ইসলামী স্টেট অব বাংলাদেশ।

এটি ইসলামী স্টেট অব বাংলাদেশের ভিত্তিপ্রস্ত হিসেবে বিবেচিত হবে। সংসদীয় কমিটির সুপারিশ যদি মেনে নেয়া হয় তাহলে নারীদের ঘরের বাইরে এসে কাজ করার বিরুদ্ধে ইসলাম ধর্মকে ঢাল হিসেবে ধরে তার বাস্তবায় করা হবে। মুক্তিযোদ্ধাদের গার্ড অব অনার অনুষ্ঠানে নারী ইউএনও দিয়ে না করার সুপারিশ করা হয়েছে। কমিটির সভাপতি শাজাহান খান বলেন, “নারীরা তো জানাজায় থাকতে পারেন না। তাই নারী ইউএনও গার্ড অব অনার দিতে গেলে স্থানীয় পর্যায়ে অনেকে প্রশ্ন তোলেন। সেজন্য এ বিষয়ে বৈঠকে একটি প্রস্তাব এসেছে”।

নারীরা জানাজায় থাকতে পারে না এটি ইসলামী বিধান। এই বিধান যদি বাস্তবায়ন করে সংসদীয় কমিটি তাহলে ইসলামী আরেক বিধান নারীদের নেতৃত্ব, নারী শাসক, নারী উচ্চপদস্ত কর্মকর্তা হিসেবে পুরুষের উপর অবস্থান যা ইসলামে সম্পূর্ণ রূপে হারাম সেটাও আগামীতে বাস্তবায়ন করতে হবে। শাজাহান খানরা যে মন থেকে শেখ হাসিনাকে মানেন না সেটা এই কমিটির সুপারিশ থেকে প্রমাণিত হয়েছে। তারা সেই দিনের আশায় আছেন যেদিন শেখ হাসিনা থাকবে না তখন আওয়ামী লীগ ঘোষণা দিয়ে দল থেকে নারী নেতৃত্বকে হারাম ঘোষণা করবে!

সুলতানা কামাল এই সুপারিশের প্রতিবাদ করে বলেছেন, সংবিধানের ২৮–এর (১) অনুচ্ছেদে বলা আছে, ‘কেবল ধর্ম, গোষ্ঠী, বর্ণ, নারী–পুরুষভেদ বা জন্মস্থানের কারণে কোনো নাগরিকের প্রতি রাষ্ট্র বৈষম্য প্রদর্শন করিবেন না।’ আর ২৮–এর (২) অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, ‘রাষ্ট্র ও গণজীবনের সর্বস্তরে নারী–পুরুষ সমান অধিকার লাভ করিবেন।...

এগুলো কোন মুসলমানই মানে না। ১৯৭২ সালের সংবিধানে রাখা কথাগুলো ছিলো বাঙালী মুসলমানের দ্বিধাদন্ডের একটি উদাহরণ। সে প্রগতিশীল হতে চায় আবার মুসলমানত্বও রাখতে চায়। তাই ৭২-এর সংবিধান করার পরও ইসলামী ফাউন্ডেশন করতে হয়েছিলো। জাতীয় অনুষ্ঠানে কুরআন তেলাওয়াত শুরু করতে হয়েছিলো। রবীন্ত্রনাথের গানকে জাতীয় সংগীত করার অস্বস্তি বা নিজেদের মুসলমানিত্বের পরিচয় খর্ব হয়ে যাচ্ছে কিনা সেই অস্বস্তিতে নজরুল ইসলামকে জাতীয় কবি বানানো হয়। নজরুল ইসলামের সাহিত্যে বাংলাদেশের কোন ফ্লেবারই ছিলো না। তবু মুসলিম পরিচয়েই তাকে জাতীয় কবি করা হয়। তাই সুলতানা কামাল যতই সংবিধানের দোহাই দেন কোন লাভ হবে না।

এর আগে সর্বোচ্চ আদালত নারীরা কাজি হতে পারবে না বলে রায় দিয়েছিলো কারণ রাতবিরাতে নারীদের বের হওয়া সমস্যা এবং নারীদের মাসে একবার রজ:স্বলা হওয়ার কারণ তারা নামাজ রোজা থেকে বিরত থাকে বিধায় বিয়ে পড়ানোর কাজ তাদের দিয়ে হবে না! সর্বোচ্চ আদালত যখন নারীর অধিকার কুরআন খুলে দেখে স্বীকৃতি দেন তখন অশিক্ষিত মুসলমান সাংসদদের সুপারিশ দেখে অবাক হওয়ার কিছু নেই। এবার দেখার পালা প্রধানমন্ত্রী এই সুপারিশ বিষয়ে কি ব্যবস্থা নেন! নারী হয়ে এতটা বছর রাজনীতি করতে যদি কোন অসুবিধা না হয়ে থাকে তাহলে “নারী ইউএনও” বিষয়ে উনার অবস্থান কি ধর্ম দ্বারাই পরিচালিত হবে কিনা সেটা আমাদের কাছে স্পষ্ট হয়ে যাবে শীঘ্রই।

তবে ঘটনা যাই হোক, ঐতিহাসিক এই সুপারিশ যারা করেছেন তাদের সকলের নামটা জেনে রাখা ভালো। ইসলামের এই সেবকদের চেনা সকল নাগরিকের কর্তব্য। বৈঠক সভাপতিত্ব করেন শাজাহান খান এমপি, সদস্যরা হলেন, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ.ক.ম. মোজাম্মেল হক, রাজি উদ্দিন আহমেদ, মেজর (অব.) রফিকুল ইসলাম, কাজী ফিরোজ রশীদ, ওয়ারেসাত হোসেন বেলাল এবং মোছলেম উদ্দিন আহমদ। তারা সকলেই ইসলামে নারীদের জানাজায় যেহেতু পার্মিশন নেই সেহেতু নারী ইউএনও দিয়ে গার্ড অব অনার না দেয়ার সুপারিশ করেন।

...এই পোস্ট লেখার জন্য নারী ইউএনওদের কাছ থেকে ভালো মালপানি পেয়েছি। এ মাসে ইনকাম খুব ভালো...!

0/Post a Comment/Comments

যুক্তি সংগত কথা বলুন.................

Stay Conneted