গুজরাট দাঙ্গা : কংগ্রেস ও পাকিস্তানের যৌথ ষড়যন্ত্র
২০০২ সালের গুজরাট দাঙ্গার কথা কংগ্রেস বারবার স্মরণ করিয়ে দেয়। কথায় বলে, চোরের মায়ের বড় গলা।
১৯৮৪ সালে দিল্লীতে ইতিহাসের সর্ববৃহৎ শিখবিরোধী দাঙ্গা করেছিল এই কংগ্রেস। পাকিস্তানের স্বার্থে কংগ্রেস কর্তৃক সৃষ্ট যে দাঙ্গা - শিখ ও হিন্দুজাতির মধ্যকার দীর্ঘ সুসম্পর্কে ফাটল ধরিয়ে দেয়। তখনকার নবনিযুক্ত পরিবারতান্ত্রিক কংগ্রেসী প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধী- শিখ বিরোধী দাঙ্গা সম্পর্কে মন্তব্য করেছিলেন,“যখন একটি বড় গাছ ভেঙে পড়ে, তখন চারপাশের মাটি তো কাঁপবেই।"
কংগ্রেস দীর্ঘদিন রাষ্ট্রীয় শাসন ক্ষমতায় থেকে, হিন্দু সংখ্যালঘিষ্ঠ বিভিন্ন এলাকায় সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা লাগিয়ে- প্রশাসনের ছত্রছায়ায় মরুদস্যুদের লেলিয়ে দিয়ে নির্মমভাবে হিন্দু-হত্যাযজ্ঞ চালাতো। যদিও গুজরাটে সাম্প্রদায়িক সহিংসতার নামে, কংগ্রেস ও পাকিস্তানের হিন্দু গণহত্যার যৌথ ষড়যন্ত্র, জনসাধারণ সাফল্যের সঙ্গে প্রতিহত করতে পেরেছিল - কংগ্রেস ক্ষমতার বাইরে থাকার সুবাদে।
উগ্র সাম্প্রদায়িক হিন্দু বিদ্বেষী ইন্দিরা গান্ধী, ইমার্জেন্সি দিয়ে ভারতবাসীর উপর জোরপূর্বক ধর্মনিরপেক্ষতা চাপিয়ে দেওয়ার পরবর্তী সময়ে- ভারতে সেক্যুলার নামে পরিচিত পাকিস্তানপন্থী জেহাদিদের প্রবল উত্থান ঘটে। হিন্দুজাতি কোনঠাসা হয়ে পড়ে। গুজরাটের পঞ্চমহল জেলার গোধরা রেলস্টেশনে, পাকিস্তানপন্থী কংগ্রেসী সেক্যুলার-জেহাদি কর্তৃক সংঘটিত করসেবক হত্যাকাণ্ড, ইতিহাসের এক কলঙ্কিত অধ্যায়৷
২০০২ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি অযোধ্যা থেকে গুজরাটের গোধরার দিকে যাচ্ছিল সমরবতী এক্সপ্রেস৷ অযোধ্যা থেকে বহু ধর্মপ্রাণ করসেবক ওই ট্রেনে গুজরাটে ফিরছিলেন৷ করসেবকগণ অযোধ্যা থেকে ফিরছেন- এই আগাম সংবাদ পেয়ে, গোধরা স্টেশনে তখন পেট্রোল বোমা নিয়ে অপেক্ষা করছিল, ধর্মনিরপেক্ষ ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস-এর ১০ থেকে ১৫ জন ইসলাম ধর্মাবলম্বী যুবনেতা৷ স্টেশনে ঢোকার ঠিক পূর্ব মুহূর্তে মন্থরগতির সেই ট্রেনে,প্রায় দু'শো লিটার পেট্রোল নিয়ে ঝা়ঁপিয়ে পড়ে- সেই ইসলাম ধর্মাবলম্বী কংগ্রেসী যুবনেতারা৷ যে কামরায় হিন্দু-সাধুগণ অবস্থান করছিলেন, সেই কামরায় হামলা চালায় পাকিস্তানপন্থী সেই কংগ্রেসী-জেহাদিরা। প্রত্যক্ষদর্শীদের বিবরণ অনুযায়ী- শহরের পরিচিত মুখ ঐ সমস্ত কংগ্রেসী মুসলিম ক্যাডাররা, আরবি ভাষায় বিশেষ ধর্মীয় রণধ্বনি দিয়ে, পেট্রোল ঢেলে করসেবকদের কামরায় আগুন লাগিয়ে দেওয়ার পাশাপাশি, বাইরে থেকেও পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ করে। ট্রেনের কামরা থেকে বেরোতে না পারায়, সেখানেই অগ্নিদগ্ধ হয়ে মৃত্যুমুখে পতিত হন ৫৯ জন ধর্মপ্রাণ করসেবক৷ এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে গুজরাট রাজ্যজুড়ে সাম্প্রদায়িক সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে৷
দাঙ্গার নেপথ্যে কে বা কাদের চক্রান্ত? কার উস্কানিতে সেই ভয়াবহ গুজরাট দাঙ্গা? ― এই প্রশ্নের উত্তর ভারতের সেক্যুলার মিডিয়া সব সময় ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করে এসেছে। গোধরা রেলস্টেশনে সমরবতী এক্সপ্রেসে যে ভয়ঙ্কর সাম্প্রদায়িক হামলা চালানো হয়েছিল- তার মূল পরিকল্পনাকারী ছিল 'ফারুক বাহনা' নামক এক সেক্যুলার-জেহাদি কংগ্রেস নেতা৷ গুজরাট দাঙ্গার নেপথ্য-নায়ক পাকিস্তানপন্থী কংগ্রেসী ফারুক বাহনা কিন্তু সেসময় সাধারণ কোন কংগ্রেস নেতা ছিল না৷ জেলা কংগ্রেস কমিটির সদস্য এবং অন্যতম সক্রিয় নেতা ছিল সে৷ গুজরাট পুলিশের বিশেষ দল পরবর্তীকালে গ্রেফতার করে ফারুক বাহনাকে৷
ভয়াবহ সেই পেট্রোল বোমা হামলার সময়,
ফারুক বাহনার সঙ্গে থেকে সেদিন ফ্রন্টলাইনে থেকে সাম্প্রদায়িক আক্রমণে নেতৃত্ব দিয়েছে- সেলিম আব্দুল গাফ্ফার, আব্দুল রহমান ও হাজি বাইলাল৷ তখন পঞ্চমহল জেলার যুব কংগ্রেসের প্রেসিডেন্ট ছিল সেলিম আব্দুল গাফ্ফার। আব্দুল রহমান ও হাজি বাইলাল ছিল জেলা কংগ্রেসের অন্যতম সক্রিয় নেতা৷ এই সাম্প্রদায়িক হামলার মূল পরিকল্পনাকারী মহম্মদ হুসেন ছিল গুজরাট প্রদেশ কংগ্রেসের সংখ্যালঘু সেলের আহ্বায়ক৷ টানা ছয় বছর সেই পদে অধিষ্ঠিত ছিল সে।
প্রশ্ন হচ্ছে যে, ভয়াবহ সেই সাম্প্রদায়িক আক্রমণের ইন্ধন যুগিয়েছিল, কংগ্রেসের একাধিক কেন্দ্রীয় মুসলিম নেতা; সেখানে কেবলমাত্র বিজেপির দিকে কেন মিথ্যা অভিযোগের আঙুল তোলা হচ্ছে? কেন বার বার অমূলক প্রশ্ন তোলা হয়েছে- নরেন্দ্র মোদী ও অমিত শাহর বিরুদ্ধে? অবশ্য পরবর্তীকালে এই অভিযোগের স্বপক্ষে কোনও প্রমাণ না থাকায় উচ্চ ন্যায়ালয় থেকে সসম্মানে বেকসুর খালাস পেয়ে যান- নরেন্দ্র মোদী ও অমিত শাহ সহ বিজেপির বেশ কয়েকজন শীর্ষনেতা৷
কৃত্তিবাস ওঝা
২৯/১০/২০২০খ্রিঃ
Post a Comment
যুক্তি সংগত কথা বলুন.................