নারীর কোন দেশ নাই, পক্ষও নাই। আমার এলাকায় (জায়গার নাম জানতে চাহিয়া লজ্জ্বা দিবেন না) মুক্তিযোদ্ধা দুই বন্ধু দুটি মেয়েকে লুট করে এনে বিয়ে করে।
একটা বিহারী মেয়ে একটা হিন্দু মেয়ে। রাজাকার আল বদররা হিন্দু মেয়েদের লুট ধর্ষণ করেছে এগুলো যত প্রকট মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের ঘটনাগুলো পরিমাণে কম ততখানি প্রকট নয়। তবে ঘটেছে। কিন্তু এগুলো স্বীকার করা হয়নি। সত্যগুলো চেপে রাখা হয়েছে। এই চেপে রাখার চেষ্টা থেকেই ভুল ইতিহাস সৃষ্টি হয়েছে। শর্মিলা বসুর মত লেখকরা জঘন্ন মিথ্যা অতিরঞ্জিত ইতিহাস লিখতে পেরেছে। আমি একবার একটা গল্পে মুক্তিযোদ্ধাদের দোষত্রুটির খানিকটা উল্লেখ করায় সচলায়তন ব্লগে বেশ অবিশ্বাসের স্বীকার হলাম। এখানেই সমস্যা। সেই ৭১ সালে যখন যুদ্ধ তখন নারী একটি ভিকটিম। যুদ্ধের সময় আইন আদালত হয়ে উঠে বন্দুকের নলে। তাই প্রচুর বিহারী ও হিন্দু নারী ভিকটিম হয়েছিলো। ইতিহাসবিদ আফসান চৌধুরী এ সম্পর্কে খুব সাহসী কথা বলেছেন। তিনি বলেছেন, ‘বাঙালিরা অবশ্যই নৃশংসতা এবং বিহারি নারীদের ধর্ষণে অংশগ্রহণ করেছিল। এটা যত দিন আমরা স্বীকার করব না, তত দিন আমাদের নিজেদের অবস্থানে দাঁড়াবার নৈতিক শক্তি থাকবে না। এসব ঘটনায় পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর ভূমিকাও আমি ব্যাখ্যা করেছি এবং বিহারিদের জন্য এটা বোঝা গুরুত্বপূর্ণ। পাকিস্তানিরা কীভাবে ভাবতে পারল যে তারা ঢাকায় বাঙালিদের আক্রমণ করবে, আর ওদিকে সারা বাংলাদেশে অরক্ষিত এবং অনিরাপদ অবস্থায় বসবাসরত বিহারিদের গায়ে কেউ হাত তুলবে না? আমি বিশ্বাস করি পাকিস্তানি সেনাবাহিনী বিহারিদের কথা ভাবেইনি এবং পরোক্ষভাবে তারা বিহারিদের মৃত্যু পরোয়ানায় স্বাক্ষর করেছিল। ডিসেম্বরে পরাজয়ের পরে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী বিহারিদের ফেলে রেখে ভারতীয় সেনা পাহারায় পালিয়ে যায়। যার ফলে বাঙালিদের প্রতিহিংসা পুরোপুরি গিয়ে পড়ে বিহারিদের ওপর, যারা অখণ্ড পাকিস্তানের স্বপ্নের শেষ বলি।’
একটা বিহারী মেয়ে একটা হিন্দু মেয়ে। রাজাকার আল বদররা হিন্দু মেয়েদের লুট ধর্ষণ করেছে এগুলো যত প্রকট মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের ঘটনাগুলো পরিমাণে কম ততখানি প্রকট নয়। তবে ঘটেছে। কিন্তু এগুলো স্বীকার করা হয়নি। সত্যগুলো চেপে রাখা হয়েছে। এই চেপে রাখার চেষ্টা থেকেই ভুল ইতিহাস সৃষ্টি হয়েছে। শর্মিলা বসুর মত লেখকরা জঘন্ন মিথ্যা অতিরঞ্জিত ইতিহাস লিখতে পেরেছে। আমি একবার একটা গল্পে মুক্তিযোদ্ধাদের দোষত্রুটির খানিকটা উল্লেখ করায় সচলায়তন ব্লগে বেশ অবিশ্বাসের স্বীকার হলাম। এখানেই সমস্যা। সেই ৭১ সালে যখন যুদ্ধ তখন নারী একটি ভিকটিম। যুদ্ধের সময় আইন আদালত হয়ে উঠে বন্দুকের নলে। তাই প্রচুর বিহারী ও হিন্দু নারী ভিকটিম হয়েছিলো। ইতিহাসবিদ আফসান চৌধুরী এ সম্পর্কে খুব সাহসী কথা বলেছেন। তিনি বলেছেন, ‘বাঙালিরা অবশ্যই নৃশংসতা এবং বিহারি নারীদের ধর্ষণে অংশগ্রহণ করেছিল। এটা যত দিন আমরা স্বীকার করব না, তত দিন আমাদের নিজেদের অবস্থানে দাঁড়াবার নৈতিক শক্তি থাকবে না। এসব ঘটনায় পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর ভূমিকাও আমি ব্যাখ্যা করেছি এবং বিহারিদের জন্য এটা বোঝা গুরুত্বপূর্ণ। পাকিস্তানিরা কীভাবে ভাবতে পারল যে তারা ঢাকায় বাঙালিদের আক্রমণ করবে, আর ওদিকে সারা বাংলাদেশে অরক্ষিত এবং অনিরাপদ অবস্থায় বসবাসরত বিহারিদের গায়ে কেউ হাত তুলবে না? আমি বিশ্বাস করি পাকিস্তানি সেনাবাহিনী বিহারিদের কথা ভাবেইনি এবং পরোক্ষভাবে তারা বিহারিদের মৃত্যু পরোয়ানায় স্বাক্ষর করেছিল। ডিসেম্বরে পরাজয়ের পরে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী বিহারিদের ফেলে রেখে ভারতীয় সেনা পাহারায় পালিয়ে যায়। যার ফলে বাঙালিদের প্রতিহিংসা পুরোপুরি গিয়ে পড়ে বিহারিদের ওপর, যারা অখণ্ড পাকিস্তানের স্বপ্নের শেষ বলি।’
আফসান চৌধুরী কে সেটা বোধহয় কাউকে বলার প্রয়োজন নেই। তবু বলি, তার অনেক পরিচয়ের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে প্রামাণিক গ্রন্থ ‘বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ: দলিলপত্র’ এই প্রকল্পে তিনি কাজ করেছেন। জামাত শিবিরের প্রিয় লেখক শর্মিলা বসু বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে চরম মিথ্যাচার ও ২৫ মার্চের পাকিস্তানী ক্রাকডাউন ও নয় মাসের গণহত্যা ধর্ষণকে লঘু করে দেখিয়ে বিহারী গণহত্যা নিয়ে অতিরঞ্জিত করে লিখতে পেরেছে কেবল আমাদের বিহারীদের উপর নির্মমতাকে অস্বীকার করার প্রবণতায়। হিন্দুর ঘরে সুন্দরী মেয়ে সেই যুদ্ধের সময় কেবল রাজাকার আল বদরের গণিমতের মাল হয়েছে তাই নয়, অনেক মুক্তিযুদ্ধোর বন্দুকের নলের স্বীকার হয়েছে। কিন্তু সেটি সংখ্যায় অতিসামান্য। কিন্তু সেই সামান্যকে কেন আমরা অস্বীকার করব?
কিন্তু আমরা অস্বীকার করবই। ৪৭ সালের নোয়াখালী দাঙ্গাকে অস্বীকার করেছি। ভুলেও আমাদের সেকথা উল্লেখ করতে দেখি না। কেমন করে মুসলিম লীগের হাতে হিন্দুরা একতরফা কচুকাটা হয়েছিলো সেই ইতিহাসকে আমরা না দেখার ভান করি। ৬৪-৬৫ সালের একতরফা হিন্দু নিধন নিপীড়নকেও আমরা কখনই আমাদের সাহিত্য সিনেমায় ধরিনি। এগুলো হচ্ছে সত্যকে অস্বীকার করা। এমনকি এদেশের হিন্দুরাও কোনদিন এসব নিয়ে কাজ করেননি। অথচ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ইহুদী নিধন নিয়ে সিনেমা বানিয়েছেন বিখ্যাত পরিচালকরা যারা নিজেরা ইহুদী হবার কারণে প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতা লাভ করেছিলেন। বাংলাদেশের হিন্দুরা মুসলিমদের কাছে ‘অসাম্প্রদায়িক ও গুড হিন্দু’ হওয়ার জন্য কখনই এসব নিয়ে কথা বলেন না। এই যে একজন মুক্তিযোদ্ধার হিন্দু বাড়ির মেয়ে লুটের কথা বললাম তাতে আমার কপালেই কি আছে কে জানে!
অরুন্ধতী রায় বলেছিলেন পাকিস্তান সেনাবাহিনী কখনোই নিজের দেশের লোকদের উপর হামলা চালায়নি। আমরা সে কথার প্রতিবাদ করে আমরা বলেছি পাকিস্তান ৭১-এ বাংলাদেশে গণহত্যা চালিয়েছে। কিন্তু আমরাই তো পাকিস্তান সেনাবাহিনীর নাম দিয়েছি 'হানাদার'!পাকিস্তান সেনাবাহিনী তো হানাদার ছিলো না। তারা নিজেদের দেশে পূর্বাঞ্চলে হামলা চালিয়ে গণহত্যা চালিয়েছে। তারা নিজেদের লোকদের হত্যা করেছে। পাকিস্তান গঠন করেছিল বাঙালি মুসলমান। পাকিস্তানের হয়ে বাঙালী সৈন্যরা ভারতের বিরুদ্ধে যুদ্ধও করেছে। আমাদের ইতিহাস বয়ানই অরুন্ধতীকে ইতিহাস বিকৃতি করতে সাহস দিয়েছে। সত্য ইতিহাস তাই বলতে হবে। বঙ্গবন্ধুকে সরাসরি হত্যায় জড়িতদের সবাই সেনাবাহিনীর মুক্তিযোদ্ধা সদস্য ছিলো। এরা প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা ছিলো না এসব বলে বলে যে ইতিহাসের ফাঁকফোকর তৈরি করি সেখানেই জায়গায় করে নেয় বিকৃতি।
#সুষুপ্ত_পাঠক
Post a Comment
যুক্তি সংগত কথা বলুন.................