ঢাকার শাখারী বাজারের গোপন কুঠুরী ঘর :

ঢাকার শাখারী বাজারের গোপন কুঠুরী ঘর :
 --------------------------------------------------------
 ভারতীয় উপমহাদেশে, হিমালয়ের পাদদেশে এক অনন্য সুন্দর জায়গা গাড়োয়াল ।  ইসলামের প্রসারে এই অনন্য সুন্দর ভুখন্ডটিও রক্তপাতের হাত থেকে নিস্তার পায়  নি ! উলুঘ খান ছিল সুলতান নাসিরুউদ্দিনের সেনাপতি । 


গাড়োয়াল অঞ্চলেযুদ্ধে  গিয়ে উলুঘ খান তার সৈন্যদের হুকুম দিয়েছিল: 'যে একটা জ্যান্ত কা-র ধরে আনতে  পারবে সে জনপ্রতি দু টাকা পাবে আর যে কা-রের কাটা মুন্ডু আনতে পারবে সে  জনপ্রতি এক টাকা পাবে। পুরস্কারের ঘোষণা  শুনে ইসলামী যুদ্ধবাজরা চারিদিকে বেরিয়ে পরলো, কা-র শিকারে । টানা ২০ দিন  চললো ধরপাকড় আর নারকীয় হত্যাযজ্ঞ । কাটা মানুষের মাথা ও কবন্ধে পাহাড়  প্রমান স্তূপ জমে উঠলো । শয়ে শয়ে হিন্দু নারী ও শিশুকে ক্রীতদাস করে কাবুল,  কান্দাহার, গজনী, বাগদাদ এমনকি সুদুর দামাস্কাসে ক্রীতদাসের হাটে বিক্রি  করা হলো। সুন্দরী হিন্দু নারীরা লালসার শিকার হলো। নাজির উজিররা হিন্দু  কন্যা জোর করে ধরে আনলো, কিছু রাখলো নিজেরা, বাকি গেল সম্রাটের ভেট হয়ে  হারেমে আর অবশিষ্ট বিক্রি হলো তখনের অবিভক্ত ভারত ভুখন্ডের মিনা বাজারে ।

এই নৃশংস কর্মকান্ডে ভারতীয় সমাজে অনেক সামাজিক রীতিনীতির বদল এসেছিল ।  পাঠক হয়ত অনেকেই জানেন যে, বৈদিক যজ্ঞ রাত্রে করার নিয়ম নেই বললেই চলে, তবু  উত্তর ভারতে হিন্দু মেয়েদের রাতের অন্ধকারে বিয়ে দেয়া বহুল প্রচলিত ।  দিনের আলো থাকতে থাকতেই যজ্ঞ শেষ করার বিধি থাকা সত্ত্বেও উত্তর ভারতে ও  বাংলার বেশ কিছু জায়গায় রাতে যজ্ঞ করা হয় এবং বর রাতে কনের বাড়ীতে যায়।  রাতের অন্ধকারে কুমারী কন্যাকে পাত্রস্থ করে মুসলমানদের অগোচরে শ্বশুর বাড়ী  পাঠিয়ে দেবার জন্যই এই প্রথা শুরু করা হয়েছিল। অপরদিকে, দাক্ষিণোত্যে  মুসলমানদের অনুপ্রবেশ কম হওয়ার ফলে আজও দিনের আলোতেই সেখানে বিয়ের অনুষ্টান  ও যজ্ঞ করা হয়ে থাকে।

পাঠক সিন্ধুকী কাকে বলে জানেন ? সিন্ধুকী হলো  গুপ্তচর । সেসময়ে মুসলমান শাসকরা ও প্রভাবশালী মুসলমানরা সিন্ধুকী নিয়োগ  করে সুন্দুরী হিন্দু নারীর খোজখবর নিত এবং গায়ের জোরে তাদের ধরে নিয়ে যেত  লুটের মাল হিসেবে। ড রমেশ চন্দ্র মজুমদার লিখেছেন : "দীনেশ চন্দ্র সেন  হিন্দু মুসলমানের প্রীতির সম্বন্ধে উচ্ছাসিত ভাষায় প্রশংসা করেছেন। কিন্তু  তিনিও লিখেছেন যে , মুসলমান রাজা ও শ্রেষ্ট ব্যক্তিগন সিন্ধুকী (গুপ্তচর)  লাগিয়ে ক্রমাগত সুন্দরী হিন্দু ললনাদের অপহরণ করেছেন। ষোড়শ শতাব্দীতে  ময়মনসিংহের জঙ্গলবাড়ীর দেওয়ানগণ এবং শ্রীহট্টের বানিয়াচঙ্গের দেওয়ানগণ এই  রূপে শত শত হিন্দু কন্যাকে যে বল পূর্বক বিয়ে করেছিলেন তার অবধি নাই। ঢাকার  শাখারী বাজারের গোপন কুঠুরী ঘর তৈরীর পিছনেও এই ট্রাজেডি বিদ্যমান তা  আপনারা সবাই জানেন।"

রেফ: ১. 'ভারতবর্ষের ইতিহাস', প্রগতি প্রকাশনী, মস্কো |
 ২. 'ইসলামী ধর্মতত্ত্ব'- ডঃ রাধেশ্যাম ব্রহ্মচারী ।
 ৩. 'জেহাদ'-সুহাস মজুমদার ।
 ৪. 'Hedayah', translated by Charles Hamilton ।

0/Post a Comment/Comments

যুক্তি সংগত কথা বলুন.................

Stay Conneted