বাংলাদেশে হিন্দু নির্যাতনের কারণে শুধু ওপার বাংলার হিন্দুরাই ক্ষতিগ্রস্ত হন নি, এপারের মূলনিবাসী বাঙ্গালী হিন্দুরাও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।

বাংলাদেশে হিন্দু নির্যাতনের কারণে শুধু ওপার বাংলার হিন্দুরাই ক্ষতিগ্রস্ত হন নি, এপারের মূলনিবাসী বাঙ্গালী হিন্দুরাও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। এই বঙ্গের জমি, প্রাকৃতিক সম্পদ, কর্মসংস্থান- সবকিছুতেই তাদের অংশীদারিত্ব কমেছে। দেশভাগের পাপের বোঝা আজও ব‌ইতে হচ্ছে শুধুমাত্র বাঙ্গালী হিন্দু জাতিকে।

ওপার থেকে বিতাড়িত হয়ে যারা এসেছিলেন অথবা আজও আসছেন, তাদের মনে ওপারে ফেলে আসা 'মাঠ ভরা ধান, পুকুর ভরা মাছ'- এর স্মৃতি তাজা থাকলেও ওসব ফেলে এপারে আসার কারণটা মুখ ফুটে বলতে বড় একটা শোনা যায় না। সেটা অফিসিয়ালি প্রকাশ করার একটা বড় সুযোগ এসেছিল '#সিএএ' পাশ হ‌ওয়ায়। কারণ নাগরিকত্ব পেতে হলে সেল্ফ ডিক্লারেশন দিয়ে ভারতে আসার কারণ জানাতে হত।

কয়েক কোটি বাঙ্গালী হিন্দুর অফিসিয়াল স্টেটমেন্টকে বাংলাদেশে হিন্দু নির্যাতনের সত্যতার প্রমাণ হিসেবে আন্তর্জাতিক স্তরে তুলে ধরার সুযোগ এসেছিল #সিএএ বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে। এর ভিত্তিতে আমরা এই বিপুল সংখ্যক উদ্বাস্তুদের জন্য সমানুপাতিক জমি বাংলাদেশের কাছে দাবি করতে পারতাম।

বাংলাদেশ থেকে ছিনিয়ে নেওয়া এই জমিতে সমস্ত উদ্বাস্তুদের এবং বর্তমানে বাংলাদেশে বসবাসরত হিন্দুদের পুনর্বাসনের মাধ্যমে বাংলাদেশে হিন্দু নির্যাতনের স্থায়ী সমাধান এবং উদ্বাস্তুদের চাপে এপার বাংলার বাঙ্গালী হিন্দুদের যে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বা হচ্ছে তার ইতি টানার একটা সম্ভাবনা লুকিয়ে ছিল এই #সিএএ-র বাস্তবায়নের মধ্যে।

কিন্তু দেশের বর্তমান সরকার পিছিয়ে গেল। #সিএএ এখন অনির্দিষ্ট কালের জন্য ঠান্ডাঘরে। কোভিড পরিস্থিতিতে সংসদ অধিবেশন চলতে পারে, একগাদা বিল পাশ হতে পারে, নির্বাচন হতে পারে, রোড শো হতে পারে, বড় বড় নির্বাচনী সভা হতে পারে, কিন্তু #সিএএ-র রুল তৈরি হতে পারে না। এটা বাঙ্গালী হিন্দুদের প্রতি সাম্প্রতিক কালের সেরা ভাঁওতা।

আমার ধারণা কেন্দ্রীয় সরকারের #সিএএ প্রশ্নে পিছু হটার জন্য শুধুমাত্র আগামী নির্বাচনের অঙ্ক‌ই দায়ী নয়, বরং বর্তমান সরকারের বাংলাদেশ নীতিই হয়তো এর মূল কারণ। বাংলাদেশে ঘটে যাওয়া সাম্প্রতিক হিন্দু নির্যাতনের ঘটনায় টু-শব্দটি না করে ঘটা করে বঙ্গবন্ধুর ডাকটিকিট প্রকাশ করার প্রহসন এই সম্ভাবনাতেই সীলমোহর দিচ্ছে।

আমরা #সিএএ চাই, ২০২১ এর নির্বাচনের আগেই চাই। কোনও আপোষ মীমাংসার প্রশ্ন নেই। এই প্রসঙ্গে বিভিন্ন উদ্বাস্তু সংগঠনের নেতৃত্বসহ বাঙ্গালী হিন্দু সমাজকে একটা স্ট্যান্ড নিতে হবে।

।। #হিন্দুর_স্বার্থে_হিন্দু_সংহতি_লড়ছে_লড়বে ।।

0/Post a Comment/Comments

যুক্তি সংগত কথা বলুন.................

Stay Conneted