আমি ভারতকে হিন্দু রাষ্ট্র হতে বলি না, আমি চাই ভারত ‘অমুসলিম রাষ্ট্র’ হোক!

আমি ভারতকে হিন্দু রাষ্ট্র হতে বলি না, আমি চাই ভারত ‘অমুসলিম রাষ্ট্র’ হোক! 

হিন্দুরা বহু শতাব্দীতে একটু একটু করে ধর্ম  সংস্কার করে আধনিক হয়েছে। ভারতের অন্য জাতিদের কথা বাদ দিয়ে শুধু বাঙালীদের কথা বললে সেখানে রামমোহন, বিদ্যাসাগরের হাত ধরে ধর্ম থেকে যেভাবে বিপ্লব করে আধুনিক হয়েছে তারই হাত ধরে ভারত স্বাধীন হওয়ার পর ধর্মীয় শিক্ষা বাদ দিয়ে আধুনিক পাশ্চত্য শিক্ষাকে গ্রহণ করতে পেরেছে। 

বিদ্যাসাগর শাস্ত্রীয় শিক্ষাকে অপ্রয়োজনীয় বলেছিলেন বলেই সেই বিদ্রোহ আর সাহসের পথ ধরেই নেহরু টোল বাতিল করে ভারতের জন্য আধুনিক শিক্ষা গ্রহণ করতে পেরেছিলেন কারণ ততদিনে হিন্দুরা ধর্মীয় সেন্টিমেন্ট থেকে বেরিয়ে আসতে পেরেছিলো। তবু ভারতবর্ষ জুড়ে আজো হিন্দুদের নানা রকম কুসংস্কার জাতপাত রয়েই গেছে। ভারত হিন্দু রাষ্ট্র হলে সেই বিষবৃক্ষে আরো বেশি করে জল সিঞ্চন হবে শুধু। ভারত হবে "অমুসলিম রাষ্ট্র"। 

ভারত "সেক্যুলার রাষ্ট্র" হবে এই কথাটাই তো বলতে পারতাম, সেটা না বলে বারবার অমুসলিম রাষ্ট্র বলছি কেন? বলছি কারণ চাড্ডিরা 'সেকুমাকু' বলে যাদের ট্যাগ মারে সেই একচোখা সেক্যুলার হতে গেলে ভারতকে আসলে "হাফ পাকিস্তানী ভারত" হতে হবে! কারণ ভারতে মুসলিম পার্সোনাল ল বলে মধ্যযুগীয় কুরআনের আইন দিয়ে নারীদের তিন তালাক, বহুবিবাহ, বাল্য বিবাহ বজায় রাখতে এই সেকুমাকুরাই রক্ষাকবচ হয়ে আছে। ভারতে মাদ্রাসা শিক্ষাকে শক্তিশালী করতে ভারতীয় সেকুমাকুরাই বড় ভূমিকা রেখেছে। ভারত জুড়ে ইসলামিক জঙ্গিবাদ মাথাচাড়া দিলেও ভারতীয় সেকুমাকুদের তাতে কিছু যায় আসে না। ভারতকে তাই অবশ্যই ‘অমুসলিম রাষ্ট্র' হতে হবে যেন ইসলামের বিশেষ সুরক্ষা সেখানে না পায়। 

ভারত কেন মুসলিম পারসোর্নাল ল মানতে যাবে? ভারতে কোথাও হিন্দু আইন খ্রিস্টান আইন বৌদ্ধ আইন নেই। ভারত কেন শরীয়াকে স্বীকৃতি দিতে যাবে? ভারতের মেয়েরা যদি মনুশাস্ত্রকে উপেক্ষা করে সম্পত্তিতে ভাগ পেতে পারে, তালাক ও দ্বিতীয় বিবাহ করতে পারে তাহলে কিসের জন্য ভারতকে মুসলমানদের জন্য কুরআনের আইনে মানতে হবে? এই জন্যই বলেছি ভারত অমুসলিম রাষ্ট্র হোক। ভারত কেন মাদ্রাসা শিক্ষাকে রাষ্ট্রীয়ভাবে মেনে নিবে? ভারত অমুসলিম রাষ্ট্র হলে মুসলমানরাই সবচেয়ে বেশি লাভবান হবে। ভারতের মুসলমানরা তখন তাদের পশ্চাৎপদ থেকে হটে সামনের দিকে এগুতে পারবে।

এক সময় ইউরোপীয়ান সেক্যুলার রাষ্ট্রের অনেক ভক্ত ছিলাম। কিন্তু মুসলিম অভিবাসীদের ভোট পেতে ইউরোপীয়ান রাজনীতিবিদরা ইউরোপকে ইসলামিকরণ করতে চান। ইউরোপীয়ান খ্রিস্টান বা ইহুদীদের জীবনে ধর্ম কোন গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নয়। তারা ওন্ড বা নিউ টেস্টামেন্ট পড়ে দেখে না সেখানে নারীদের কতখানি পুরুষের সম্পত্তি হতে বলেছে। কতখানি বিধর্মীদের ঘৃণা করতে বলছে। কিন্তু এই শতাব্দীতে এসেও সেটা মুসলমানরা চর্চা করে। তারা কুরআন পড়ে। কুরআনের ব্যাখা জানতে মসজিদে যায়। ইউটিউবে চোখ রাখে। তারা রাষ্ট্রের কাছে ইসলামী আইনের দাবী জানায়। এ জন্যই ইউরোপকেও ‘অমুসলিম রাষ্ট্র’ হতে হবে! ইউরোপ কেন মুসলমানদের ধর্মীয় বিশ্বাস বোরখা হিজাবকে মেনে নিবে? ৫৭টা মুসলিম রাষ্ট্র আছে, সেখানে গিয়ে যতখুশি ইসলামী আইন মানুক কে মানা করেছে? ইউরোপীয়ান 'সেকুমাকুদের' জন্য ইংলেন্ড কানাডা অচিরেই চরম মূল্য দিবে!

বাম ও সেক্যুলারদের ইসলাম তোষণ হিন্দুদের আইডেন্টি ক্রাইসিসে ফেলেছে। ভারতবর্ষে তারা ঠিক কি পরিচয়ে বেঁচে থাকবে? 

তাদের মনে হয়েছে মুসলিমদের মক্কা আছে, ওআইসি আছে, মুসলিম উম্মাহ আছে। আছে পাকিস্তান বাংলাদেশ। হিন্দুদের কোন দেশ নেই ভারত ছাড়া! এই জুজুটি বিরাট একটা রাজনীতি উপহার দিয়েছে হিন্দুত্ববাদীদের। সেই রাজনীতিতে অরুন্ধতি রায়দের রাজনীতির পরোক্ষ প্রভাবও কম নয়। ভারতে এখন সেক্যুলারদের মুসলমান বলে ঠাট্টা করা হয়! মমতা ব্যানার্জিকে মমতা বেগম বলা হচ্ছে! এটা হিন্দুর জন্য যেমন সাম্প্রদায়িক ঘৃণার বহিঃপ্রকাশ তেমনি মুসলমানদের জন্যও সাম্প্রদায়িক উশকানি। এ জন্যই ভারতকে স্রেফ অমুসলিম রাষ্ট্র হতে হবে। যে ভারত সকলের। আসলে এই বিশ্বকে অমুসলিম হতে হবে যেখানে মুসলমানরাও মুক্তি পাবে! ৫৭টা অমানবিক মুসলিম রাষ্ট্রের বিপরীতে ইসলাম তোষণবাদী সেক্যুলার বিশ্ব নয়, মানবিক অধার্মীক অমুসলিম বিশ্ব!

0/Post a Comment/Comments

যুক্তি সংগত কথা বলুন.................

Stay Conneted