মোল্লা ওমরের চেয়ে বেশি ভয়ংকর থ্রিপিস ক্লিন সেভড এরদোয়ান।

কট্টর মুসলিম জাতীয়তাবাদী এরদোয়ান সরকার সেক্যুলার নাস্তিক আতার্তুক কামাল পাশার মূর্তি বাংলাদেশে স্থাপনের ঘোষণা দিয়েছে একই সঙ্গে তুরস্কে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য স্থাপন হবে, এই সংবাদ সঠিক কিনা আমি জানি না। তবে এতে উল্লসিত হচ্ছেন কেন প্রগতিশীল সেক্যুলার বলে নিজেদের যারা মনে করেন?

এরদোয়ান সরকার বাংলাদেশে কামাল পাশার মূর্তি স্থাপন করলে বাংলাদেশের ইসলামী দলগুলো জব্দ হবে সত্য। কিন্তু এরদোয়ানের প্রভাব শক্তিশালী হবে না?  বাংলাদেশ মডারেট ইসলাম প্রতিষ্ঠিত হবে নাকি ফান্ডামেন্টালিস্ট ইসলাম বিষয়টা তো এতটুকু তফাৎ। 

মোল্লা ওমরের চেয়ে বেশি ভয়ংকর থ্রিপিস ক্লিন সেভড এরদোয়ান। হেফাজত ইসলামের পঞ্চাশ বছর আগে সেলেবাস থেকে 'হিন্দু লেখকদের' লেখা বাদ দিতে আদাজল খেয়ে মাঠে নেমেছিল আবুল ফজল কায়কোবাদ ফরুক আহমদদের মত কবি লেখকরা। ইন্দোনেশিয়ার টাকায় মূর্তির ছবি থাকলেও সেখানে আচেহ প্রদেশে শরীয়া শাসন চলে। বাংলাদেশের তুরস্কের ইসলামবাদী সরকারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা সামরিক সরকারগুলির সৌদি আরবের সঙ্গে সম্পর্কের মত দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব ফেলবে। তুরস্কের সিরিয়ালগুলোতে সেখানকার পশ্চিমা ছোট পোশাকের নারী দেখে এরদোয়ান শাসিত তুরস্ককে বুঝা মুশকিল। এরদোয়ান তুরস্ককে মুসলিম লীগের মত করে মুসলিম জাতীয়তাবাদ দেশটির গভীরে প্রথিত করতে চায়। একই সঙ্গে কামাল পাশার মূর্তিতে ফুলও দিতে চায়। বঙ্গবন্ধুর মূর্তিতে নিয়ম করে ফুলের মালা দিয়ে ইসলামবাদী বাংলাদেশ হলে আপনাদের আপত্তি নেই? ফান্ডামেন্টালিস্টরা ধর্মের বাইরে যেতে পারে না। কিন্তু জাতীয়তাবাদীরা ধর্ম দিয়ে দেশ চালায় না। প্রয়োজন পড়লে ব্যবহার করে। তাদের কাজ ধর্মীয় পরিচয়টুকু। হেফাজত ইসলাম জব্দ হবে তুরস্ক এখানে কামাল পাশার মূর্তি বসালে। কিন্তু সরকার নিজে কট্টরপন্থী তুর্কি খিলাফতের চেতনা জাগরনের নেতা, মুসলিম উম্মাহর বর্তমান প্রভাবশালী অভিভাবক এমন একজনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা কেমন বাংলাদেশ আশা করেন? 

আমার ধারণা ভাস্কর্য ইস্যুর আশু যবনিকাপাত হতে যাচ্ছে। শনিবার যাত্রাবাড়ী মাদ্রাসায় দেশের শীর্ষ বলাৎকারী ও জাকাত ফ্যাতরা খোর আলেমরা ভাস্কর্য বিষয়ে করণীয় ঠিক করতে বৈঠকে বসার ঘোষণা দিয়েছে। এই বৈঠকে কি সিদ্ধান্ত আসতে পারে?হেফাজত ইসলামের প্রচার সম্পাদক মাওলানা জাকারিয়া নোমান ফায়েজি বলেন, ‘‘আমরা কোনো সংঘাতে যেতে চাই না৷ শান্তিপূর্ণ সমাধান চাই৷ ইসলামে মূর্তি হারাম তাই শুধু বঙ্গবন্ধু নয় জিয়াউর রহমানসহ দেশে যত মানুষের ভাস্কর্য আছে তা ভেঙে ফেলতে হবে৷ আমরা মনে করি মূর্তি আর ভাস্কর্য একই৷ দুইটার মধ্যে কোনো পার্থক্য নাই৷’’

এসব কথার পরও আমার ধারণা শীর্ষ আলেমরা 'তাকিয়া' (ইসলামের স্বার্থে মিথ্যার আশ্রয় নেয়া) ব্যবহার করে এই যাত্রায় সরকারের রোষানল থেকে বাঁচার কৌশল নিবে। সেক্ষেত্রে তাকিয়ার আশ্রয় নিয়ে নিজেদের আরো শক্তিশালী করে ফিরে আসার সিদ্ধান্ত হতে পারে। এজন্য ধারণা করা যায় ঘোষণা আসতে পারে,  পুজার উদ্দেশ্য নয় এমন ভাস্কর্য ইসলামে হারাম নয়।  বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য দিয়ে তাকে পুজা করা হয় না কাজেই এটা শিরক নয়। আলেমদের ইসলামী আন্দোলনের স্বার্থেই এই মিথ্যাটা বলতে হবে। 

বাকি থাকল এরদোয়ান। ইমরান খান এরদোয়ান মাহথির এই ত্রয়ী আন্তর্জাতিকভাবে মুসলিম জাতীয়তাবাদ নিয়ে যে জোট করতে চাইছে সেখানে এরদোয়ান পরিস্কার বাংলাদেশকে চাইবে। বাংলাদেশ সেই ডাকে সাড়া দিলে এদেশের রাজনীতি ও সামজিক অবস্থায় একটা প্রভাব পড়বে না? যে হেফাজত চরমোনাইকে এত ভয় দেশটা আফগানিস্তান হয়ে যাবে,  বাংলাদেশ মুসলিম বলয়ের রাজনীতিতে চলে গেলে কিছু ভয় নেই কি? ...ভাবো, ভাবার প্রাক্টিস কর!

0/Post a Comment/Comments

যুক্তি সংগত কথা বলুন.................

Stay Conneted