*** পুরনো পোস্ট।
অন্তঃস্বত্তা স্ত্রীকে ভারতের আসামে নিরাপদে রেখে দেশকে মুক্ত করতে যুদ্ধে গেলেন স্বামী। এর আগে কখনো অস্ত্র ধরেননি, কলম ধরেছেন অনেক, তিনি কলমের মানুষ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পদার্থ বিজ্ঞানের শিক্ষক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। কিন্তু দেশের প্রয়োজনে ঘরে বসে থাকেননি, রণাঙ্গনে চলে গেলেন।
তখন সেপ্টেম্বর মাস। গণহত্যার পরিকল্পনায় হাজার মাইল পাড়ি দিয়ে আসা পাকিস্তান সেনাবাহিনী মরণকামড় বসাতে সর্বশক্তি দিয়ে আক্রমণ শানাচ্ছে। মুক্তিযোদ্ধারাও বীর বিক্রমে লড়ে যাচ্ছে। চুড়ান্ত প্রাণহানি ও ক্ষয়ক্ষতির মুখে বাংলার মানুষ। ঠিক এসময় ১৯৭১ সালের ১২ সেপ্টেম্বর খবর পেলেন তাঁর প্রথম সন্তান জন্ম নিয়েছে। খবর পেয়ে আসামের শিবনগরে নাজিরা ম্যাটারনিটি সেন্টারে ছুটে গেলেন স্ত্রী ও সন্তানকে দেখতে। যিনি ছুটে গেলেন তার নাম অজয় রায়, যাদের কাছে ছুটে গেলেন তারা স্ত্রী শেফালী রায় ও নবজাতক অভিজিৎ রায়।
যুদ্ধ শেষে স্বাধীন দেশে স্ত্রী সন্তানকে সাথে নিয়ে ফুলার রোডের বাসায় উঠেন অজয় রায়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে স্ব-পদে যোগ দিলেন। যুদ্ধোত্তর দেশ, সমস্যার শেষ নেই। কিন্তু সেসব সমস্যায় নিজেকে জড়িয়ে সমাধান খুঁজেছেন।
"অভিজিৎ তার আদর্শের জন্য প্রাণ দিয়েছে। সেটার জন্য দুঃখ আছে, কিন্তু শোকে ভেঙে পড়িনি। আদর্শের জন্য প্রাণ দেয়াটা একটা কৃতিত্বের ব্যাপার, সবাই পারে না।"
-অজয় রায়
স্বাধীন দেশে অজয় রায়ের সন্তান খুন হলেন আদর্শের জন্য লড়াই করে,বাবার অসাম্প্রদায়িক দেশের জন্য যুদ্ধকে বাস্তব পরিণতি দিতে।
মুক্তিযোদ্ধা অজয় রায়ের নিহত ছেলেকে কিংবা পরিবারের সদস্যদের দেখতে যাবার সাহস করেন নি আমাদের "মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষ" দাবীদার সরকার। অভিজিৎ রায়ের মা চলে গেছেন কিছুদিন হল বিচারহীনতার অভিজ্ঞতা নিয়ে।
অজয় রায় অসুস্থ হয়ে বারডেমে, কৃত্রিমভাবে শ্বাসপ্রশ্বাস দেয়া হচ্ছে।জানি অজয় রায় ফিরে আসবেন।
ছেলের কফিনের সামনে যিনি বলতে পারেন
"আই এম প্রাউড অফ মাই সান" সেই
মুক্তিযোদ্ধা অজয় রায়কে এই সময়ে কি ভীষণ দরকার আমরা জানি।
লুতফুল কবির রনির ওয়াল থেকে
Post a Comment
যুক্তি সংগত কথা বলুন.................