মেয়েটিকে হত্যা করতে ধর্ষণ ছাড়া অন্য কিছু করার দরকার পড়েনি, পর্যায়ক্রমিক ধর্ষণের ফলেই তার মৃত্যু ঘটে।

“মেয়েদের ধরে নিয়ে এসে, ট্রাক থেকে নামিয়ে সাথেই সাথেই শুরু হত ধর্ষন, দেহের পোশাক খুলে ফেলে সম্পূর্ণ উলঙ্গ করে ধর্ষণ করা হত।

সারাদিন ধর্ষণের পরে এই মেয়েদের হেড কোয়ার্টার বিল্ডিং এ উলঙ্গ অবস্থায় রডের সাথে বেঁধে ঝুলিয়ে রাখা হত এবং রাতের বেলা আবারো চলত নির্যাতন। প্রতিবাদ করা মাত্রই হত্যা করা হত, চিত করে শুইয়ে রড, লাঠি, রাইফেলের নল, বেয়নেট ঢুকিয়ে দেয়া হত যোনিপথে, কেটে নেয়া হত স্তন। অবিরাম ধর্ষণের ফলে কেউ অজ্ঞান হয়ে গেলেও থামত না ধর্ষণ” 
                             ______ রাজারবাগ পুলিশ লাইনের সুবেদার খলিলুর রহমান। 

“২৭ মার্চ, ১৯৭১, ঢাকা মিটফোর্ড হাসপাতালের লাশ ঘর থেকে লাশ ট্রাকে তুলতে গিয়ে একটি চাদর ঢাকা ষোড়শী মেয়ের লাশ দেখতে পান পরদেশী। সম্পূর্ণ উলঙ্গ লাশটির বুক এবং যোনিপথ ছিল ক্ষতবিক্ষত, নিতম্ব থেকে টুকরো টুকরো মাংস কেটে নেয়া হয়েছিল।

২৯ মার্চ শাখারীবাজারে লাশ তুলতে গিয়ে পরদেশী সেখানকার প্রায় প্রতিটি ঘরে নারী, পুরুষ, আবাল বৃদ্ধ বনিতার লাশ দেখতে পাই, লাশগুলি পচা এবং বিকৃত ছিল।

বেশিরভাগ মেয়ের লাশ ছিল উলঙ্গ, কয়েকটি যুবতীর বুক থেকে স্তন খামচে, খুবলে তুলে নেয়া হয়েছে, কয়েকটি লাশের যোনিপথে লাঠি ঢোকান ছিল।

 মিল ব্যারাকের ঘাটে ৬ জন মেয়ের লাশ পাই আমি, এদের প্রত্যেকের চোখ, হাত, পা শক্ত করে বাঁধা ছিল, যোনিপথ রক্তাক্ত এবং শরীর গুলিতে ঝাঝরা ছিল”
                                                                              ______ডোম পরদেশী।

 “৩০ মার্চ ঢাবির রোকেয়া হলের চারতলার ছাদের উপরে আনুমানিক ১৯ বছরের একটি মেয়ের লাশ পাই মেয়েটি উলঙ্গ ছিল। পাশে দাঁড়ানো একজন পাক সেনা বলে যে-মেয়েটিকে হত্যা করতে ধর্ষণ ছাড়া অন্য কিছু করার দরকার পড়েনি, পর্যায়ক্রমিক ধর্ষণের ফলেই তার মৃত্যু ঘটে।

মেয়েটির চোখ ফোলা ছিল, যৌনাঙ্গ এবং তার পার্শ্ববর্তী অংশ ফুলে পেটের অনেক উপরে চলে এসেছে, যোনিপথ রক্তাক্ত, দুই গালে এবং বুকে কামড়ের স্পষ্ট ছাপ ছিল” 
                                             ______ঢাকা পৌরসভার সুইপার সাহেব আলী। 
                                               
এগুলো কোন হরর মুভির কাহিনী কিংবা মনগড়া গল্প নয়। বাস্তব ঘটনা।

 “বাংলাদেশ” নামের এই দেশটির জন্মকথা এসব। এরকম আরও অনেক অনেক ইতিহাস চাপা পরে গিয়েছে সময়ের  বিবর্তনে। যারা পাকি হায়নাদের নির্মমতায় মারা গিয়েছেন, হয়তো মরে গিয়েও বেঁচে গিয়েছিলেন তাঁরা।

 কিন্তু যেসব মায়েরা একটি স্বাধীন দেশের জন্ম দিতে গিয়ে হারিয়েছিলেন সবটুকু, বেঁচে থেকেও তাঁদের মরতে হয়েছে অজস্র বার। সরকারের পক্ষ থেকে নামেমাত্র একটি “বীরঙ্গনা” উপাধি তাঁদের দেয়া হয়েছিল বটে কিন্তু সমাজের চোখে, পরিবারের কাছে তাঁরা ছিলেন “নষ্টা”।   

কবি শামসুর রাহমান লিখেছিলেন-     
                                                                                          তুমি আসবে ব’লে, হে স্বাধীনতা,
সাকিনা বিবির কপাল ভাঙলো,
সিঁথির সিঁদুর গেল হরিদাসীর।      
       
 স্বাধীনতা ঠিকই এনে দিয়েছিলেন সাকিনা, হরিদাসীরা কিন্তু স্বাধীনতার সুখ ভোগ করতে করতে আমরা ভুলে গিয়েছি তাঁদের।

 চাপা পরে গিয়েছে তাঁদের বুকচাপা হাহাকারগুলো সময়ের ব্যবধানে কালের অতল গহ্বরে। সংগৃহীত।

0/Post a Comment/Comments

যুক্তি সংগত কথা বলুন.................

Stay Conneted