বাংলাদেশের শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনিকে কিছু কথা স্মরণ করিয়ে দিতে চাই।

বাংলাদেশের শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনিকে কিছু কথা স্মরণ করিয়ে দিতে চাই।
✍️✍️✍️✍️✍️✍️✍️✍️✍️✍️✍️✍️✍️

মাননীয়া দীপুমনিঃ

আপনি কি জানেন বাংলাদেশে ধর্মীয় সংখ্যালঘু বলে একটা প্রজাতি এখনো রয়েছে যারা বাংলাদেশের নাগরিক।যাদের প্রতিনিয়ত কত ধরনের নির্যাতন সহ্য করতে হয়?অথচ না জানার ভান করে ভারতে গিয়ে বলে এসেছেন সেদেশের সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য।এই কথার পর ভারত কোন প্রতিক্রিয়া দেয়নি কিন্তু সেদেশের হিন্দুরা কিন্তু গর্জে উঠে আপনাকে ধিক্কার জানিয়েছে।এই ধিক্কার যে একটা সময় আপনাদের মাথাব্যথার কারন হবে এটাই স্মরণ করিয়ে দিতে চাই।

বাংলাদেশে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের উপর যখন  নির্যাতন নিপীড়ন হত্যা ধর্ষন,জোর করে ধর্মান্তকরন,জায়গা জমি দখল,দেশত্যাগে বাধ্য করা,ধর্মানুভুতিতে আঘাতের অভিযোগে ৭১ সালের ন্যায় গ্রামের পর গ্রাম লুটতরাজ অগ্নিসংযোগ,মূর্তি ভাঙা, মন্দির উপাসনালয় ভাঙচুর,  শ্লীলতাহানি এবং ধর্মানুভুতির মিথ্যা অভিযোগে স্কুল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের গ্রেফতার ডিজিটাল আইনে মামলা,ইউনিভার্সিটির শিক্ষকদের হত্যার হুমকি,২০২৫ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে হিন্দুশূন্য করার টার্গেট দেয়ার মতো ঔদ্ধত্যপূর্ন হুমকি এমন এক পর্যায়ে গিয়ে উপনিত হয়েছে যেখানে মনে হবে দেশটি পাকিস্তানের একটি উপনিবেশ।

কিন্তু সবচেয়ে আশ্চর্যের বিষয় এসব বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারের কোন মাথা ব্যাথা নেই।কারন আজ পর্যন্ত বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতন বাড়িঘর জায়গা-জমি দখল ধর্মান্তকরন এবং বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগে কোন বিচার হয়নি।সরকারি আনুকুল্যে দেশটিতে মৌলবাদ এমন ভাবে শিকড় গেড়ে বসেছে যেখানে ভিন্ন ধর্মাবলম্বী বা মুক্তবুদ্ধি চর্চার কোন সুযোগ নেই।স্বাধীনতার পর থেকে আজ পর্যন্ত প্রায় ৩কোটি সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের লোক দেশ ছাড়তে বাধ্য হয়েছে যা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আবুল বারাকাত সাহেবের গবেষণা রিপোর্টে উঠে এসেছে।আরো আশ্চর্যের বিষয় ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের এই অবর্ননীয় দুরবস্থার প্রতিবাদে বাংলাদেশের কোন রাজনৈতিক দল এগিয়ে আসে না প্রতিবাদ করে না।এক কথায় হিন্দুদের জায়গা-জমি দখল,এবং দেশত্যাগে বাধ্য করার প্রশ্নে কোন রাজনৈতিক দলের মধ্যে কোন মতবিরোধ নেই বরং হিন্দু সম্পত্তি দখলে তাদের মধ্যে প্রতিযোগিতা রয়েছে।পরিসংখ্যান এমন এক উদাহরণ সৃষ্টি করেছে যেখানে হিন্দু সম্পত্তি দখলে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সর্বাগ্রে তারপর বিএনপি জাতীয়পার্টি এবং জামাতের স্থান।ফলে সদিচ্ছার অভাবে আইন থাকলেও তার প্রয়োগ নেই।কারন প্রশাসন চলে হিন্দু বিদ্বেষের এক অলিখিত নির্দেশে। 

হিন্দুদের সহনশীলতাকে দুর্বলতা ভাববেন না।এই সহনশীলতার জন্যই ভারত এখন সারা বিশ্বের নজর কেড়েছে আর বাংলাদেশ বহুক্ষেত্রে আমেরিকার সহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থায় নিষিদ্ধ এবং নজরধারীতে রয়েছে।গত দুর্গাপূজার সময় যেভাবে বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের উপর নির্যাতন নিপীড়ন নেমে এসেছিল তার প্রতিকারে বাংলাদেশ সরকার কোন আইনগত ব্যবস্থা নিতে পারেনি।আর যেই দেশে গিয়ে আপনি সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তার কথা বলে এসেছেন সেই দেশে একটি অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনাও বিচার বিভাগীয় তদন্ত থেকে বাদ পড়েনি।সুতরাং নিজ দেশ সম্পর্কে সচেতন না হয়ে অপরকে দায়িত্বের কথা স্মরণ করানো লজ্জার।পরিশেষে বলি সৎ প্রতিবেশীসুলভ মনোভাব সৃষ্টিতে মনোনিবেশ করুন নইলে একদিন বাংলাদেশ ও ভারতের নিষিদ্ধের তালিকায় নাম উঠে আসতে পারে।

0/Post a Comment/Comments

যুক্তি সংগত কথা বলুন.................

Stay Conneted