নাস্তিক ধর্ম থেকে রাতারাতি আস্তিক ধর্ম গ্রহণ করার পর বাংলার সমগ্র মোডারেট ইসলামপন্থীরা মুফাসসিল ইসলামকে ঈমাম মানা শুরু করছিলো। তারা দলে - দলে, কাতারে - কাতারে মুফাসসিল ইসলামকে সাইনবোর্ড ধরে আসিফের মহিউদ্দিনদের কাছে হেদায়েতের বার্তা পৌঁছে দেয়ার দায়িত্ব নিয়েছিলেন। এমনকি আমাদের মতো লিবারেল মানুষজনকে তারা নানাভাবে ক্রিটিক, বিদ্রুপ করে নিজেদের গর্বের মুফাসসিল ইসলামকে সামনে এনে মনে করিয়ে দিতেন তাদের কোটে এখন বাংলাদেশের সর্বশ্রেষ্ঠ জ্ঞানী মুফাসসিল ইসলাম এসে গেছেন।
মিজানুর রহমান আজহারী হুজুরকে লন্ডনে ব্যান করা হয়েছে কারণ তিনি ভিন্নধর্ম এবং অবিশ্বাসীদের প্রতি ঘৃণা ছড়ান যার ফলশ্রুতিতে তার অনুসারীরা অনলাইনে সাম্প্রদায়িকতা ছড়ায় এবং নাস্তিক কতলের প্রকাশ্য ঘোষণা দেয়। এই অভিযোগ বেশিরভাগ - ই সত্য এবং প্রমাণিত।
মিজানুর হুজুর কিছুদিন আগেও বলেছিলেন তালেবামদের সাথে ইসলামের কোন সম্পর্ক নেই। আবার তিনি ই তালেবামের আফগানিস্তান দখলকে দেখছেন ইসলামের বিজয় হিসেবে। গত কয়েকদিন আগে দেশে ঘটে যাওয়া সাম্প্রদায়িক সহিংসতা নিয়ে তিনি এক ধরনের বায়বীয় বক্তব্য দিয়ে একদিকে সাম্প্রদায়িকতাকে উচকে দিয়েছেন অন্যদিকে হালকা করে তেনার মুরিদানদের একটু বকে দিলেন। সে বকাটা ছিলো অনেকটা উৎসাহের, নিবৃত্ত করার নয়। এইভাবে এই হুজুর প্রায় প্রতিটি বিষয়ে পাবলিক পারসেপশনকে মাথায় রেখে বারবার পল্টি খান এবং এইসব এদেশের নব্বই শতাংশ মোডারেট ইসলামপন্থীদের চরিত্রে গেঁথে যায় এবং তারাও সেভাবে বেড়ে ওঠে।
মুফাসসিল ইসলাম লন্ডনে থাকেন। তিনি নতুনভাবে ইসলামের ছায়াতলে প্রবেশের পরও রয়ে গেছেন অবিশ্বাসীদের মতো যুক্তিবাদী, চিন্তাশীল এবং আধুনিকমনা। যতোটুকু জানি মুফাসসিল ইসলাম সাম্প্রদায়িকতা বিরোধী এবং বিজ্ঞানে বিশ্বাসী একজন বিশ্বাসী মুসলমান।
স্বভাবতই "সাম্প্রদায়িক মিজানুর রহমান আজহারী" র সাথে উনার তাত্ত্বিক এবং আধাত্মিক দ্বন্দ্ব থাকবে। যেহেতু মুফাসসিল পাবলিক পারসেপশনের ধার ধারেন না সেহেতু তিনি "মোডারেট ইসলামপন্থীদের" সম্পূর্ণ বিরুদ্ধে গিয়ে মিজানুর হুজুরকে জায়গামতো নিজের ইন্টিলেজেন্স এক্টিভিটি দিয়ে আটকিয়ে দিয়েছেন। এটা উনার গভীর প্রজ্ঞা, অসাধারণ কূটনৈতিক দক্ষতা। এ বিষয়ে উনার বিরোধীতা করা অমূলক এবং অহেতুক।
কিন্তু সমস্যা হলো এতোদিন যেইসব মোডারেটগণ মুফাসসিলকে তাদের "একাডেমিক পীর" এবং মিজানুর হুজুরকে তাদের "মার্কেটিয়ার" ধরে নিজেদের সাম্প্রদায়িকতার মার্কেট বড়ো করেছেন তাদের এখন কী হবে --- যখন দুই পীরের মধ্যে আদর্শিক ক্যাচাল লেগেই গেছে!
এই মোডারেটদের নিয়ে আমার বরাবরই করুণা হয় কারণ এরা মূলত ধর্মের চাইতে ধর্মের মার্কেটিং এবং খোদাভীরুতার চাইতে খোদাকে নিয়ে রাজনীতি করতে গিয়ে বারবার পিছিয়ে যায় কিন্তু দিনশেষে দাবী করে তারা জয়ী, তারা অদম্য!
Post a Comment
যুক্তি সংগত কথা বলুন.................