আমাদের ডকুমেন্টেশানের অভাব ছিলো,'ধাড়া বলল৷ ভাবতে পারেন, শ্রীচৈতন্যদেব যখন নিমাই পন্ডিত ছিলেন তাঁর টোলে কত ছাত্র পড়িয়েছেন অথচ ইতালিতে দেখুন বতিচেল্লির আঁকা 'বাথ অব ভেনাস' যা ১৪৮৫ সালে অর্থাৎ শ্রীচৈতন্যদেবের জন্মের আগে আঁকা সেটা কেমন যত্ন করে বাঁচিয়ে রেখেছে৷
'থাকবে কি ভাবে? আমাদের সব ডকুমেন্ট তো তুর্কি, আফগান, পাঠান, মুঘল সব এসে জ্বালিয়ে পুড়িয়ে ছাই বানিয়ে দিয়েছে, 'সদানন্দ বললেন৷ 'বারোশো চারে বখতিয়ার খিলজি লক্ষণ সেনকে তাড়িয়ে তো বাংলার রাজা হলো৷ কিন্তু সেও বেশিদিন সেই রাজত্ব ভোগ করতে পারল না৷ পাকামো করে তিনি গেলেন তিব্বত জয় করতে৷ কামরুপের রাজার কাছে এয়সা মার খেলেন-সমস্ত সৈন্যটৈন্য খুইয়ে কোনোরকমে রোগে প্রায় শয্যাশায়ী অবস্থায় গৌড়ে ফিরে এলেন৷ এক দিন দুর্বল শরীরে রাজা ঘুমাচ্ছিলেন,সেই সময় তার পেয়ারের সেনাপতি আলিমর্দ্দন খাঁড়ার আঘাতে ধড় থেকে মুন্ডুটা নামিয়ে দিলেন৷ ব্যাস,তারপর থেকে বাংলার মসনদে রাজাদের আয়ারাম গয়ারাম চলতে লাগলো পরের তিনশো বাহাত্তর বছর৷ এই সময় মানে ১৫৭৬-এ দাউদ পর্যন্ত ৪৩ জন রাজা বাংলার মসনদে বসলেন- কেউ কয়েক বছর,কেউ কয়েক মাস৷ রাজা যদুর পুত্র নাসিরুদ্দিন তো মাত্র আটদিন মসনদে ছিলেন, নবম দিনে যড়যন্ত্রকারীরা তাকে হত্যা করলো৷ কেউ নিজের পুত্রের হাতে প্রাণ দিচ্ছে,কেউ প্রিয় সেনাপতির হাতে-চারিদিকে নৃত্যুর করাল ছায়া৷ মাঝে মাঝেই রাষ্ট্রবিপ্লব বাংলার শহর-নগরের ওপর দিয়ে বয়ে যেত,নতুন রাজা তার সৈন্য নিয়ে চালাত অবাধ লুটতরাজ৷ খান্ডবদাহনের মত তারা বাংলার মন্দিরগুলো জ্বালিয়ে তছনছ করতে লাগল৷ বাঙালির দর্শন,বিজ্ঞান,শিল্প ধারণ করে যত ভুর্জপত্র,তেরেট,তালিপট পুঁথি ছিলো সব সেই দাবাগ্নিতে জ্বলে ছাই হয়ে গেল৷ ওদন্তপুর মহাবিহারে ন্যাড়া মাথা গেরুয়াধারী অজস্র বৌদ্ধ ভিক্ষুকদের য*বনরা সৈনিক বলে হত্যা করল,মহাবিহারটাকে কেল্লা বলে মাটিতে মিশিয়ে দিল৷ বিক্রমশীলা,জগদ্দল এসব মহাবিহার এমন ভাবে ধ্বংস করল যে এখন তাদের খুঁজেই পাওয়া যায় না৷ পঞ্চাননমঙ্গল এই অরাজকতারই শিকার হয়ে জ্বলে ছাই হয়ে যায়৷'
***
-পাঁচমুড়োর পঞ্চাননমঙ্গল,প্রীতম বসু
ই*খতিয়ার উ*দ্দিন মু*হম্মদ বিন ব*খতিয়ার খি*লজির সর্বাপেক্ষা বৃহৎ কৃতিত্ব পৃথিবীর অন্যতম প্রাচীন বিশ্ববিদ্যালয় ধ্বংস করা এবং উক্ত অঞ্চলের বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের নিশ্চিহ্ন করা৷ চৈনিক পরিব্রাজক হিউয়েন সাঙয়ের বর্ণনায় নালন্দার ইতিহাস ফুটে উঠেছে। নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয় ১১৯৩ খ্রিস্টাব্দে তুর্কি যোদ্ধা ব*খতিয়ারের দ্বারা ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়। খি*লজির বিহার অভিযানের বর্ননা, তাবাকাত-ই-নাসিরি বইতে উল্লিখিত আছে। তার প্রতিলিপি এইরুপ, “মুহাম্মদ-ই-বখত-ইয়ার সাহসের সঙ্গে খিড়কি দরজা দিয়ে সেই স্থানে প্রবেশ করে দুর্গটি দখল করেন এবং প্রচুর সামগ্রী লুট করেন। সেই স্থানের বাসিন্দা, মস্তকমুন্ডিত পন্ডিতদের তাঁদের হ*ত্যা করে ব*খতিয়ারের সেনাবাহিনী। সেখানে প্রচুর বই ছিল। বইগুলি দেখতে পেয়ে মু*লমানেরা কয়েকজন হি$ন্দুকে আদেশ দেয়, তারা যেন সেই বইগুলি সম্পর্কে তাদের তথ্য দেয়। কিন্তু ইতিমধ্যে সকল হি$ন্দুকেই হত্যা করা হয়ে গেছে। ফলে বইগুলো লিখিত বিষয়বস্তু সম্পর্কে অবহিত করার মত পণ্ডিত আর একজনও বেঁচে ছিলেন না। বইগুলির বিষয়বস্তু সম্পর্কে অবহিত হওয়ার পর জানা যায়, সেই দুর্গ ও শহরটি ছিল আদতে একটি মহাবিদ্যালয় যাকে আমরা বর্তমানে নালন্দা বলে শনাক্ত করেছি। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে নালন্দা সমগ্র পৃথিবীর অন্যতম প্রাচীন এবং ইতিহাসের সবচেয়ে প্রসিদ্ধ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে একটি। এর স্বর্ণযুগে ১০,০০০ এর অধিক শিক্ষার্থী এবং ২,০০০ শিক্ষক এখানে জ্ঞান চর্চা করত। পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্ত যেমন চীন, জাপান, কোরিয়া, গ্রীস, ইরান, তুরস্ক ইত্যাদি দেশ থেকে শিক্ষার্থীরা পড়াশোনার জন্য নালন্দা আসতো। একটি প্রধান ফটক এবং সুউচ্চ দেয়ালঘেরা বিশ্ববিদ্যালয়টি স্থাপত্যের নিদর্শন এবং মাস্টারপিস হিসেবে সুপরিচিত। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন স্বনামে খ্যাত পণ্ডিত হলেন আর্য ভট্ট, মহাবীর, ব্রহ্মগুপ্ত প্রমুখ।"
১১৯৩ সালে তুর্কি সেনাপতি ই*খতিয়ার উদ্দিন মুহম্মদ ব*খতিয়ার খি*লজি নালন্দ মহাবিহারটি সম্পূর্ণ ধ্বংস করে ফেলে; এই ঘটনাটি ভারতবর্ষে শুধু বৌদ্ধ ধর্মের পতনকেই সুচিত করে না;এককালের জ্ঞান-বিজ্ঞানচর্চার অন্যতম শ্রেষ্ঠ ভুমি এই ভারতবর্ষকে দীর্ঘকালীন অজ্ঞানতার আস্তাকুঁড়ে নিমজ্জিত করার ঘৃণ্যতম পরিকল্পনার বাস্তবায়ন। পারস্যের ইতিহাসবিদ মিনহাজ তার তাবাকাত- ই-নাসিরি গ্রন্থতে লিখেছেন যে, “হাজার হাজার বৌদ্ধ পুরোহিতকে জীবন্ত পু*ড়িয়ে মারা হয় কিংবা মাথা কে*টে ফেলা হয়; খি*লজি এভাবে এই অঞ্চল থেকে বৌদ্ধধর্ম উৎপাটন করে ই*লাম প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করে, মহাবিহারের গ্রন্থাগারটিতে আগুন ধরিয়ে দেয়। নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয়ের লাইব্রেরিতে এত পরিমাণ বই ছিল যে তা পুড়তে তিন মাস সময় লেগেছিল”।
ধ্বংসলীলা শুধু নালন্দাতেই থেমে থাকেনি,বর্বরতার লেলিহান শিখায় পুড়ে ছাই হয়ে গেছে কথা বিক্রমশীলা, জগদ্দল, ওদন্তপুরী তক্ষশীলা৷ নদীয়া, গৌড়ে, লক্ষণাবতীর বুকে তখন পদাঘাত করে চলেছে আ*রব সাম্রাজ্যবাদীরা৷ খি*লজির সেনাবাহিনী এইসব প্রাচীন বিশ্ববিদ্যালয়, স্থাপনা, মন্দির, লাইব্রেরি, বৌদ্ধ ভিক্ষুদের আশ্রম ধ্বংস,আগুনে পুড়িয়ে দেয়। হাজারে হাজারে ভুমিপুত্র পৌত্তলিকরা প্রাণ বাঁচাতে কোনক্রমে পালিয়ে যেতে থাকে নেপালে, তিব্বতে, ভারতের অন্যান্য জায়গায়৷ যারা পালাতে পারেননি,তারা ব*খতিয়ার বাহিনীর তরোয়ালের আঘাতে প্রাণ দিয়েছেন। ইতিহাসের পাতায় পাতায় রক্তাক্ষরে লিপিবদ্ধ আছে,কিভাবে ভুমিপুত্রদের উপর নেমে এসেছিলো মাস এক্সোডাসের কালো ছায়া৷ ১১৯৭ সালে বিহারে ব*খতিয়ার খি*লজির সেনাবাহিনীর হাতে ধর্মীয় গণহ*ত্যার বিবরণ লিপিবদ্ধ করেন ভারত বিশেষজ্ঞ, ইতিহাসবিদ Vincent Arthur Smith, তার “The Early History of India” ইতিহাস বইতে উল্লেখ করেন "ব*খতিয়ারের সেনাবাহিনী নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয়ে এত বিপুল পরিমাণ বই দেখে বইতে কী লেখা আছে সে সম্পর্কে জানতে চায় কিন্তু ইতিমধ্যে সমস্ত ছাত্র এবং পণ্ডিতদের হত্যা করা হয়ে গেছে, যখন তারা নালন্দার লাইব্রেরীর বই সম্পর্কে জানতে চায় তখন সেই বই থেকে পাঠোদ্ধার করার মত কেউ আর অবশিষ্ট ছিল না।"
“The decline and fall of Buddhism” বইতে Bhimrao Ramji Ambedkar তার Dr. Babasaheb Ambedkar: Writings and Speeches বলেছেন, “খিলজির সেনাবাহিনী পূর্বাঞ্চলকে তছনছ করে দিয়েছে, ই*লামে ধর্মান্তরকরণও চলেছে সমানতালে, সর্বাত্মক তরোয়ালের জোরে। ১২০০ সালের শেষের দিকে ব*খতিয়ার খি*লজি বিহারে অভিযান শুরু করে, মূল আক্রমণটা চালায় নালন্দা,বিক্রমশীলা, ওদন্তপুরীর উপর। তখনকার সময়ে বিহার বলতে কলেজ বোঝাত এবং বিহারের স্থাপত্যের দিকে তাকালে মনে হয় যেন দুর্গ, চারিদিকে উঁচু দেয়াল দিয়ে ঘেরা। এখানকার পণ্ডিত এবং শিক্ষার্থীরা ছিল প্রধানত বৌদ্ধধর্মের। কিন্তু হি$ন্দুধর্মের শিক্ষার্থীরাও ছিল প্রচুর। বখ*তিয়ার তাদের কিছু অংশকে হত্যা করে বাকি অংশকে ই*লাম গ্রহণ করার শর্তে ছেড়ে দেয়। বিহার আক্রমণের ফলে বৌদ্ধ ধর্ম প্রায় বিলুপ্তির মুখে পড়ে যায়, প্রাণের দায়ে তাদের সবাইকে ই*লাম কবুল করতে হয়।”
ভাগ্যের অন্বেষণে ঘুরে বেরিয়ে খিলজি পূর্বদিকে ছুটতে লাগল রাজ্যজয়ের নেশায়। ১২০০ সালে ব*খতিয়ার খি*লজি ওদন্তপুরী বিহার আক্রমণ করে সেখানকার বৌদ্ধভিক্ষুদের হত্যা করে, ধ্বংস করে দেয় নালন্দা, পুড়িয়ে দেয় নালন্দার সমস্ত বই।দখল করে নেয় নদীয়া। Abd al-Qadir Badayuni ‘র Muntakhab- ut-Tawarikh বই থেকে উদ্ধৃতি দিয়ে সীতারাম গোয়েল The story of Islamic imperialism in India বইতে লিখেছেন, “নদীয়া আক্রমণ করে বখতিয়ার বাহিনীর হাতে এসে যায় বিপুল পরিমাণ লুটের মাল ও অঢেল অর্থবিত্ত। তারা পুজোর মন্দিরগুলো ভেঙে দিলো, বিধর্মীদের মন্দিরমঠগুলো রাতারাতি পরিণত হয়ে গেল ম*জিদ আর খা*নকা।” Indian Institute of Management’র অধ্যাপক, ইতিহাসবেত্তা বরুণ দে’র অনুবাদে প্রকাশিত Nizamuddin Ahmad‘র Tabqãt-i-Akbarî গ্রন্থ থেকে জানা যায়, “ই*খতিয়ার উদ্দিন মু*হম্মদ বিন ব*খতিয়ার খিলজি দীনহীন থেকে রাজাসনে অধিষ্ঠিত হয়েছে, ম*জিদে না মা জের খুৎবায় তার নাম উচ্চারিত হয়, মুদ্রায় তার নাম অঙ্কিত হয়েছে। বিধর্মীদের মূর্তি ও মন্দির ভেঙে সেখানে স্থাপিত হয়েছে খা*নকা আর মা দ্রা সা।”
Ghulam Husain Salim’র Riyãzu’s-Salãtîn বইটি ফার্সি থেকে ইংরেজিতে অনুবাদ করেন আবদুস সালাম,লিখিত রয়েছে," মুহম্মদ বখতিয়ার নালন্দা বিহারে ধ্বংসের কালো হাত বিছিয়ে দেয়, নিশ্চিহ্ন করে পুরো জনপদ, সেখানকার বাসস্থান, পুজোর মন্দির, বৌদ্ধ বিহার ও আশ্রম। লক্ষ্মণ সেনের গৌড় দখলে নিয়ে রাজধানী লক্ষণাবতী লুট করে তার ই*লামী শাসন ব্যবস্থা চাপিয়ে দেয়। বখতিয়ার পুরো শাসনামলে মন্দির ভেঙে সেখানে ম*জিদ নির্মাণ করে এবং ই*লামের প্রসার ও খেদমতে নিয়োজিত ছিল।"
Koenraad Elst তার Decolonizing the Hindu Mind বইতে Louis Frederic’র L’Inde de l’Islâm (Islam of India) বই থেকে উদ্ধৃতি দিয়ে লেখেন, “মুহম্মদ ঘুরি আজমিরের মন্দির গুড়িয়ে দিয়ে সেখানে ম*জিদ স্থাপনের নির্দেশ দেয়, ম*জিদের পাশেই নির্মাণ করে মা দ্রা সা। ঘুরি কনৌজ, কাশি দখল করে সেখানে ধ্বংস এবং লুটপাট অব্যাহত রাখে। একইসাথে বাংলার অন্য প্রান্তে ধ্বংসযজ্ঞ চালাতে থাকে ব*খতিয়ার। সে বিহারের বৌদ্ধ সম্প্রদায়কে প্রায় নির্মূল করে ফেলে, ধ্বংস করে দেয় তৎকালীন জ্ঞানবিজ্ঞান ও দর্শন চর্চার পীঠস্থান নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয়। বখতিয়ার খিলজি লক্ষ্মণ সেনকে উৎখাত করে সেখানে মু*লিম রাজ্য প্রতিষ্ঠা করে। লক্ষণাবতীর গঙ্গাতীরের ব্যাসল্ট পাথরে নির্মিত একটা মন্দিরকে ধুলোয় মিশিয়ে দেয়। ১২০২ সালে উদান্তপুরি বিহারে সে দুই হাজার বৌদ্ধ ভিক্ষুকে হত্যা করে।”
দিল্লী থেকে প্রকাশিত Kishori Saran Lal তার Theory and practice of Muslim state in India গ্রন্থে লিখেছেন," গড়ে পড়তায় হি$ন্দু এবং বৌদ্ধদের বিদ্যা-শিক্ষা ভয়ানক বাধাগ্রস্ত হয়ে পড়ল। মন্দির, আশ্রমের পাশেই থাকত টোল, নিয়মিত আক্রমণের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হওয়াতে সেগুলো তখন বিলুপ্তির পথে। কু*তুবউদ্দিন আ*ইবেক যেমন আজমিরের বিশাল-দেবা সংস্কৃত কলেজে হামলা চালিয়ে সেখানে Arhai din ka Jhonpra ম*জিদ স্থাপন করে। আর পূর্বদিকে ইখতিয়ার উদ্দিন বখতিয়ার খিলজি বৌদ্ধবিহার, ওদান্তপুরি, নালন্দা, বিক্রমশীলা বিশ্ববিদ্যালয় ধ্বংসে নিয়োজিত। ভারতে ই*লামি সাম্রাজ্যের সর্বত্র হি$ন্দু মন্দির, টোল, পাঠশালা ধ্বংস চলতেই লাগল সেই সময় থেকে আওরঙ্গজেবের শাসনামল পর্যন্ত।আমি দীর্ঘদিন দিল্লী, ভোপাল, হায়দ্রাবাদে (দাক্ষিণাত্য) বাস করি। এতবড় এলাকাতে মু*লিম আক্রমণের পূর্বের কোন মন্দির আর অবশিষ্ট নাই। হি$ন্দুদের শিক্ষাব্যবস্থা মন্দির, মঠ এবং আশ্রমের ব্রাহ্মণ পণ্ডিতের উপর অনেকাংশে নির্ভরশীল এবং এইসব প্রতিষ্ঠানগুলো শহরকেন্দ্রিক ছিল। ইখতিয়ার উদ্দিন বখতিয়ার খিলজি সুপরিকল্পিতভাবে টোল, পণ্ডিত এবং মন্দির ধ্বংস করতে থাকে।"
একসময়ে পৃথিবীব্যাপী জ্ঞান অন্বেষণের এপিসেন্টার ভারতবর্ষের বিশ্ববিদ্যালয়গুলিকে যারা তছনছ করেছিলো,তাদেরই উত্তরপুরুষরা আজ মাইক হাতে বলে,'তাজমহল,কুতুব মিনার না থাকলে, বহির্বিশ্বকে গোরুর গোবর দেখাতো ভারতীয়রা৷'নালন্দা, বিক্রমশীলা, ঔদন্তপুরী দেখাতাম৷ যমুনা তীরবর্তী শাহজাহার কীর্তিমান ঐশ্বর্যের চেয়ে শিক্ষাকেন্দ্রের গৌরব অনেকাংশে শ্রেয়৷ অন্তত মানুষের কাছে,আর্বদের কাছে নয়৷ যা আমাদের গৌরবের পীঠস্থান ছিলো,তাকে চিরতরে বিনষ্ট করে,ক্ষমতার আস্ফালনে বেদুইনবৃত্তির পদপিষ্ট করে,এখন বলা হচ্ছে, (ইন্ডিক স্থাপত্য ভেঙে) দুধেল স্থাপত্য নির্মান না হলে,কি দেখাতিস তোরা?!অনেকটা সেই,বাবার পুরোনো বাড়ি বিক্রির টাকায় কেনা দু কামরা ফ্ল্যাটে বসে ছেলে বলছে,'ভাবো তো,এই ফ্ল্যাটটা না হলে,তুমি থাকতে কোথায়?'বাবার উচিত ছেলের গালে অন্তত একটা জোরালো চড় কষিয়ে সত্যদর্শন করানো৷ কিন্তু,বেচারা বাবা প্রাণ খুঁইয়েও মান রাখতে বর্তমানে সুশীলবৃত্তি অবলম্বন করেছেন৷ফলত, ছেলে ক্রমেই দুঃসাহসী হয়ে বাবার তৈরী কাঠামোগুলো একে একে ভেঙেই চলেছে৷ রুদ্র মহালয়া, ভোজশালা, আদিনাথ, মার্তন্ড, রমনা, বামিয়ান........
তথ্য ও ছবি সংগ্রহ:-অন্তর্জাল
Post a Comment
যুক্তি সংগত কথা বলুন.................