'ছদ্মনামে' লেখালেখি কি দোষের? সাহস থাকলে নিজের নাম ও পরিচয় দেখিয়ে লেখ! এরকম হুমকি চ্যালেঞ্জ আমার অনলাইন লেখালেখির জীবনে আজ অব্দি পেয়ে আসছি এবং পেতে থাকব। নানা কারণে লেখকরা ছদ্মনামে লেখেন। এখানে ইংরেজি ‘পেন নেম’ এর বাংলা হিসেবে ছদ্মনাম কিছুতে যায় না। পেন নেম মানে ‘লেখক নাম’। সিনেমায় যেমন অভিনেতা অভিনেত্রীদের নাম বদলে দেয়া হয়। অনেক নামই আসলে একজন আর্টিস্টের সঙ্গে যায় না। যে কারণে অরুণ চ্যাটার্জি হয়েছিলেন ‘উত্তম কুমার’। ইউসুফ খান হয়েছিলেন ‘দিলিপ কুমার’। তেমন করে অনেক লেখক নিজের নামটি লেখক হিসেবেই বদলে নিয়েছেন। আবার সরকারের রোষের ভয়ে, সম্প্রদায়ের রোষের ভয়ে ভিন্ননামে লিখেছেন। সেগুলিকেই বোধহয় “ছদ্মনাম” বলা চলে। তবে আমি কিছুতে স্বীকার করি না আমি ছদ্মনামে লিখি। আমি বরং যে সামাজিক জীবন যাপন করি সেটাই আমার ছদ্ম পরিচয়। আমি “সুষুপ্ত পাঠক” ছাড়া ভিন্ন যে সামাজিক নামে পরিচিত সে একজন নকল মানুষ! আমি নিজেকে কখনো কখনো ‘এনোনিমাস ব্লগার’ বলেছি। কখনো ‘আউটসাইডার’। কখনো ‘জীবনানন্দের মত লোকচক্ষুর আড়ালে থাকতে ভালোবাসা মানুষ’ হিসেবে বলেছি। আসলে এর সবগুলি আমার মধ্যে আছে। যদি আমি এমন সমাজে বাস করে লেখালেখি শুরু করতাম যেখানে লেখার জন্য কেউ বিপদগ্রস্ত হবে না- তবুও আমি আমাকে গোপন করে রাখতাম। আড়ালেই আমার স্বস্তি।... আসুন বাংলা সাহিত্যের বিখ্যাত কিছু “ছদ্মনাম” "পেন নেম” “এনোনিমাস লেখক”দের তালিকা দেখি।
“ভানুসিংহ” রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
“কমলাকান্ত” বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
“কালকূট” সমরেশ বসু
“ওমর খৈয়াম” সৈয়দ মুজতবা আলি
“মানিক বন্দোপাধ্যায়” প্রবোধ বন্দোপাধ্যায়
“শওকত ওসমান” শেখ আজিজুর রহমান
“হুমায়ুন আজাদ” হুমায়ূন কবীর
“গাছপাথর” সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী
“জরাসন্ধ” চারুচন্দ্র চক্রবর্তী
“কালপেঁচা” বিনয় ঘোষ
“অবধূত” দুলাল মুখোপাধ্যায়
“নিরপেক্ষ” অমিতাভ চৌধুরী
“নীললোহিত” সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
“বীরবল” প্রমথ চৌধুরী
“প্র.না.বি.” প্রমথনাথ বিশী
“যাযাবর” বিনয় মুখোপাধ্যায়
“বেদুইন” দেবেশ রায়
“হুতুম পেঁচা” কালীপ্রসন্ন সিংহ
“টেকচাঁদ” ঠাকুর প্যারীচাঁদ মিত্র
“পরশুরাম” রাজশেখর বসু
“বানভট্ট” নীহাররঞ্জন গুপ্ত
“রূপদর্শী” গৌরকিশোর ঘোষ
“সুপান্থ” সুবোধ ঘোষ
“বিকর্ণ” নারায়ন সান্যাল
“প্রবুদ্ধ” প্রবোধ চন্দ্র বসু
“শংকর” মণিশংকর মুখোপাধ্যায়
“শ্রীভট্ট” দীনেশ গঙ্গোপাধ্যায়
“বনফুল” বলাই চাঁদ মুখোপাধ্যায়
“সুনন্দ” নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়
“অনিলা দেবী” শরৎ চন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
“অমিয়া দেবী” অমৃতলাল বন্দোপাধ্যায়
“ত্রিলোচন” কলমচী আনন্দ বাগচী
“নবকুমার কবিরত্ন” সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত
“সত্য সুন্দর” মোহিত লাল মজুমদার
“নীহারিকা দেবী” অচিন্তকুমার সেনগুপ্ত
“দৃষ্টিহীন” মধুসূদন মজুমদার
“অপরাজিতা দেবী” রাধারানী দেবী
-সুষুপ্ত পাঠক
Post a Comment
যুক্তি সংগত কথা বলুন.................