সাম্প্রতিক বিহার বিধানসভা নির্বাচনে আসাদউদ্দিন ওয়েসির নেতৃত্বাধীন পাকিস্থানপন্থী রাজনৈতিক দল মজলিস ই ইত্তেহাদুল মুসলিমিন (এম আই এম) পাঁচটি আসন লাভ করেছে। এই পাঁচটি আসন,পশ্চিমবঙ্গ সীমান্তবর্তী মুসলিম অধ্যুষিত জেলাগুলোর - যার লাগোয়া পশ্চিমবঙ্গের মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ এলাকার সেক্যুলার নেতাদের কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়ে গেছে।
কংগ্রেস সরাসরি অভিযোগ করেছে, এম আই এম মুসলিম ভোট কেটে দেওয়ার ফলে, বিহারে ধর্মনিরপেক্ষ মহাগঠবন্ধন-এর ভরাডুবি ঘটেছে। তাদের ভাষায়, 'এম আই এম বিজেপির বি টিম।'
প্রতিবাদে আসাদউদ্দিন ওয়েসি বলেছেন, 'ওই সমস্ত কথাবার্তা কংগ্রেসের দেউলিয়া রাজনীতির তীব্র হতাশার বহিঃপ্রকাশ ছাড়া আর কিছুই নয়।'
পশ্চিমবঙ্গের ক্ষমতাসীন তৃণমূল কংগ্রেসের ঘনিষ্ঠ সূত্র থেকে জানা গেছে, তাদের শীর্ষ নেতৃত্বও এম আই এম-এর উত্থানে চিন্তিত।
এম আই এম মূলত দলিত-মুসলিম ঐক্যের রাজনীতি করে, এজন্য এই দলটিকে বলা হয় নব্য মুসলিম লীগ এবং আসাদউদ্দিন ওয়েসিকে বলা হয় নতুন জিন্নাহ। দলিত-মুসলিম ঐক্যের বিশিষ্ট তাত্ত্বিক ও লেখক সুকৃতি রঞ্জন বিশ্বাস বলেছেন, আসাদউদ্দিন ওয়েসির ধর্ম নিয়ে রাজনীতি করার অধিকার রয়েছে, এবং তাতে ক্ষতিকর কিছুই নেই এবং আতঙ্কিত হওয়ারও কিছু নেই। তার ভাষায়, বিজেপি ধর্ম নিয়ে যে অশুভ রাজনীতি করছে - তার মোকাবিলায় আসাদউদ্দিন ওয়াইসির নতুন ধর্মভিত্তিক রাজনীতির উত্থান, ভারতের সেক্যুলার শক্তির যথেষ্ট সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।
সুকৃতি রঞ্জন বিশ্বাসদের মতে, বিজেপি যদি ধর্ম নিয়ে রাজনীতি করে- সেটা হয় অশুভ ও অপকারী; আর আসাদউদ্দিন ওয়েসিরা ধর্ম নিয়ে রাজনীতি করলে- সেটা হয় শুভ ও উপকারী। ধর্মাশ্রয়ী রাজনীতি দিয়ে এরা কিভাবে সেক্যুলারিজম প্রতিষ্ঠা করবে,সেটা বোধগম্য নয়। দালালি ও ভণ্ডামির একটা সীমা-পরিসীমা থাকা উচিত।
স্মরণ করা যেতে পারে, দেশ ভাগের সময় এই দলিত-মুসলিম ঐক্যের রাজনীতির কারণে, এক-তৃতীয়াংশ ভারতভূমি পাকিস্তানে পরিণত হয়ে যায় এবং সেই দলিত-মুসলিম ঐক্যের পাকিস্তান রাষ্ট্র থেকে দলিতদের তো নিশ্চিহ্ন করে দেওয়া হয়েছেই, সঙ্গে অন্যান্য হিন্দুরাও মুছে গেছে। বর্তমান সময়ে এই সুকৃতি-শরদিন্দুরা আবার দলিত-মুসলিম ঐক্যের রাজনীতির নামে, অবশিষ্ট ভারত-ভূমিটুকুও পাকিস্তানে বিলীন করে দেওয়ার গভীর চক্রান্তে লিপ্ত।
সনাতন সদানন্দ দাশ
Post a Comment
যুক্তি সংগত কথা বলুন.................