মক্কায় আল্লার ঘরে যৌন হয়রানি ।

মক্কায় আল্লার ঘরে যৌন হয়রানি
=================
আল্লার ঘর মক্কায় যৌন হয়রানি শুনে অনেকের হয়ত ধর্মীয় অনুভূতিতে আগত লাগতে পারে ! কিন্তু যা সত্য তাকে কি করে চাপা দেয়া যায় ? 
ধর্ষণ আর যৌনহয়রানি শুধু বাংলাদেশের মসজিদ মাদ্রাসায় সীমাবদ্ধ না , এর ছোবল এখন স্বয়ং আল্লার ঘর পর্যন্ত বিস্মৃত ! 
সৌদি আরবে হজ করতে গিয়ে মহিলাদের যৌন হয়রানির শিকার হবার অভিযোগ ওঠার পর অনেক মহিলাই বিশ্বের নানা প্রান্ত থেকে তাদের অভিজ্ঞতার কথা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ করতে শুরু করেছেন।

তাই মক্কা নগরীতে হজে নিরাপত্তার কাজে প্রথমবারের মতো নারী পুলিশ মোতায়েন করেছে সৌদি আরব। দেশটির সরকার গত বছরই ঘোষণা করেছে, পুরুষের পাশাপাশি নারীরাও সেনাবাহিনীসহ নিরাপত্তা বাহিনীর কাজে যোগ দিতে পারবে। খবরটা প্রকাশ হয়েছে আরব নিউজের।

অন্যদিকে যৌন হয়রানির শিকার হতে হয়েছে বলে অভিযোগ করে একদল মুসলিম নারী সোশ্যাল মিডিয়ায় এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদে সরব হয়েছেন।
অনেকটা 'মি-টু' আন্দোলনের অনুকরণে তারা সোশ্যাল মিডিয়ায় তাদের এই আন্দোলন চালাচ্ছেন 'মস্ক-মি-টু' হ্যাশট্যাগে।

মিসরীয় বংশোদ্ভূত মার্কিন নারীবাদী লেখিকা এবং সাংবাদিক মোনা এলতাহাউই প্রথম তার অভিজ্ঞতার কথা এভাবে জানান। ২০১৩ সালে হজ করতে গিয়ে তিনি যৌন হেনস্থার শিকার হন।
মূলত তাঁর উদ্যোগেই #মস্ক-মি-টু আন্দোলন শুরু হয়েছে।

ধর্মীয় অনুষ্ঠানে যোগ দিতে গিয়ে কিভাবে ভিড়ের মধ্যে তাদের গায়ে হাত দেয়া হয়েছে বা ধাক্কা দেয়া হয়েছে, ইচ্ছে করে শরীরে শরীর ঘষা হয়েছে, তার বর্ণনা তুলে ধরেছেন অনেক মহিলা।

মুসলিমদের কাছে হজ হচ্ছে ইসলামের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পাঁচটি স্তম্ভের একটি। প্রত্যেক সামর্থ্যবান মুসলিমের জন্য জীবনে অন্তত একবার হজে যাওয়া কর্তব্য বলে মনে করা হয়।
প্রতি বছর প্রায় বিশ লাখ মুসলিম সৌদি আরবে হজ করতে যান। মক্কা নগরীকে ঘিরে বিশাল জনসমাগম হয়।

ইসলামে নারীকে পর্দা মেনে চলতে বলা হয়। প্রকাশ্যে চলাফেরার সময় মাথা এবং শরীর কাপড় দিয়ে ঢেকে রাখতে বলা হয়।
কিন্তু ইসলামের বিধান মেনে পোশাক পরার পরও তারা যৌন হয়রানি থেকে রক্ষা পান না বলে অভিযোগ করেন ইরান, সৌদি আরব, মিশর এবং আফগানিস্তানের মতো রক্ষণশীল মুসলিম দেশের নারীরা।

'মস্ক-মি-টু' হ্যাশট্যাগে সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেক নারী অভিযোগ করছেন, এমনকি সবচেয়ে ধর্মীয় স্থানে পর্যন্ত তারা রেহাই পাচ্ছেন না। পুরো মাথা শরীর ঢেকে ধর্মীয় অনুষ্ঠানে অংশ নেয়ার সময় তাদের সঙ্গে এধরণের আচরণ করা হচ্ছে।

ফারানাক আমিদি নামে একজন লিখেছেন, "মস্ক-মি-টু আন্দোলন আবারও প্রমান করেছে যে মেয়েরা পোশাকে কতটা রক্ষণশীল তার সঙ্গে যৌন হয়রানির কোন সম্পর্ক নেই। মেয়েরা কি পরছে সেটা নয়, পুরুষদের আসলে মেয়েদের কি চোখে দেখার এবং কি আচরণের শিক্ষা দেয়া হচ্ছে, তার সঙ্গেই এর সম্পর্ক।"

রুবাহদখত নামে একজন লিখেছেন, সৌদি আরবের মদিনায় এক যুবক আমার শরীর স্পর্শ করেছিল। তখন আমার বয়স ছিল ১৫। আর লোকটির বয়স হবে বিশের কোঠায়। আমি ভেবেছিলাম মদিনা একটি নিরাপদ নগরী। কিন্তু আমি আসলে ভুল জানতাম। আমি এ ঘটনা কখনোই ভুলবো না এবং ক্ষমা করতে পারবো না।"

ইরানের অনেক নারী এই ধারণাকে চ্যালেঞ্জ করছেন যে হিজাব পরলে সেটা তাদের যৌন হামলা থেকে সুরক্ষা দেয়।
ইরানে হিজাব পরা বাধ্যতামূলক। ইরানের অনেক শহরে এমন পোস্টার সাঁটা আছে যেখানে পর্দা বিহিন নারীকে মোড়ক খোলা ক্যান্ডি বা ললিপপের সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে, যা মাছি আকর্ষণ করছে।
ইরানের প্রায় সব সরকারি অফিস বা ভবনে এরকম একটি শ্লোগান লেখা আছে, "হিজাব কোন বিধিনিষেধের সীমা নয়, এটি আপনার সুরক্ষা।"

সম্প্রতি ইরানে বাধ্যতামূলকভাবে হিজাব পরার বিরুদ্ধে যে প্রতিবাদ শুরু হয়, তাতে অংশ নেয়ায় ২৯ জনকে গ্রেফতার করা হয়।
তেহরানে এক নারী প্রকাশ্যে তার মাথার হিজাব খুলে ফেলে এই প্রতিবাদ শুরু করেন। এটির নাম দেয়া হয়েছে 'দ্য গার্লস অব রেভ্যুলেশন স্ট্রীট'।

the girl of revolution street এর মতো বাংলাদেশের নারীদের আর বন্ধি করে রাখা যাবেনা !
ধর্মীয় কুসংস্কার আর পুরুষ শাসিত সমাজ থেকে তাকে বিদ্রোহ করতে হবে !
ইতিহাসের কোন সন্ধিক্ষণে শুরু হয়েছিল নারী-মুক্তি আন্দোলন? যে মুহূর্ত থেকে নারী-পুরুষের বৈষম্য নিয়ে নারীরা চিন্তা করতে শুরু করেছিল, তখন থেকেই শুরু হয়েছিল মুক্তির চিন্তা। ঘরের ভাইটি খেলছে বল নিয়ে, বোনটি মাকে সাহায্য করছে ঘরের কাজে। কাজ করতে করতে মেয়েটি ভাবছে, আমারও খেলতে ইচ্ছে করে। আমি কেন মাকে সাহায্য করব? আমি কেন খেলব না? ইচ্ছে করে, কিন্তু পারি না, কেন পারি না? সেখান থেকেই শুরু হয় প্রতিবাদ করার স্পৃহা। জন্ম নেয় অধিকারবোধ। 
একই কাজ ছেলেদের ক্ষেত্রে স্বেচ্ছামূলক আর মেয়েদের ক্ষেত্রে যখন বাধ্যতামূলক হয়ে ওঠে, তখনই মেয়েদের মন বিদ্রোহী হয়ে উঠে। অবস্থার পরিবর্তনের জন্য লড়াই করে। 
আজ সেই লড়াইয়ের দামামা বেজে উঠেছে ! প্রগতিশীল সমাজব্যবস্থা গড়ে তুলতে হলে নারী-পুরুষের সমতা অনস্বীকার্য। 
এই অধিকার মুখে নয় আইন পাশ করে দিতে হবে ! নয়ত আল্লার ঘরেও তাদের রক্ষা নাই ! 
( তথ্য সংগ্রহ )

0/Post a Comment/Comments

যুক্তি সংগত কথা বলুন.................

Stay Conneted