এই হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেস ভবন ক্যাপিটলে হামলাকারীর ছবি। তার পরিচয় পাওয়া গেছে। সে ‘নেশন অব ইসলাম’ –এর সদস্য, নাম নোহা গ্রিন। এটা একটা ইসলামিক ব্রাদারহুড সংগঠন। এদের কাজ হচ্ছে সমাজে সংখ্যাগরিষ্ঠদের হাতে নিপীড়িত, বর্ণবাদের শিকার, সাম্প্রদায়িকতার শিকার অমুসলিম জনগোষ্ঠিকে ইসলামে দীক্ষা করে শ্রেণী অধিকারের ডাক দিয়ে জিহাদ করানো। ক্যাপিটলে হামলাকারীও নিজেদের বঞ্চিত বলে দাবী করে ইনস্টাগ্রামে একাধিক পোস্ট দিয়েছিলো। ধারণা করা হয় ‘নেশন অব ইসলাম’ পশ্চিমের বামপন্থিদের প্ররোচনায় তৈরি করা হয়েছিলো। সেই ইতিহাসটা একটু আলাপ করা যাক।
'নেশন অব ইসলাম' এর প্রতিষ্ঠাতা ধরা হয় কৃষ্ণাঙ্গ এলিজা মোহাম্মদকে। মূলত মার্কিন নেশন অব ইসলাম কালো মুসলমানদের দল। এর উত্থান ম্যালকম এক্সের সময়। ম্যালকম এক্সের সরাসরি গুরু এলিজা মোহাম্মদ। ম্যালকম তরুণ বয়েসে নানা রকম ছোটখাটো অপরাধে জেলে থাকার সময় জেলের ভেতর অন্য মুসলিম কৃষ্ণাঙ্গ অপরাধীদের কাছে ‘নেশন অব ইসলাম’ সম্পর্কে প্রথম জানতে পারেন। সাদা আমেরিকানদের বর্ণবাদকে রুখে যেখানে মার্টিন লুথার কিং কালো আর সাদাদের সমাধিকার আর ভ্রাতৃত্ববোধের আমেরিকা চাচ্ছিলেন তখন ‘নেশন অব ইসলাম’ হোয়াইট সুপ্রিমেসি ভেঙ্গে পাল্টা আরেকটা প্রতিক্রিয়াশীল অবস্থান ‘ব্লাক সুপ্রিমেসি’ গড়ে তুলতে চাইছিল যা সাদা বর্ণবাদের মত আরেকটি ‘কালো বর্ণবাদ’। কিন্তু এই আন্দোলন মুসলিম স্পীডের ভিত্তিতে ঘটবে। মুসলমানদের ধর্মীয় আকিদার ভিত্তিতে সাম্রাজ্যবাদী সাদাদের বিরুদ্ধে লড়াই করতে হবে। ধারণা করা হয় ‘নেশন অব ইসলাম’ পৃষ্টপোষকতা করেছিল কমিউনিস্টরা। কারণ ম্যালকম নিজেকে কমিউনিস্ট দাবী করে প্রেসিডেন্ট ট্রুম্যানের কাছে এক খোলা চিঠি লিখে কোরিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধের বিরোধীতা করেন।
ম্যালকম এক্স যখন নাম করতে শুরু করেন তখনই তার গুরু এলিজা মোহাম্মদের সঙ্গে চরম বিরোধ তৈরি হয়। এর ফলশ্রুতিতে ম্যালকম আলাদাভাবে আন্দোলন শুরু করেন। এই পর্যায়ে ম্যালকম মক্কায় হজ করতে যান এবং বিভিন্ন মুসলিম দেশ সফর করে আলেম ওলামাদের সঙ্গে পরামর্শ করে ফের আমেরিকায় ফিরেন নতুন কার্যপদ্ধতি নিয়ে। এরকম সময়ে ১৯৬৫ সালে ম্যালকমকে গুলি করে হত্যা করে নেশন অব ইসলামের তিন সদস্য। এরা হলেন নওমুসলিম বাটলার যার ইসলামী নাম হয় মোহাম্মদ আবদুল আজিজ। দ্বিতীয়জন জনসন পরিবর্তিত নাম খলিল ইসলাম। তৃতীয়জন হায়েরের যার পরিবর্তিত নাম মুজাহিদ হালিম।
সমাজের পতিত নিপীড়িতদের কাছে কল্পিত ইসলামের ভ্রাতৃত্ব সাম্যবাদের কথা বলে তাদেরকে ভুলিয়ে ভালিয়ে ইসলামের ছায়াতলে এনে জিহাদ পরিচালনা করার ফন্দি অনেক পুরোনো ইতিহাস। মুসলিম লীগ তফসিলি সম্প্রদায়কে সাম্য ভ্রাতৃত্বের কথা বলে পাকিস্তানের পক্ষে এনেছিলো। ফলাফল হয়েছিলো ভয়াবহ। ম্যালকম এক্স নিমর্মভাবে খুন হয়েছিলো তারই মত নওমুসলিম হওয়া তার ধর্মের ভাইদের হাতে। এখন পশ্চিমবঙ্গের পীরজাদা আব্বাস ভাইজানও দলিত হিন্দুদের দলে টানছে সমতার কথা বলে। দেখা যাক, কি হয়!
#সুষুপ্ত_পাঠক
Post a Comment
যুক্তি সংগত কথা বলুন.................