মেয়েরা পুরুষদের সঙ্গে সমানতালে কাজ করুক এটা ইসলাম না চাইলেও অর্থনৈতিক কারণে মুসলমানরাই সেটা মানতে বাধ্য হচ্ছে।।

একসময় হুজুররা ফটো তোলা হারাম ফতোয়া দিয়েছিল। মেয়েদের লেখাপড়া শিখানোর বিরোধিতাও করেছিল। এখন এগুলো কোনটাই টিকে নেই। কত হুজুর লেবাসের বাপের মেয়ে মেডিক্যালে পড়ে! অর্থাৎ ধর্মীয় গোঁড়ামি সময় ও অর্থনৈতিক কারণে টিকে থাকতে পারে না। মেয়েরা পুরুষদের সঙ্গে সমানতালে কাজ করুক এটা ইসলাম না চাইলেও অর্থনৈতিক কারণে মুসলমানরাই সেটা মানতে পারে না। কাজেই সামনের দিনে হুজুরদের রক্ষণশীলতার ওয়াজ নানা করণেই মুসলমানরা মানতে পারবে না।... এটুকু পড়েই নিশ্চয় এখন হাসতে হাসতে বলছেন, আরে ভাই এজন্যই তো বামপন্থীরা বলে ধর্ম নিয়ে শুধু শুধু লিখে সময় নষ্ট না করে সমাজ বদল করতে, মানুষের চাল ডাল তেল নুনের অধিকার নিয়ে কথা বলেন। ধর্ম আপনাআপনি উঠে যাবে ...

এখন যে হুজুর ফেইসবুকে লাইভে এসে ইসলাম প্রচার করে তার সামনে দেড়শো বছর আগের একজন বুজুর্গ আলেমকে টাইম মেশিনে নিয়ে এসে দাঁড় করালে ফেইসবুকে লাইফ করা মুফতিকে বেদাতী জাহেল খারিজি বলে তিনি গালাগালি শুরু করে দিবেন। এটা হচ্ছে দুই শতাব্দীর দুই ধর্ম পুরোহিতের মধ্যে জেনারেশন গ্যাপ। কিন্তু দুজনই একই রকমের মানসিকতার। একই লক্ষ ও উদ্দেশ্য বিশ্বাস করে। ভ্যাটিকান একসময় ব্রুনোকে পুড়িয়ে মেরেছিল, ডারউইনকে সমাহিত করতে চার্চ অসম্মতি জানিয়েছিল, আর এখন পোপ বলছে বিবর্তনবাদ বাইবেল বিরোধী নয়! বিবর্তনবাদকে আগামী পঞ্চাশ বছরের মধ্যে ইসলামী স্কলাররা স্বীকার করবেন এবং কুরআন থেকে সেটা আগেই বলা ছিলো দাবী করবেন। কিন্তু সেই বিবরণবাদ বিশ্বাসী হুজুররা আজকের চরমোনাই হেফাজত জাকির নায়েকের মত সমান বিপদজনক থাকবে। ধর্মীয় গোঁড়ামি আর আনুগত্যের মধ্যে সম্পর্ক আছে কিন্তু গোঁড়ামি বদলে যায় কিন্তু আনুগত্যতা একই থেকে যায়। আজকে ফেইসবুকে একজন সাবেক বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থায় চাকরি করা ডাক্তারের পোস্ট দেখলাম যেখানে তিনি করোনা থেকে মুক্তি পেতে সাঈদী সহ বিভিন্ন আলেমদের দোয়া চেয়েছেন। খোঁজ নিলে দেখবেন এই লোকের ছেলেমেয়েদের সবাই পাশ্চাত্য শিক্ষায় শিক্ষিত মানুষ। তাদের মেয়েরা বিদেশে একা একা পড়তে যায়। মাহরাম নিয়ে মেয়েদের বাইরে যাবার ইসলামী বিধান তো তারা মানেনি! এমনকি কি ইসলামের এই বিধান ইসলামের অপব্যাখ্যা বলেও তারা বিশ্বাস করতে পারে। কিন্তু ইসলামের স্পিরিট থেকে কিন্তু তিনি বা তারা বঞ্চিত নন! কাজেই ধর্ম আপনাআপনি যাবে না। ফরাসি বিপ্লব যেমন রাষ্ট্র থেকে ধর্মকে দূর করেছিল সেভাবে সবাইকে লড়তে হবে। সামনে হালাল মদ খাওয়া মুসলমানকে আধুনিক গোঁড়ামিহীন মনে করলে আপনি নিশ্চিত ঠকবেন। ধার্মিক যুগের প্রয়োজনে কম্প্রমাইজ করলেও সে আধুনিক প্রগতিশীল হয় না। এরজন্য ধর্মকে আঘাত করতে হয়।

0/Post a Comment/Comments

যুক্তি সংগত কথা বলুন.................

Stay Conneted