হালাল জিনিস এটি একটি অর্থনৈতিক জিহাদ।
বিভিন্ন হোটেল রেস্টুরেন্টে হালাল সার্টিফিকেট আমরা সবাই দেখে থাকি। হালাল অর্থাৎ আল্লাহ্র নামে উৎসর্গ করা নৃশংস ভাবে আড়াই প্যাঁচে গলা কাটা না হলে অর্থাৎ জবাই করে কাটা না হলে মুসলমানরা সেই মাংস খায় না।
মুসলমান ক্রেতার সংখ্যা অমুসলিমদের তুলনায় খুব কম হলেও অমুসলিমরা যেহেতু উদার, এসব নিয়ে মাথা ঘামায় না, বেশিরভাগ জানেই না, অপরদিকে মুসলমানরা যেহেতু কখনোই নিজেদের এই ধর্মান্ধতা গোঁড়ামি থেকে সরে আসবে না, ধর্ম নিয়ে সমঝোতা করবে না, তাই মুসলমান ক্রেতা যাতে হাতছাড়া না হয়, এই সার্টিফিকেট টাঙানো থাকে। ওরা যেহেতু ওদের অবস্থানে অনড় থাকে, অন্যদের তো সমঝোতা করতেই হবে, সব ব্যাপারে এবং চিরকাল। যাই হোক, এই সার্টিফিকেটের অর্থ এখানকার সব মাংস এই ধর্মীয় পদ্ধতিতে কাটা। এই সার্টিফিকেট কি বামপন্থীদের চোখে পড়ে না? সবার চোখে পড়ে যখন এদেরও পড়ে নিশ্চয়ই। বামপন্থীরা তো আর অন্যদের মতো অশিক্ষিত মূর্খ নয়, চোখে যখন পড়ে, অন্যরা সবটা না জানলেও অনুসন্ধিৎসু শিক্ষিত বামপন্থীরা ব্যাপারটাও জানে নিশ্চয়ই।
মুসলমান ক্রেতার সংখ্যা অমুসলিমদের তুলনায় খুব কম হলেও অমুসলিমরা যেহেতু উদার, এসব নিয়ে মাথা ঘামায় না, বেশিরভাগ জানেই না, অপরদিকে মুসলমানরা যেহেতু কখনোই নিজেদের এই ধর্মান্ধতা গোঁড়ামি থেকে সরে আসবে না, ধর্ম নিয়ে সমঝোতা করবে না, তাই মুসলমান ক্রেতা যাতে হাতছাড়া না হয়, এই সার্টিফিকেট টাঙানো থাকে। ওরা যেহেতু ওদের অবস্থানে অনড় থাকে, অন্যদের তো সমঝোতা করতেই হবে, সব ব্যাপারে এবং চিরকাল। যাই হোক, এই সার্টিফিকেটের অর্থ এখানকার সব মাংস এই ধর্মীয় পদ্ধতিতে কাটা। এই সার্টিফিকেট কি বামপন্থীদের চোখে পড়ে না? সবার চোখে পড়ে যখন এদেরও পড়ে নিশ্চয়ই। বামপন্থীরা তো আর অন্যদের মতো অশিক্ষিত মূর্খ নয়, চোখে যখন পড়ে, অন্যরা সবটা না জানলেও অনুসন্ধিৎসু শিক্ষিত বামপন্থীরা ব্যাপারটাও জানে নিশ্চয়ই।
সবসময় গোঁড়ামির বিরুদ্ধে, কুসংস্কার আর ধর্মান্ধতার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো, স্বভাব প্রতিবাদী বামপন্থীরা নিমীলিত লোচনে যখন এই 'হালাল' মুরগির ঠ্যাং এ কামড় বসায়, তখন একবারও কি মনে হয় না, এরা যে এই ধর্মান্ধতাকে প্রশ্রয় দিচ্ছে? গরু শূয়োর বিতর্ক অনেক পুরনো হয়ে গেছে। বিকাশরা গরু খেলেও সেলিমরা কেন শূয়োর খায় না - বড় ক্লিশে হয়ে গেছে এই ইস্যুও। তাছাড়া ঠিকই তো - 'আপনা রুচি খানা'। যার যা ভালো লাগে খাবে, ভালো না লাগলে খাবে না। কিন্তু এই হালাল টা? 'ব্রাহ্মণ দ্বারা রান্না করা হয়' - এই লেখা তো উঠেই গেছে। হিন্দুরা তো হোটেলে গিয়ে কখনো জিজ্ঞেসও করে না মাংস টা আল্লাহর প্রতি উৎসর্গী কৃত হালাল না ঝটকা। কিন্তু কোন মুসলমান ক্রেতা যতো শিক্ষিতই হোক, আর্থ সামাজিক অবস্থান যতো উপরের দিকেই হোক, দোকানে ঢুকে এই সার্টিফিকেটটা না দেখলে খাবেই না।
কত সহজেই হিন্দু পদবীর বামপন্থীরা গর্বিত ভাবেই গরুর গোস্ত খাওয়ার কথা বলে , খেয়ে আত্মপ্রচারও করে। কিন্তু প্রগতিশীল বলে জাহির করা মুসলিম সমাজের ক'জনকে দেখেছেন নোংরা শূয়োর বাদ দিন , হালাল অর্থাৎ আড়াই প্যাঁচে গলা কাটা না হলে ইসলাম সম্মত মুর্গী বা খাসীর মাংসও খাওয়ার কথা বলতে? এর পেছনে যেটা আছে, সেটা কি বিজ্ঞান, না ধর্মান্ধতা? মুসলমানরা হালাল নামক এই বর্বর ধর্মান্ধ প্রথা নিজেরা যে শুধু মেনে চলেছে তা নয়, অন্যদেরও হালাল মাংস খেতে বাাধ্য করছে। প্রগতিশীল বলে দাবি করা বামপন্থীদের কখনো দেখেছেন কি এই বর্বরতার বিরুদ্ধে বিরুদ্ধে কথা বলতে ? হালাল এর সার্টিফিকেট লাগানো খাবারের দোকানের সংখ্যা বাড়ছে না কমছে?
প্রায়ই তো বাংলাদেশের বিভিন্ন স্কুল কলেজে হিন্দু ছাত্র ছাত্রীদের পিকনিক বা অন্য কোন খাওয়ার অনুষ্ঠানে ইচ্ছাকৃত ভাবে খাবারে গরুর মাংস মিশিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠছে। কয়েকদিন আগেও এরকম ঘটনা ঘটেছে। তা, এ নিয়ে বলায় খাদ্যের স্বাধীনতা, কে কী খাবে বা খাবে না অন্য কেউ ঠিক করে দেবে কেন - এই তত্ত্বে বিশ্বাসী আমার বামপন্থী ভাইরা বললেন "মাংস তো মাংসই, গরু হোক আর খাসি। একদিন খেয়ে নিলে এমন আর কী হয়় !
কিন্তু ঠিক উল্টোটাই এদেশের কোন স্কুলে শূয়োরের মাংস নিয়ে করলে এই ধর্মহীনরাই কি তুতুভাইদের ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত দেওয়ার অভিযোগে উত্তাল করে দেবে না? বাদ দিন শূয়োর, মুরগি, খাসী বা পাঁঠাও কি এরকম কোন কমন অনুষ্ঠানে এরা খায়, যদি না এরা নিশ্চিত হয় সেই মাংস আল্লাহর নামে উৎসর্গ করে গলায় আড়াই পোঁচ দিয়ে কাটা? ঘুরতে গিয়ে ভাড়া করা গাড়ির ড্রাইভারকে কোন মতেই আমাদের সঙ্গে কোথাও মাংস খাওয়াতে পারি নি। তখন বুঝি নি, এখন বুঝতে পারি।
এবার অন্য রকম করে কিছু ভাবনায় ভাবিত হোন -
ভাবুন তো, এখন হিন্দুদের একাংশ যদি রেস্টুরেন্টে রেস্টুরেন্টে গিয়ে এ নিয়ে আপত্তি জানানো শুরু করে , এতোদিন মুসলমানদের এই ধর্মান্ধতা নিয়ে, সেই ধর্মান্ধতা অন্যদের উপর চাপিয়ে দেয়া নিয়ে চুপ মেরে থাকা এই সেকু মাকুরাই কিন্তু ঐ হিন্দুদের বিরুদ্ধে ধর্মীয় গোঁড়ামির অভিযোগ আনবে না? যারা এতোদিন কোন হোটেল রেস্টুরেন্টে গিয়ে কোনদিন জিজ্ঞেসই করে নি মাংসটা হালাল না ঝটকা, জানতোই না - তাদেরই কি ইসলামের এই গেলেমানরা শোনাবে না, "মাংস তো মাংসই, গরু হোক আর খাসি(লক্ষ্যনীয় ভাবে শূয়োরটা আনবে না) , ভাগাড়ের হোক আর টাটকা, টাটকার হালাল হোক আর টাটকার ঝটকা"? কিন্তু এতোদিন...?
এবার ভাবুন আসল ভাবনাটা...,
ধরে নিলাম ঐ সব হোটেল রেস্টুরেন্টে আট জন উদাসীন অমুসলিম ক্রেতার বিপরীতে দুজন মুসলিম ক্রেতা আছে। ব্যবসার চাই ক্রেতা, একদিকে আটজন হলেও যেহেতু সচেতন নয়, হালাল ঝটকা কোনটাতেই যেহেতু আপত্তি নেই, কিন্তু অপরদিকে মাত্র দুজন হলেও যেহেতু অনড় গোঁড়া, এই দুজন ক্রেতা হাতছাড়া হওয়ার ভয়ে ব্যবসায়ী কিন্তু এই দুজনের ইচ্ছেটাকেই চাপিয়ে দিচ্ছে আট জনের উপর অর্থাৎ সংখ্যায় অনেক কম হয়েও এরাই আটজনের নিয়ন্ত্রক । কিন্তু এখন যদি ঐ আট জনের মধ্যে অন্তত পাঁচ জন হালাল মাংস খেতে আপত্তি জানায়, তখন ঐ ব্যবসায়ী কোনটা করবে? দোষ কি KFC র? না Zomato-র?
এবার হোটেল বা রেস্টুরেন্ট ব্যবসায়ীর জায়গায় রাজনৈতিক দলগুলিকে রাখুন। ওদের যেমন চাই ক্রেতা, এদের চাই ভোট। কাজেই বিজেপি কংগ্রেস সিপিএম তৃণমূল - দোষ কারুর নয়, দোষ সম্পূর্ণ আমাদের। আমরা সচেতন নই বলেই সংখ্যালঘুরা নির্ণায়ক হয়ে গেছে। ওরা জানে, ওদের খুশি করেই রাজনৈতিক দলগুলোর ক্ষমতায় আসতে হবে, যে সর্বোচ্চ খুশি করবে, সেদিকেই ঝুঁকবে। যে করবে না, ক্ষমতায় আসবে না। সংখ্যাগুরুদের দিকে তাকানোর কী দরকার ! এই নির্ণায়ক ভূমিকা কাজে লাগিয়ে যখন এরা নিয়ন্ত্রক হয়ে যাবে, তখন এই দেশ কোথায় গিয়ে থামবে? কিন্তু আজকে যদি সংখ্যালঘু তোষণ সংখ্যাগুরুদের বেশিরভাগকে ক্ষুব্ধ করে তুলতো, তখন কি কোন রাজনৈতিক দল ঐ ভোটের দিকে চাওয়ার সাহস করতো? দোষ সম্পূর্ণ আমাদের। বাংলাদেশে কেন সংখ্যালঘু তোষণ হয় না, কেন সেখানে শাসক বিরোধী সবাই মিলেই সংখ্যালঘু নির্যাতন করে?
সময় থাকতে একজোট হোন, কোন নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দলের পক্ষে নয়, ওরা যখন যেদিকে একজোট হবে, ঠিক এর বিপরীতে, সে যেদিকেই হোক । কে জানে, এরপর হয়তো একজোট হয়েও আর কিছু করতে পারবেন না।
-------------------
Anirban Dasgupta
Post a Comment
যুক্তি সংগত কথা বলুন.................