আমাদের মতাদর্শে কল্লা উড়াইয়া দেয়ার কোন বিধানই নেই। যুক্তির বিপরীতে যুক্তিকে শক্তিশালী করাই আমাদের কাজ।

তারা বলতো, ইসলাম নাকি শান্তির ধর্ম! ইসলামে নাকি জঙ্গিবাদের কোন স্থান নেই! ইসলাম নাকি মানবতার কথা বলে! ক্ষমা আর ভালবাসার কথা বলে! জিহাদ সত্যিকারের মানে নাকি নিজের নফসের সাথে যুদ্ধ! 

মুক্তমনা নাস্তিকরা বলতো, কথাগুলো সত্য নয়। ইসলামে আক্রমণাত্মক জিহাদের স্পষ্ট নির্দেশনা আছে। মূর্তি পুজারীদের মূর্তি এবং উপাসনালয় ভেঙ্গে গুড়িয়ে দেয়ার পরিষ্কার নির্দেশনা আছে। কাফেরকে অপদস্থ করে, অপমানিত করে তাদের থেকে জিজিয়া নেয়ার বিধান আছে। ইসলামের সামান্যতম সমালোচনাও ইসলাম সহ্য করে না। ইসলাম সকল সমালোচকদের সরাসরি গর্দান উড়াইয়া দিতে বলে। ইসলামের বুনিয়াদী গ্রন্থগুলোতে এই বিধান খুব পরিষ্কারভাবে বলা আছে। নবীর জামার একটি বোতামও ময়লা ছিল, নবীর কোন কাজ অনৈতিক ছিল, ইসলামের কোন বিধান আধুনিক সময়ের মানদণ্ডে অনৈতিক ও বর্বর, এই কথাগুলোর যেকোন একটি বলা মাত্রই তাকে যেকোন মুসলমান এসে হত্যা করতে পারে, যদি শাসক তাদের মৃত্যুদণ্ড না দেয়। সেই খুনীর এই খুনের জন্য মৃত্যুদণ্ডও দেয়া যাবে না। বরঞ্চ সেইসব খুনীদের রাষ্ট্রীয়ভাবে পুরষ্কৃত করতে হবে। এগুলো শরীয়তের স্পষ্ট বিধান। এগুলো ইসলামের অসভ্য বর্বর এবং মধ্যযুগীয় বিধান। এগুলো মধ্যযুগীয় বর্বর আরবের মরুডাকাতদের ধর্ম। গনিমতের মাল নাম দিয়ে কাফের নারী ধর্ষণকারীদের ধর্ম। শিশুকামী এবং জল্লাদ নবীর ধর্ম। 

এগুলো সেই একযুগের বেশি সময় ধরে আমরা লিখে এসেছি। ভবিষ্যতের ভয়ঙ্কর দিনের ব্যাপারে সাবধান করে এসেছে। সেই সময়ে নানান লোক এসে বলেছে, এগুলো ইসলামে নেই। এগুলো নাকি গুটিকয় জঙ্গিবাদীদের তৈরি বিকৃত ইসলাম! কিন্তু এখন ইসলামের প্রখ্যাত সব আলেমগণ সরাসরিই কথাগুলো বলছে। কোন রাখঢাক না করেই, সরাসরি নাস্তিক মুরতাদ শাতিমে রাসুলকে কীভাবে জবাই করতে হবে, সেই প্রচার প্রচারণা প্রকাশ্যে ওয়াজগুলোতে বলে বেড়াচ্ছে। 

গতকাল আব্বাসী এবং মামুনুল হকের ওয়াজ শুনলাম। তারা এখন আর ইসলাম শান্তির ধর্ম, জঙ্গিবাদ ইসলাম সমর্থন করে না, এগুলো বলছে না। একদম সরাসরিই তারা মুরতাদ নাস্তিক শাতিমে রাসুলকে জবাই করা কেন জরুরি, সেগুলোর ব্যাখ্যা দিচ্ছে। প্রচার মাধ্যমে সেগুলো প্রচারও হচ্ছে। সরকার সেই বিষয়ে কোন পদক্ষেপও নিচ্ছে না। কারণ এগুলো আসলেই ইসলামের বিধান। যেই কথাগুলো আমরা একযুগ ধরে বলেছি। তখন কথাগুলোকে নাস্তিকদের অপপ্রচার বলা হয়েছিল। এখন তারাই আমাদের সেই কথাগুলো বলে দিচ্ছে। তাহলে, নাস্তিকরা এতদিন ধরে ভুল কী বললো? অপপ্রচার কী করলো? মিথ্যা কী বললো? 

বারবার বিতর্কের আহবান জানাবার পরেও, কোন ইসলামিক আলেমই আমাদের সাথে বিতর্কে আসার সাহস করলো না। Abbasi Monjil Joinpur এবং হেফাজতের Harun izhar  এই দুইজন বিতর্কে আসার ব্যাপারে সম্মত হয়েও, বিপদ বুঝতে পেরে ইদুঁরের গর্তে গিয়ে লুকালো। কারণ এরা বুদ্ধিমান। বুঝতে পেরেছে, একবার বিতর্কে আসলে উনাদের ধর্মের লুঙ্গি সহ খুলে নেয়া হবে। যেকোন একজন নাস্তিকই, উনাদের ধর্মের বিধিবিধান উল্লেখ করে উনাদের ধর্মকে উলঙ্গ করে দিতে পারবেন। উনারা দুইজন একসাথে আসতে চাইলে, আমি তাতেও সম্মত ছিলাম। উনাদের এরপরেও সেই সাহস হলো না। এখন ওয়াজে গিয়ে আমার বিরুদ্ধে উনারা চিল্লাচিল্লি করেন। নিজের ঘরে বসে নেড়ি কুত্তাও যে বাঘ হয়ে যেতে পারে, উনারা দুইজনই তার প্রমাণ। 

হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের যুগ্ম-মহাসচিব মুহাম্মাদ মামুনুল হক Mamunul Haque তার "কারাগার থেকে বলছি" বইতে আমার নামে গালাগালি করেছে। সে লিখেছে, আমি নাকি নবীর দুশমন। আমি নবীর সাথে কী দুশমনী করলাম, জানি না। নবীর সম্পর্কে আমি যেই কয়টা কথাই লিখেছি, প্রতিটি লেখা সত্য। নবী একজন শিশুকে ধর্ষণ করেছেন, এই কথা ভুল প্রমাণ করতে পারলে আমি প্রকাশ্যে এসে ক্ষমা চাইবো। নবীর সম্পর্কে আমি একটিও মিথ্যা কথা লিখেছি, সেটি পারলে উনারা সবাই মিলে প্রমাণ করুক। আমি ভুল স্বীকার করে নিবো। উনারা প্রয়োজন মনে করলে, মামুনুল হক, আব্বাসী, হারুন ইজরার একসাথেই আমার সাথে বিতর্কে আসতে পারেন। আমি তাতেও সম্মত। আমি নিশ্চিতভাবে প্রমাণ করে দিবো, ইসলাম একটি অসভ্য, বর্বর, খুনোখুনী আর নোংরা মতাদর্শ। 

চ্যালেঞ্জটি আবারো জানিয়ে দিচ্ছি। উনাদের তিনজনার বিপক্ষে আমি একাই কথা বলবো। প্রতিটি কথা রেফারেন্স সহকারে প্রমাণ করে দিবো। যদি সেটি প্রমাণ করতে না পারি, দেশে এসে নিজে নিজের মাথাটা উনাদের সামনে নিয়ে গিয়ে বলবো, এবারে আমার কল্লা উড়াইয়া দিন। একজন শাতিমে রাসুলকে হত্যা করে জান্নাতে যাওয়ার এরকম সুবর্ণ সুযোগ আর উনারা পাবেন না। উনাদের এত দিনের খায়েস, এত ওয়াজে উনারা আমার কল্লার দাবীতে চিৎকার করেন, সব আশা পূরণ করে দিবো। আমি জানি, এরপরেও উনাদের বাপেরও সাহস হবে না, আমার সাথে বিতর্কে আসার। কারণ উনারা নিজেরাও জানেন, আমি ইসলামের এবং নবীর যেসকল সমালোচনা করেছি, প্রতিটিই সত্য। একটি কথাও মিথ্যা না। 

আমি মনে প্রাণে চাই, উনারা একদিন সুস্থ হয়ে উঠবে। মধ্যযুগের আরবের যেই ভাইরাসে উনারা আক্রান্ত হয়েছেন, সেই বিষাক্ত মতাদর্শ থেকে উনারা বের হয়ে ধর্মীয় হানাহানি, কামড়াকামড়ি, কোপাকুপি, রক্তারক্তি থেকে বের হয়ে উনারা মানবিক মানুষ হয়ে উঠবে। ইসলামের নবী উনাদের মনে সাম্প্রদায়িকতার যেই বিষ ঢুকিয়ে দিয়েছে, সেই বিষ কমে আসবে। রক্তপিপাসু ড্রাকুলার যেই ধর্ম উনারা পালন করেন, লাশ আর গর্দান যেই ধর্মের ভিত্তি, তরবারি যেই ধর্মের জান্নাতের ছায়া, হুর গেলমান যেই ধর্মের পুরষ্কার, সেই ধর্মের নোংরামি থেকে উনারা সুস্থ হয়ে উঠবে। তবে সেই সুস্থতার জন্য প্রয়োজন যৌক্তিকভাবে আলোচনা করার মানসিকতার। 

আমি তাই বারবার যুক্তির বিপক্ষে যুক্তির জন্য আহবান জানিয়ে যাবো। সমালোচনার জন্য উনাদের কল্লা চাইবো না। বরঞ্চ, যুক্তি তথ্য প্রমাণ দিয়ে যেন উনারা সবকিছুর সমালোচনা করতে পারেন, সেই অধিকার চাইবো। খুনোখুনী বাদ দিয়ে যুক্তি দিয়ে কীভাবে প্রতিপক্ষকে পরাস্ত করতে হয়, সেটি শেখাবো। আমাদের মতাদর্শে কল্লা উড়াইয়া দেয়ার কোন বিধানই নেই। যুক্তির বিপরীতে যুক্তিকে শক্তিশালী করাই আমাদের কাজ।

0/Post a Comment/Comments

যুক্তি সংগত কথা বলুন.................

Stay Conneted