আজ সন্ধ্যায় বসে যখন এই লেখাটা লিখছি তার কিচ্ছুক্ষন পরে বাংলার আকাশে কোজাগরী পুর্নিমার পুর্ন চাঁদ দেখা দেবে।আজ কোজাগরী লক্ষী পুজা, ১৯৪৬ সালের ঠিক এমনই এক রাত্রিতে নোয়াখালির আকাশ বাতাস প্রকম্পিত হয়েছিল "আল্লা হু আকবর "ধ্বনিতে!!! হাজার হাজার মুসলিম আল্লার নামে ধ্বনি দিয়ে শুরু করেছিল হিন্দু নিধন!!! হাজার হাজার হিন্দু নারী ধর্ষিতা হয়েছিলেন।সেই দিনের নোয়াখালীর সেই বিভৎস নারকীয় ঘটনার কথা আজ প্রতিটি হিন্দু সনাতনিই জানেন তাই বিস্তৃত বিবরনে যাচ্ছি না।এই বছর একই দিনে হজরত মোহাম্মদের জন্ম দিবস ( নবি দিবস) পালন করছেন ইসলামিরা!!! অনেকেই বলবেন নোয়াখালীতে হিন্দু নিধনের সাথে হজরত মোহাম্মদের প্রসংগ কেন তুলছি!কেন? তার উত্তর না দিলেও সম্মানীয় বন্ধুদের অনুমানে সমস্যা হওয়ার কথা নয়। অনেকেই বলছেন সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির সুললিত কথা, বিশেষ করে বাংলাদেশে বর্তমানে হিন্দুরা যেভাবে হিংসার বলি হচ্ছেন তার প্রেক্ষিতে। কিন্তু হিন্দু মুসলমানের মধ্যে কোন দিন সম্প্রীতি সম্ভব নয়, যেমন নর্থ এন্ড সাউথ পোলকে এক বিন্দুতে আনা সম্ভব নয়।এবার বলি কেন সম্ভব নয়।
"মোরা একই বৃন্তে দুটি কুসুম হিন্দু মুসলমান।"
বাংলা ভাষায় এই নজরুলগীতি শুনতে তো বেশ! কিন্তু কেন আজ ওপার বাংলায় হিন্দু-সনাতনিরা আক্রান্ত হচ্ছেন? কেন দুই বাংলাতে কোন দিন হিন্দু-মুসলিমের সখ্যতা গড়ে উঠতে পারে নি?? আসুন স্বল্প পরিসরে উত্তর খোজার প্রয়াসি হই।
কাজী নজরুল ইসলাম ধর্মে ছিলেন ইসলামি।তার রচিত " আমার কালো মেয়ের পায়ের তলায় দেখে যা তোর আলোর নাচন' ' এর মত বহু শ্যামাসংগীত বাঙালি জানেন তবে তার রচিত ইসলামি গীতি সম্পর্কে ধারনা খুব কম লোকেরই আছে।আজ প্রতিটি মানুষের মুখেই শুনি
"মোরা একই বৃন্তে দুটি কুসুম হিন্দু মুসলমান।"
কিন্তু তারা কি জানেন ইসলাম মুসলিমদেরকে অমুসলিমদের সাথে বন্ধুত্বের অনুমোদন দেয় না। ইসলামে অমুসলিমদের সাথে বন্ধুত্ব বা আন্তরিক সম্পর্ক রাখা হারাম( নিষিদ্ধ) । কোরানের বহু আয়াতে খুব স্পষ্টভাবেই, অমুসলিমদেরকে বন্ধুরূপে গ্রহণ করতে নিষেধ করা হয়েছে। একজন অমুসলিম যতই ভালো মানুষ হয়ে থাকুক না কেনো, যতই ভালোবাসুক না কেনো,যতই উপকার করুক না কেনো,যদি অমুসলিম হয়ে থাকেন তাকে বন্ধু মনে করতে পারবেন না মুসলিমরা।এমন কি যদি নিজের বাবা-মা অমুসলিম হন তাদের সাথেও সুসম্পর্ক বজায় রাখা যাবে না। কোন অমুসলিমের প্রতি কোন মুসলিমের মনে কোনো ভালোবাসা থাকতে পারবে না, তাকে শত্রু হিসেবেই দেখতে হবে। কুরআনের বেশকিছু আয়াতে মুসলিমদেরকে মুসলিম ব্যতিত কাউকে বন্ধুরূপে গ্রহন করতে নিষেধ করা হয়েছে। আসুন স্বল্প পরিসরে এমন কিছু আয়াত জেনে রাখা যাক।
১) সূরা আল-ইমরান: আয়াত ২৮(৩ঃ ২৮)
Bengali – translated by Bayaan Foundation
মুমিনরা ( মুসলিমরা)যেন মুমিনদের ছাড়া কাফিরদেরকে( অমুসলিম) বন্ধু না বানায়। আর যে কেউ এরূপ করবে, আল্লাহর সাথে তার কোন সম্পর্ক নেই। তবে যদি তাদের পক্ষ থেকে তোমাদের কোন ভয়ের আশঙ্কা থাকে। আর আল্লাহ তোমাদেরকে তাঁর নিজের ব্যাপারে সতর্ক করছেন এবং আল্লাহর নিকটই প্রত্যাবর্তন।
২) সূরা আলে-ইমরান: আয়াত ১১৮( ৩ঃ ১১৮)
Bengali – translated by Bayaan Foundation
হে মুমিনগণ, তোমরা তোমাদের ছাড়া অন্য কাউকে অন্তরঙ্গ বন্ধুরূপে গ্রহণ করো না। তারা তোমাদের সর্বনাশ করতে ত্রুটি করবে না। তারা তোমাদের মারাত্মক ক্ষতি কামনা করে। তাদের মুখ থেকে তো শত্রুতা প্রকাশ পেয়ে গিয়েছে। আর তাদের অন্তরসমূহ যা গোপন করে তা অধিক ভয়াবহ। অবশ্যই আমি তোমাদের জন্য আয়াতসমূহ স্পষ্ট বর্ণনা করেছি। যদি তোমরা উপলব্ধি করতে।
৩) সূরা আন-নিসা: আয়াত ১৪৪
Bengali – Bayaan Foundation
হে মুমিনগণ, তোমরা মুমিনগণ ছাড়া কাফিরদেরকে বন্ধুরূপে গ্রহণ করো না। তোমরা কি আল্লাহর জন্য তোমাদের বিপক্ষে কোন স্পষ্ট দলীল সাব্যস্ত করতে চাও?
৪) আয়াত ৯ঃ২৩
Bengali – Bayaan Foundation
হে ঈমানদারগণ, তোমরা নিজদের পিতা ও ভাইদেরকে বন্ধুরূপে গ্রহণ করো না, যদি তারা ঈমান অপেক্ষা কুফরীকে প্রিয় মনে করে। তোমাদের মধ্য থেকে যারা তাদেরকে বন্ধুরূপে গ্রহণ করে তারাই যালিম।
এই আয়াতটি অত্যন্ত স্পর্শ কাতর কোরানের এই আয়ত বলছে, নিজের আপন বাবা ভাই যদি ইসলামে বিশ্বাসী নাহয়, তাহলে তাদের সাথেও বন্ধুত্ব বা আন্তরিক সম্পর্ক রাখা যাবে না।
এই ধরনের অসংখ্য আয়াত আছে,বন্ধুদের ধৈর্যের কথা ভেবে সেই তালিকা দীর্ঘ না করে আর মাত্র কয়েকটা আয়াতের উল্লেখ করছিঃ-
* সুরা নিসা ৪:১৩৯ = যারা মুসলমানদের বর্জন করে কাফেরদেরকে নিজেদের বন্ধু বানিয়ে নেয় এবং তাদেরই কাছে সম্মান প্রত্যাশা করে, অথচ যাবতীয় সম্মান শুধুমাত্র আল্লাহরই জন্য।
* সুরা নিসা ৪:১৪৪ = হে ঈমানদারগণ! তোমরা কাফেরদেরকে বন্ধু বানিও না মুসলমানদের বাদ দিয়ে। তোমরা কি এমনটি করে নিজের উপর আল্লাহর প্রকাশ্য দলীল কায়েম করে দেবে?
* সুরা মুমতাহিনা ৬০:১৩ = মুমিনগণ, আল্লাহ যে জাতির প্রতি রুষ্ট, তোমরা তাদের সাথে বন্ধুত্ব করো না। তারা পরকাল সম্পর্কে নিরাশ হয়ে গেছে যেমন কবরস্থ কাফেররা নিরাশ হয়ে গেছে।
যে ধর্ম তার অনুসারীদের নির্দেশ দেয় অমুসলিমদের সাথে বন্ধুত্ব না করতে সেই ধর্মাবলম্বিদের সাথে হিন্দু সনাতনি সহ বিশ্বের সকল ধর্মের অনুসারীদের বন্ধুত্বপূর্ণ, সৌহার্দ্যপুর্ন সম্পর্কে গড়ে যে উঠবে না তা বলা বাহুল্য।তাই একই বৃন্তে দুটি কুসুম হিন্দু মুসলমান গান কার্যত অবাস্তবের স্তাবকতা করা।
এবার একটু দেখে নেওয়া যাক মুশরিকদের ( মুর্তি উপাসক বা প্যাগান) প্রতি কোরানে কি নির্দেশ আছে।
আয়াত (৯ঃ ৫)
"অত:পর নিষিদ্ধ মাস অতিবাহিত হলে মুশরিকদের হত্যা কর যেখানে তাদের পাও, তাদের বন্দী কর এবং অবরোধ কর| আর প্রত্যেক ঘাঁটিতে তাদের সন্ধানে ওৎ পেতে বসে থাক| কিন্তু যদি তারা তওবা করে, নামাজ কায়েম করে, যাকাত প্রদান করে, তবে তাদের পথ ছেড়ে দাও| নিশ্চয় আল্লাহ্ অতি ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু| ৯-৫"
মুশরিকদের হত্যার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে কোরানের এই আয়াতে।মুশরিক শব্দের অর্থ--"মুর্তি পুজক বা প্যাগান"।হিন্দু-সনাতনিরা মুর্তি উপাসক। কি বুঝলেন বন্ধুরা!!!!!!!ইমানদার মুসলিমের কি আচরন হতে পারে অমুসলিমদের প্রতি!!
সনাতনি বন্ধুরা ভালো থাকুন, সংগে থাকুন।
হর হর মহাদেব! জয় শ্রীরাম।
★ Written by
G.C Mandal, Vice-President
Singha Bahini ( apolitical Hindu social organisation)
Post a Comment
যুক্তি সংগত কথা বলুন.................