গ্রিসের এথেন্সে কোন মসজিদ নেই। এথেন্সের মুসলমানরা অ্যাপার্টমেন্ট বা বেসমেন্টকে মসজিদ হিসেবে ব্যবহার করে এবং সেজন্য তাদেরকে সরকারের কাছ থেকে অনুমোদন নিতে হয়৷
২০০৭ সালে এথেন্সে অফিসিয়াল মসজিদ নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করা হলে অর্থোডক্স চার্চ ও বিভিন্ন জাতীয়তাবাদী গোষ্ঠী এর বিরোধিতা করে৷ পরে গ্রিসের শিক্ষা ও ধর্ম মন্ত্রণালয় গত বছর জুনে মতামত জানায়, সরকারের নিয়োগ দেয়া একটি পরিষদ মসজিদ পরিচালনা করবে, ইমাম নিয়োগ দেবে৷ খুতবা দেয়া যাবে শুধুমাত্র গ্রিক ভাষায়৷ তবে নামাজ পড়া যাবে আরবি ভাষায়৷
শুধু গ্রিক ভাষায় খুতবা দিতে হবে কারণ সেখানে কাফেরদের বিরুদ্ধে জিহাদ, ইসলামী খিলাফত করতে মুসলমানদের উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে কিনা সেটা যেন সরকার বুঝতে পারে। মসজিদ যে নেহাত কোন ধর্মালয় শুধু নয়, সেখানে ইসলামের রাজনৈতিক আদর্শের চর্চা কেন্দ্র সেটা গ্রিকরা সম্ভবত অটোমান সাম্রাজ্যে থাকার সময়ই বহু মূল্য দিয়ে শিখেছিল। গ্রিকরা মুসলমানদেরকে ভালো চোখে দেখে না বা তাদেরকে নিয়ে অনাস্থা ভয় আতংকে ভোগে (বামাতীরা যেটাকে মুসলিমফোবিয়া বলে বিশেষ একটা দর্শনকে আড়াল করতে চায়) সেকথা স্বীকার করছেন এথেন্সের একটি অস্থায়ী মসজিদের ইমাম আতা-উল নাসের। তিনি বলছেন, এথেন্সের কেন্দ্রে অবস্থিত অটোমান সাম্রাজ্যের একটি মসজিদকে, যেটি এখন মিউজিয়াম, মুসলমানদের নামাজের জায়গা হিসেবে দেয়া যেত৷ তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রেচেপ তাইয়্যিপ এর্দোয়ান বিভিন্ন সময় গ্রিসের নেতাদের প্রতি এই আহ্বান জানিয়েছিলেন৷ কিন্তু কয়েক শতাব্দী ধরে অটোমান সাম্রাজ্যের নিয়ন্ত্রণে থাকায় গ্রিসে এখনও তুর্কিবিরোধী মনোভাব বেশ শক্ত৷ ‘‘গ্রিকদের হৃদয়ে এখনও মুসলমানদের তুর্কি দখলদারীদের সঙ্গে মিলিয়ে দেখা হয়,'' বলেন ইমাম আতা-উল নাসের৷
ইমাম সাহেব তুর্কি আর মুসলমান গুলিয়ে ফেলার কথা বললেও উনারাই কিন্তু "মুসলিম জাতির" কথা বলেন! মুসলিম উম্মাহ যে একটি শরীরের মত সেকথা বিশ্বাস করেন। আসলে গ্রিকরা মুসলমানদের কঠিন টাইট দিয়ে রাখায় এই জাতীয় তাকিয়ার আশ্রয় নিয়েছে। আপাতত জিহাদ নয়, যে কোন মূল্যে একটা মসজিদ প্রতিষ্ঠা করাই এখন তাদের জন্য বড় জিহাদ!
এখন পর্যন্ত এথেন্সবাসীর জন্য সুখবর যে তারা মসজিদ মুসলমান এ দুটোকে একসঙ্গে করে চিন্তা করতে পেরেছে বলেই তারা নিজেরা এবং মুসলিমরা, উভয়ই জিহাদের থাবা থেকে রেহাই পেয়েছে ...।
Post a Comment
যুক্তি সংগত কথা বলুন.................