কৃষ্ণ থেকেতো বহু বিবাহ চালু হয়েছে
আমার কাছে একজন একজন ছেলে এসে বলল দাদা আপনি কি মনে করেন না আপনারা যাকে ভগবান বলছেন মানে কৃষ্ণকে তিনি এমন কিছু কর্ম করেছে যার জন্য আমাদের অন্য ধর্মের কাছ থেকে কথা শুনতে হয় ।
আমি বললাম কি রকম
ছেলে – এই ধরুন কৃষ্ণ ১৬১০৮টি বিয়ে করেছে যাতে তিনি দেখিয়ে গেছেন বহুবিবাহ করলে বা বহু নারীদের ভোগ করলে কোন সমস্যা নয়, তিনি এর মাধ্যমে আমাদের বহুবিবাহের সাপোর্ট দিয়ে গেলেন ।
আমি – না কথাটি ঠিক নয়, প্রথমে আপনাকে মানতে হবে কৃষ্ণ ভগবান । তার প্রমাণ তার কর্মের মাধ্যমে দিয়ে গেছেন । ২য় আপনাকে তখনকার অবস্থান আপনাকে বুঝতে হবে ।
ছেলে – কি রকম?
আমি – যেমন ধরুন আপনার কোন বোনকে কেউ তুলে নিয়ে গেল সে ২ বা ৩ রাত কাটিয়ে বাসায় এল তখন আপনার কেমন লাগবে?
ছেলে – খারাপ লাগবে
আমি – এমনকি সমাজে এটা জানাজানির পর আপনার বোনকে আপনি কোথায় বিয়ে দিতে পারতেন বা কেউ এসব কথা শোনার পর বিয়ে করতে আসত
ছেলে – না
আমি – বরং এই সমাজ উলটো আপনার বোনকে বলত ছিঃ ছিঃ কোন পর পুরুষের সাথে রাত কাটিয়ে এসেছে । ঠিক বলত কিনা ?
ছেলে – হা বলতো
আমি – ঠিক একই ঘটনা ঘটেছে তখনকার সময়, নরকাসুর নামে এক অসুর ১৬০০০ কুমারীদের মাসের পর মাস বন্দী করে রেখেছিল, তখন কৃষ্ণ সেই নরকাসুরকে মেরে তাদের মুক্ত করেছিল, তখনকার সমাজ ব্যবস্থা তাদের কেউ গ্রহন বা স্বীকৃত দিতে চাই নি তাই ১৬০০০ কুমারীদের প্রার্থনায় কৃষ্ণ সকলকেই বিবাহ করে তাদের সমাজে স্বীক্রিত দিল । শুধু তাই না তিনি যে ভগবান তারও প্রমাণ দিলেন ।
ছেলে – কিভাবে?
আমি – ভগবান এই ১৬১০৮ জনের জন্য ১৬১০৮টি প্রাসাদ বানিয়েছিলেন যা একজন মানুষের পক্ষে অসম্ভব, কৃষ্ণ একইসাথে একইটাইমে ১৬১০৮টি কৃষ্ণ হয়ে ১৬১০৮টি প্রাসাদে ১৬১০৮ জন মহিষীদের সাথে অবস্থান করতে পারতেন কিন্তু কোন মানুষের পক্ষে সম্ভব ? এমনকি তাদের কোন অভাব ছিল না । এবার আপনি বলুন তাদের বিবাহ করে কৃষ্ণ ঠিক কাজ করেছে নাকি ভুল ।
ছেলেটি চিন্তিত হয়ে বলল – হা ঠিকই করেছে
আমি – তাছাড়া ভগবানকে আমরা অনুসরন করব কিন্তু অনুকরন নয় । যেমন শিব বিষ খেয়েছে তাই বলে আমরা বিষ খেতে পারি না কারন শিবের সেই যোগ্যতা আছে কিন্তু আমাদের নেয় তেমনি কৃষ্ণের যোগ্যতা আছে ১৬১০৮ জনকে বিয়ে করতে শুধু ১৬ হাজার কেন আরো বেশি করতে পারে কারন তিনি ভগবান কিন্তু আমার ভগবানের মত যোগ্যতা নেয় তাই আমি ২টি বিয়ে করলে তাদের সামলাতে আপনার কষ্ট হয়ে যাবে । তাই মানুষের কি কর্তব্য তা তিনি শাস্ত্রে বলেই দিয়েছেন ।
সর্বশেষ একটা কথা বলতে চাই উপরের কোনকিছুই হিন্দু সমাজের জন্য অনুকরণীয় না। তাই তাই এই কথাগুলো নিয়ে যদি আপনাকে কেউ বিব্রত করে তাকে বলে দিন আমি এগুলো মানিনা বর্তমান সময় উপযোগী না। আর হিন্দু সমাজ সব সময় আপগ্রেড। হিন্দুধর্ম আপনাকে সব সময় সময় উপযোগী চিন্তা করার ক্ষমতা দিয়েছে। আপনি যেটা সময় উপযোগী বা বর্তমান উপযোগী না সেটাকে ত্যাগ করতে পারেন। তাতে কেউ আপনাকে কিছু বলবে না কিন্তু অন্য ধর্ম ক্ষেত্রে এ ধরনের কোনো সুযোগ নেই। যা চোদ্দশ বছর আগে হয়েছে এখনও তা করতে হবে যা সময় উপযোগী না তাও করতে হবে। অন্যথায় আপনি ওই ধর্মে থাকতে পারবেন না। কিন্তু আপনাকে এই হিন্দু ধর্মের কেউ বাধ্যবাধকতার মধ্যে ফেলবে না।
সর্বোপরি হিন্দুধর্ম আপনাকে সঠিক সময় উপযোগী চিন্তা করার ক্ষমতা দিয়েছে পৃথিবীতে আর কোন ধর্ম এই ক্ষমতা মানুষকে দিয়ে থাকেনা। উপরের সেই কথাটা ধরেই শেষ করতে চাই হিন্দু ধর্মে ভগবান অনুসরণীয়ও অনুকরণীয় নয়।
Post a Comment
যুক্তি সংগত কথা বলুন.................