আমাদের বাংলাদেশী মুসলিমদের অধিকাংশই ৭১ পরবর্তী বাংলাদেশে অসাম্প্রদায়িকতার চর্চার বিরোধি।

নেটিজেন বাংলাদেশী্ সংখ্যাগুরুদের এক মোটা অংশের মন খুব খারাপ। তাদের কথা হল মুসলমানদের জন্য সমগ্র বিশ্ব উন্মুক্ত থাকতে হবে,( তবে মক্কা মদীনায় বিধর্মীরা প্রবেশ করতে পারবেনা)। সমগ্র বিশ্বে নাকি এখন লাগাতার আজান চলছে। এক সেকেন্ডের জন্যও এই গ্রহে এখন আজান বন্ধ হয়না। গর্বের সাথে সর্বত্রই বলে বেড়াচ্ছেন মুমিনরা। তারা বলে চলেছেন সারা বিশ্বে নতুন নতুন ইসলামিক দেশ হবে।ভারত ভেঙ্গে আরোও কয়টি পাকিস্তান বানানো হবে। ইসলামিক ও আই সি র দাপটে সবাই কাচুমাচু হয়ে যাবে। খেলাফত হবে, দারুল ইসলাম হবে। না কোথাও কোন বিধর্মীর দেশ হবেনা।
ভারত ভাগ করে জিন্নাহ তাদের জমি জিরত আলাদা করে নিয়ে গেলেন। সব বিধর্মীরা পাকিস্তান সাফ করে ভারতে চলে গেল।বাংলাদেশে মাঝে মাঝেই যে ধাক্কা মারা হয় তাতে আগামীতে পাকিস্তানের অবস্থাই হবে অমুসলিমদের। এরাও ভারত যাবে একসময় কেবল অত্যাচার থেকে রেহাই পাবার জন্য। 
কিন্তু আমাদের নেটিজেনদের দাবী কোনক্রমেই ভারত এদের স্থান দিতে পারবেনা। দিলেই প্রমানিত হয়ে গেল ভারত সাম্প্রদায়িক। ইসরাইল থাকতে পারবেনা কারণ ইহুদীদের কোন রাষ্ট্র হতে পারেনা। হিন্দুদের কোন রাষ্ট্র হতে পারবেনা -কথাটা অবশ্য মুসলমানদের চাইতে হিন্দুরাও কম বলেনা । 
 অথচ নিজেরা যে সাম্প্রদায়িকতার পেট থেকে ভুমিষ্ট হয়েছিলেন তারা সেকথা বলেননা। ডাইরেক্ট একশন করেও তারা কেন যে পুরো ভারতটা তাদের দখলে নিতে পারেন নি তার জন্য আফশোষ আর শেষ হয়না। পাকিস্তান তো তার সেনা নিয়ে মাত্র দুটি কাজ করছে, এক জ্বেহাদি সৃষ্টি আর ভারত দখলের মহড়া। বাংলাদেশও এমনটা করত যদি খালেদা জিয়া ক্ষমতায় থাকত।   
 এখন সকলের এক কথা, ভারতকে অবশ্যই মুসলমানদেরকেও বাইরের দেশ থেকে  ঢুকে নাগরিক হবার সুযোগ দিতে হবে। আর উহ্য যেটুকু তারা রাখছে সেটা হচ্ছে আগামীতে খেলাফতের ঝান্ডা লাল কেল্লায় তুলতে হবে। এই ঘোষনা ভারতে বসেই দিয়েছেন তাদের এক নেতা।
 আর হিন্দু খৃষ্টান বৌদ্ধ জৈণ খৃষ্টান সাওতাল নাস্তিকের জন্য কোন দেশ হতে পারেনা, এটাই সবকথার শেষ কথা। ভারত কেন এদের আশ্রয় দেবে? ওরা যে অভিশপ্ত -কথাটা আমার নয়। এটা স্পষ্ট বলা আছে গ্রন্থে।
  আমাদের বাংলাদেশী মুসলিমদের অধিকাংশই ৭১ পরবর্তী বাংলাদেশে অসাম্প্রদায়িকতার চর্চার বিরোধি ছিলেন।তাই শেখ সাহেবকে সপরিবারে হত্যা করার পর তারা আনন্দে নৃত্য করেছিলেন সেদিন। জিয়াকে বুকে জড়িয়ে ধরেছিলেন মুক্তিযোদ্ধা নামক ব্যাক্তিরাও। আগামীতে পাকিস্তানের সাথে একটি উম্মাহ গঠনের ভাবনা যে হবেনা তাও নিশ্চিত করে বলা যায়না।যদি ১৯৪৭ সনে মুসলমানেরা অবিভক্ত ভারত মেনে নিত তবে এসব প্রশ্ন আজ উঠতোনা। ভারতবর্ষে নানা দিক থেকে যাযাবর মানুষ প্রবেশ করেছিল এবং নানা ধর্মমত এখানে সৃষ্টি হয়েছিল, একটা সহনশীল সমাজব্যবস্থা গড়ে উঠেছিল। সেই বহুমতের বহুজাতির বহুভাষার দেশকে টুকরা করে কি মানবিকতাকেই অপমান করা হয়নি ৪৭ সনে? সময় এসেছে সব সত্য জানার। 

 কোথায় চলেছে এদেশ?(সমীরণ ভট্টাচার্য)



0/Post a Comment/Comments

যুক্তি সংগত কথা বলুন.................

Stay Conneted