্যে। সব হিন্দুকেই একদিন না একদিন ইসলাম গ্রহণ করতেই হবে জীবন বাঁচাতে হলে। বিশেষ করে হিন্দু নাম্বুদ্রি ব্রাক্ষ্মনরা যেন কথাটি মাথায় রাখে।"

● ১৪ ই ডিসেম্বর; ১৭৮৮ টিপু সুলতান তার বিশ্বস্ত সেনা প্রধানকে চিঠিতে লিখলেন যে :- "মীর হুসেন আলির সঙ্গে আরো দুজন বিশ্বস্ত লোককে আমি তোমার কাছে পাঠাচ্ছি। তুমি ওখানকার সব হিন্দুদের গ্রেফতার করো এবং তারপর গাছে ঝুলিয়ে হত্যা করো। যেইসকল হিন্দু মহিলার বয়স ২০র নীচে তাদের একমাত্র হত্যা করবে না। তাদের পরে আমার রাজমহলে পাঠিয়ে দেবে। এইটা আমার আদেশ।"

● ১৮ ই জানুয়ারি; ১৭৯০ টিপু সুলতান সৈয়দ আবদুল দুলুইকে চিঠিতে লিখলেন যে :- "কালিকট শহরের সমস্ত হিন্দুারা ইসলাম গ্রহণ করে নিয়েছে। আমি আমার জেহাদে সফল হয়েছি।"

বর্বর ইসলামিক মরুদস্যু টিপু সুলতানের এই কয়েকটা চিঠিই তার সম্বন্ধে আমাদের ভ্রান্ত ধারণা দূর করার পক্ষে যথেষ্ট। আর এই ঘটনাগুলি শোনার পর তিনি কতটা বর্বর, ক্রুর এবং নির্দয় নরপিশাচ ছিলেন সেইটাও বুঝতে অসুবিধা হয় না। তার এই বিশ্বস্ত লোকেদের সঙ্গে কথপকথনের চিঠিগুলি ১৯২৩ সালে প্রকাশিত হয়। তখন ভারতের শাসনব্যবস্থা কংগ্রেসের কালো ইংরেজ সাহেবদের হাতে ছিল না। আর ভারতের ইতিহাস লেখার ঠেকা লাল বাঁদর ইতিহাসবিদরা নেয়নি তাই আজ আমরা এতকিছু জানতে পারছি।

কর্নাটকের কূর্গ জেলা টিপু সুলতানের নরপিশাচতার সবথেকে বড় উদাহরণ হিসেবে এখনও মাথা তুলে দাঁড়িয়ে রয়েছে।

"টিপু সুলতানের আক্রমণ দেখা মনে হয় না যে এইটা একজন রাজা তার সাম্রাজ্য বিস্তারের জন্য যুদ্ধ করছে। তার বর্বর আক্রমণ দেখলে মনে হয় যেন টিপু সুলতান তার অমুসলিমদির পন্থ এবং সংস্কৃতির উপর নির্দয়তার সঙ্গে আক্রমণ করছে। তার আক্রমণের একটাই মাতাদর্শ তাহলো 'হয় ইসলাম গ্রহণ করো। নাহলে মৃত্যু'।  কূর্গের এই বর্বর আক্রমণে টিপু সুলতান ৪০০০০ হিন্দুকে হত্যা করে এবং প্রায় ১ লক্ষাধিক হিন্দুকে ইসলাম গ্রহণ করতে বাধ্য করে।"

        - আই এম মুথান্না
            (টিপু সুলতান এক্স-রেড)

খ্রিস্টান পন্থালম্বীরাও টিপু সুলতানের বর্বরতার শিকার হয়। পর্তুগিজ লেখক ফ্রাঁ বার্তেলোমিউ যিনি ১৭৯০ সালের টিপু সুলতানের যুদ্ধভিযান দেখার দুর্ভাগ্য অর্জন করেছিলেন। তিনি তার সচোক্ষে দেখা ঘটনার বর্ননা করেছেন যে :- 

"টিপু সুলতান সুসজ্জিত হাতির উপর চড়ে যুদ্ধে জেতেন। তার পিছনে তার ৩০০০০ জেহাদি যোদ্ধারা থাকতো। কূর্গের আক্রমণে টিপু সুলতান সেখানকার বেশিরভাগ লোককেই মেরে ফেলেছিল। মাদের প্রথমে গাছে গলায় দড়ি বেঁধে ঝোলানো হতো তারপর মায়ের গলায় আরেকটি দড়ি বেঁধে ছোট বাচ্চা শিশুদের ঝোলানো হত। হিন্দু ও খ্রিষ্টানদের নগ্ন করে তাদের দেহ হাতির পায়ের সঙ্গে বেঁধে ততক্ষণ ঘোরা হত যতক্ষন না অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের ফলে মানুষগুলোর মৃত্যু না হয়ে যায়। বিজিত এলাকার সকল হিন্দু মন্দির এবং খ্রিস্টান চার্চ লুঠপাট করে জ্বালিয়ে দেওয়া হত। 

ফ্রাঙ্কইস ফিডেলে রিপিউড ডি মন্টাউডিভার্ট নামক একজন ফরাসী সেনাপতি। যিনি মরিশাস থেকে ভারতে এসেছিলেন ব্রিটিনের বিরুদ্ধে টিপু সুলতানকে যুদ্ধে সাহায্য করতে। তিনি টিপু সুলতানের কর্মকাণ্ড সচোক্ষে দেখে যাসব লিখেছিলেন তা ১৯৮৮ সালে ফ্রান্সের এক গ্রন্থাগারে পাওয়া যায়। তাতে লেখা ছিল যে :- 

"টিপু সুলতানের কর্মকাণ্ড সচোক্ষে দেখে আমি মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ি। ম্যাঙ্গালোর জেতার পর  টিপু সুলতান রোজ সেখানকার হাজার হাজার হিন্দু ও খ্রিষ্টানদের হত্যা করে তাদের মাথা তার দুর্গের মিনারের উপর ঘন্টার পর ঘন্টা ঝুলিয়ে রাখতো যাতে আশেপাশের হিন্দু রাজা জেমুরিন এবং অন্যান্য হিন্দু ও খ্রিষ্টানরা দেখতে পারে যে ইসলাম গ্রহণ না করলে তাদের জন্য কি শাস্তি অপেক্ষা করছে। কোজিকোড় সেইসময় একটি হিন্দু ব্রাহ্মণদের এলাকা ছিল কোজিকোড়ে প্রায় ৭০০০ হিন্দু ব্রাহ্মণ পরিবার থাকতো। টিপু সুলতান প্রায় ২০০০ হিন্দু ব্রাহ্মণ পরিবারের লোককে হত্যা করে। এমনকি টিপু নামক নরপিশাচটি মহিলা ও বাচ্চাদেরও ছাড়তো না।"

টিপু সুলতান নিঃসেন্দহে একজন ভালো যোদ্ধা ছিলেন যিনি ইংরেজদির বিরুদ্ধে ভারতকে স্বাধীন করার জন্য লড়েছিলেন। কিন্তু এইটাও সত্যি যে তিনি একজন কট্টরপন্থী পাগল ছিলেন। বর্তমান সময় সেকুলারিজমের জ্বালায় তাকে আমাদের ইতিহাস পাঠ্যপুস্তকে নায়ক হিসাবে উপস্থাপনা করা, এমনকি তাকে গ্রহণযোগ্য করে তুলতে তার মিথ্যা সুন্দর ছবি আঁকার তিনি উপযুক্ত নন। 

তথ্যসূত্রের লিঙ্ক :- 
https://www.rediff.com/news/column/the-truth-about-tipu-sultan/20181114.htm

✍️ সুচেতনা বাগচী

0/Post a Comment/Comments

যুক্তি সংগত কথা বলুন.................

Stay Conneted