আল আকসা প্রাঙ্গনে ইহুদীরাও এখন থেকে প্রার্থনা করতে পারবে ইজরাইল আদালত থেকে এই রায় এসেছে। রায়ের পর মিশর থেকে হুমকি এসেছে রক্ত বয়ে যাবে জেরুজালেমে। ফিলিস্তিন থেকে বলা হয়েছে এরপর যা ঘটতে পারে তার জন্য দায়ী থাকবে ইজরাইল।
মুসলমানদের সঙ্গে জেরুজালেমের সম্পর্কটা কতদূর? মনে করেন আপনার বাবা আপনার মাকে বিয়ে করার আগে যে মেয়েকে বিয়ে করতে দেখতে গিয়েছিলো, বিয়ের কথা কিছু দূর এগিয়ে ভেস্তে যায়, সেই মেয়েকে আপনি যদি এখন মা দাবী করেন সেটা যেরকম হাস্যকর সম্পর্ক হবে ঠিক তেমনি। হযরত মুহাম্মদ স্বশরীরে কোনদিন জেরুজালেম আসেন নাই। বলা হয় তিনি আল্লার বিশেষ কুদরতে আকাশম পথে বোরাক নামের ডানাওয়ালা ঘোড়া ও খচ্চরের মাঝামাঝি দেখতে একটি প্রাণীর পিঠে চড়ে জেরুজালেম এসে দু রাকাত নামাজ পড়েছিলেন। এরকম ঐতিহাসিক প্রমাণহীন ও কল্পিত কাহিনী যাকে কেবল মাত্র ধর্মীয় বিশ্বাসের জোরে বিশ্বাস করতে হয় তাকে পুঁজি করে ওমর যখন খলিফা ছিলেন তখন নবী মুহাম্মদের নামাজ পড়ার কথিত জায়গায় একটি মসজিদ বানিয়ে দেন স্মৃতি রক্ষার্থে। অথচ এ জায়গা কেবলই ইহুদীদের প্রধান তীর্থস্থান!হিন্দুদের যেমন গয়া কাশি, মুসলমানদের যেমন মক্কা মদিনা, খ্রিস্টানদের যেমন বেখেলহেম। ইহুদীদের প্রধান তীর্থস্থানে একটি মসজিদ নির্মাণ যে ভাবিকালে কতখানি অশান্তি তৈরি করবে এটি ওমর হয়ত জেনে বুঝেই করেছিলেন। আপনি কি কাবাঘরের কয়েক শত গজ দূরেরই একটি মন্দির নির্মাণকে মেনে নিবেন? কিন্তু দেখুন ইহুদীরা সেই মসজিদকে রেখে দিয়েছে। সেখানে মুসলমানরা নামাজ পড়ে। একটু বেশি মাত্রায় পড়ে কারণ ওখানে ইহুদীদের তীর্থকেন্দ্র যে! এখান থেকে মুসলমানদের কিবলা সরিয়ে মক্কার কাবায় নিয়ে যাওয়া হয়েছিলো। সে হিসেবেও এটি মুসলমানদের পরিত্যাক্ত কিবলা। হযরত মুহাম্মদ দাবী করেছিলেন তিনি ইহুদী ও খ্রিস্টানদেরও নবী। সে দাবী করতে গেলে তাকে অবশ্যই বণি ইজরাইল বংশধর হতে হবে। কিন্তু তিনি ছিলেন একজন আরব। যে কারণে তাকে বলতে হয়েছে তিনি ইব্রাহিমের পুত্র ইসমাইলের বংশধর। যে কারণে ইসলামের প্রাথমিক যুগে নামাজের সেজদা দেয়া হতো বাইতুল মোকাদ্দেসকে নিশানা করে। কিন্তু ইসমাইল ও তার মাতা দাসী হাযরাকে ইব্রাহিম মক্কায় ছেড়ে দিয়েছিলেন এমন প্রমাণ করা যায়নি। এটি ছাড়াও দাসী পুত্র হিসেবে ইসমাইল ইব্রাহিমের পুত্র হিসেবে স্বীকৃত নয় ইহুদীদের কাছে। ফলে প্রফেট মুহাম্মদকে তারা নবী বলে স্বীকার করেনি। এটি যখন চূড়ান্তভাবে প্রফেট মুহাম্মদ বুঝতে পারলেন তখন তিনি বাইতুল মোকাদ্দেস থেকে তার কিবলা মক্কার কাবার দিকে টেনে নিলেন। কুরআনে কিবলা পরিবর্তনের কোন যৌক্তিক কারণ দেখাতে পারেনি। এসব কারণে বাইতুল মোকাদ্দেস এলাকায় মুসলমানদের ধর্মীয় দাবী ছেড়ে দিলে ধর্মীয় কোন কিছুর ক্ষতি হবে না বা লঙ্ঘিত হবে না। বরং অশান্তিই কমে যাবে। ইজরাইল আদালতের রায়কে কোনভাবে অযৌক্তিক মনে হয়নি। যদি মানুষের ধর্মীয় অধিকারকে বিবেচনা করেন তাহলে এ স্থানে ইহুদীদেরই দাবী সর্বাগ্রে। মুসলমানদের উচিত তাদের মক্কা মদিনাকেই পবিত্র জ্ঞান করা। আল আকসা নিয়ে তীব্র পবিত্রতার দাবী করে অশান্তি আর বাড়াবেন না। হজ করতে মক্কাতেই যান। নৌকা আপনি মদিনার উদ্দেশ্যেই ছাড়েন! কখনো বলেন নাই একবার আল আকসা না দেখে মরবেন না! কাজেই উহুদীদের পবিত্র স্থান তাদের জন্যই ছেড়ে আসুন!
-সুষুপ্ত পাঠক
Post a Comment
যুক্তি সংগত কথা বলুন.................