গো ব্যাক নরেন্দ্র মোদী।

‘গো ব্যাক নরেন্দ্র মোদী’

মাত্রই যে দেশটির প্রধানমন্ত্রী শুভেচ্ছা স্বরূপ ৫০ লাখ করোনা ভ্যাক্সিন পাঠিয়েছিলো, সেই প্রথম চালানের ফ্রি ভ্যাক্সিন শরীরে নিয়েই ডাক্তার জফরুল্লাহ চৌধুরী বলছেন, ‘মোদি ভারতে হিন্দুত্ববাদ উস্কে দিয়ে মুসলমানদের শেষ করছে, তাকে বাংলাদেশে আসতে দেয়া হবে না'। 

বাংলাদেশ নিজে দাবী করে সে রাষ্ট্র হিসেবে ‘মুসলিম’! ওআইসিতে যোগদান ছিলো মুসলিম আইডেন্টিটিকে গ্রহণ করা। সেখানে ভারত আজো সাংবিধানিকভাবে ধর্মনিরপেক্ষ। ব্যক্তি মোদি হিন্দুত্ববাদী বলেই সে বাংলাদেশে আসতে পারবে না?একজন মানুষ মুসলিমবাদী হতে পারলে হিন্দুত্ববাদীও হতে পারবে। 

এই প্রসঙ্গে পাকিস্তান এসে যাবেই। একই দিনের নিউজ, বিবিসি উর্দু জানাচ্ছে পাকিস্তানে ১৬ বছরের নিচে হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান শিখ শিশুদের বাসা থেকে ঘুমন্ত অবস্থায় তুলে নিয়ে বিয়ে করে মুসলমান করা হয়। বিবিসি জানিয়েছে, ‘পাকিস্তানের মানবাধিকার সংস্থাগুলোর তথ্য অনুযায়ী, পাকিস্তানে প্রতিবছর প্রায় এক হাজার খ্রিস্টান, হিন্দু এবং শিখ মেয়েকে অপহরণ করা হয়। তাদের অনেককে ইসলাম ধর্ম গ্রহণে বাধ্য করা হয়। কারণ পাকিস্তানে বহুলভাবে বিশ্বাস করা হয়, শরীয়া আইন অনুযায়ী ১৬ বছরের কম বয়সী মুসলিম ছেলেমেয়ে বিয়ে করতে পারে’।

এ ধরণের প্রতিটি ঘটনায় কোন পুলিশি সহযোগীতা ভিকটিমরা পাকিস্তানে পায় না। পাকিস্তানে রাষ্ট্রীয়ভাবে এই ঘটনাগুলো চোখ বন্ধ করে সমর্থন করা হয়। অতি সম্প্রতি পাকিস্তানের ইমরান সরকার নতুন করে আর কোন হিন্দু বৌদ্ধ শিখ মন্দির তৈরি না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। জামিয়া আসরফিয়া নামের একটি ইসলামিক দলের বিরোধীতায় ইসলামাবাদের প্রথম শ্রীকৃষ্ণ মন্দির নির্মাণ বন্ধ করে দেয় ইমরান সরকার। জামিয়া আসরফিয়ার ফতোয়া ছিলো, পাকিস্তানে সংখ্যালঘুদের যে কটি ধর্মস্থান রয়েছে সেগুলি রক্ষণাবেক্ষণ করা যেতে পারে। কিন্তু নতুন করে আর কোনও মন্দিরের প্রতিষ্ঠা করা যাবে না।

পাকিস্তানে এগুলো নতুন কোন ঘটনা নয়। কিন্তু কখনো এসব কারণে কোন পাক প্রধানমন্ত্রীর সফরে কেউ রাস্তায় নেমেছিলো? চরম মুসলিমবাদী ইমরান, পাকিস্তানের এ যাবদ যত জন প্রধামন্ত্রী ছিলেন সকলেই ছিলেন কট্টর মুসলিমবাদী, পাকিস্তানের কোন রাজনীতিবিদের মুসলিমবাদী না হয়ে রাজনীতি করার সুযোগও নেই, শুধু মোদি হিন্দুত্ববাদী হতে পারবে না!

ভারতে যোগিনাথের রাজ্যে একটি মুসলিম বালক মন্দিরে গিয়ে পানি খাওয়ায় তাকে মারধোর করা হয়েছে। এরকম একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়লে সারা ভারতে এই ঘটনার প্রতিবাদে মানুষ হ্যাশ ট্যাগ করে সরব হয়ে উঠে। এখানেই তফাত। পাকিস্তানের ঘটনায়গুলো মিডিয়ায় আসলেও বড় ইস্যু হতে পারে না! এক মুসলিমের দোষ অপর মুসলমানের ঢেকে রাখার হাদিসের সঙ্গে ভারতীয় লিবারাল নীতি হচ্ছে  বাংলাদেশ পাকিস্তানে অমুসলিমদের প্রতি যে কোন অন্যায়ের বিরুদ্ধে সরব হওয়াকে স্বর্ধমীয় পক্ষপাতী সাম্প্রদায়িকতা মনে করা হয় এবং এসব তুলে ধরলে হিন্দুত্ববাদীরা লাভবান হবে তাই চেপে যেতে হবে! তাই ভারতের মন্দিরে পানি খেতে যাওয়া মুসলিম বালকের উপর অন্যায়ের জন্য হ্যাশ ট্যাগ পড়লেও পাকিস্তানের ১২ বছর ধরে শিকলে বন্দি ফারহা নামের খ্রিস্টান কিশোরীটির পক্ষে কোথাও হ্যাশট্যাগ হয় না! 

বাবা মায়ের সামনে থেকে ১২ বছর আগে অপহরণ করে নিয়ে গিয়ে ফারহাকে মুসলিম করার অভিযোগে সম্প্রতি আদালতে গিয়েছে পাকিস্তানের গির্জা কর্তৃপক্ষ। এরকম একটি ইস্যুতে কেউ ইমরান সরকারকে দোষ দিচ্ছে না। কেন ইমরান সরকারের পুলিশের কাছে মেয়ের সন্ধান পাওয়ার পর সহায়তা চাইতে গেলে ফিরিয়ে দেয়া হয়েছিলো। পাকিস্তানে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের এই করুণ পরিস্থিতির তুলনায় যোগির রাজ্যে গরুর মাংস খাওয়া নিয়ে ঘটা ঘটনাগুলোর তুলনা করুন। ভারতে এই মূহুর্তে চিকিৎসা বা ব্যবসা করতে যারা অবস্থান করছেন, কোন রেস্টুরেন্টে বসে গরুর মাংস দিয়ে ভাত খেতে খেতেই হয়ত আমার পোস্ট পড়তে পড়তে আমাকে গালি দিচ্ছেন, শালা কত বড় দালাল মুসলমানদের গরুর মাংস খাওয়ার জন্য যে মারধোর করা হয় সেটা স্বীকার করতে চায় না!...

#সুষুপ্ত_পাঠক

0/Post a Comment/Comments

যুক্তি সংগত কথা বলুন.................

Stay Conneted