বলিউডের শ্রোতানন্দিত গায়ক কে কে মৃত্যুর পর আমি ভারতীয় ইংরেজি বাংলা সমস্ত নিউজ সাইটের কমেন্ট সেকশনে গভীর মনোযোগের সহিত কমেন্টগুলি পড়তে শুরু করি। আমাকে বাংলাদেশের “পগোতিশীল উদার মুসলমানরা” বলেছে ভারতের হিন্দুরা উগ্র হিন্দুত্ববাদী হয়ে গেছে। হিন্দুরা সাম্প্রদায়িক ধর্মান্ধ সেই তুলনায় বাংলাদেশের মুসলমানরা উদার অসাম্প্রদায়িক...। সেই কারণে আমি আশা করেছিলাম কেকে মৃত্যুর পর কমেন্টে দেখতে পাবো সবাই গায়কের পরকাল নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়বে! আমি আশা করেছিলাম হিন্দুরা বলবে, ‘এখন বুঝবি একাদশী না করার ফল’!...’সময় থাকতে ভগবানের জপতপ করলি না এখন নরকের আগুনে জ্বলে মরবি’...
না হলো না, মিলাতেই পারছি না আইয়ুব বাচ্চুর মত লিজেন্ড গায়ক মারা যাবার পর যেখানে বাংলাদেশের মুসলমানরা তার পরকাল নিয়ে হামলে পড়ে যে খিস্তি দিয়েছিলো। তার গিটার বাজানো দুই হাতে কিভাবে আল্লা আগুনের মালা পরিয়ে দিবে, কিভাবে তার গলায় তরল আগুন ঢেলে দিবে গান গাওয়ার অপরাধে...পুরো ৯০ দশককে মাত করে রাখা একজন রক সংগীতের লিজেন্ডকে এভাবে মৃত্যুর পর অপমানিত হতে হলো ধর্মীয় কারণে তার নিজের দেশে- তবু নাকি হিন্দুরা সব সাম্প্রদায়িক ধর্মান্ধ উগ্র!
পৃথিবীতে গায়ক গায়িকা অভিনেতা অভিনেত্রীদের অকাল মৃত্যু হলে ফ্যানদের শোকাতুর হতে দেখাটা খুবই স্বাভাবিক। কিন্তু একটি বিশেষ সম্প্রদায় ছাড়া! গান অভিনয় বাদ্য নিষিদ্ধ এই ধর্মে। এগুলো যারা চর্চা করে তারা সব পাপী! যারা অন্যের জমি দখল করে, হত্যা করে, দুর্নীতি করে তাদের পরকাল নিয়ে এরা কথা বলে না কিন্তু গান করছে শুনলে এদের ঈমানদ্বন্ড খাড়া হয়ে যায়! খ্রিস্টান বৌদ্ধ ইহুদী হিন্দু কারোরই গান বাজনা অভিনয় শিল্পকলার কোন কিছু নিয়ে সমস্যা নেই শুধু ‘শান্তিবাহিনীর’ এগজিমার চুলকানি! কেকে মুসলমান হলে এতক্ষণে তার মৃত্যুর নিউজের কমেন্ট সেকশন ভরে উঠত বাংলাদেশী মুসলমানদের ঘৃণা বিদ্রুপ পরকালের শাস্তি অভিশাপে।
#সুষুপ্তপাঠক
1 June 2022
Post a Comment
যুক্তি সংগত কথা বলুন.................