এরপর গোঁফহীন দাড়ি আর টাকনুর উপর পায়জামা টুপি পরে যদি কেউ হিন্দু বৌদ্ধ ইহুদী খ্রিস্টানের দোকানে নির্জনে ক্রেতা হিসেবে আসে তখন যদি সেই অমুসলিম দোকানদার এই লেবাস ছুরত দেখে মনে মনে ভীত হয়, হামলার শংকা করে, কুমতলবের সন্দেহ করে তাহলে তার দায় কার? আপনি হিন্দু হোন বা মুসলমান, ইহুদী কি খ্রিস্টান যদি নিশুতি রাতে হঠাত অনেক মানুষের কন্ঠে ‘আল্লা আকবর’ শুনে জেগে উঠেন আপনার প্রথম যে কথাটি স্মরণ হবে কোন উন্মত্ত জনতা ফুঁসে উঠেছে কিনা? ‘আল্লা আকবর’ শুনে অমুসলিমদের মধ্যে ভয়ের অনুভূতি জাগ্রত হয়। কোন ‘আল্লাঅলা’ লোককে যদি আপনি সমকামিদের র্যালির সামনে ঘুরতে দেখেন, সুন্নতী লেবাসের কোন লোককে দেখেন সিনেমা হল, বার, পার্লারের সামনে ঘুরঘুর করতে তাহলে যে কেউ শংকা প্রকাশ করবে ভয়ের? কিন্তু কোন সন্ন্যাসী বা ভিক্ষুকে যদি দেখেন এসব জায়গায় তাহলে আপনি কৌতুককর মনে করবেন। হিন্দুদের শত শত বাবাজীর বক্তব্য পাবেন নারী ও ছোট জাতের হিন্দুদের নিয়ে বর্ণবাদী মন্তব্য করছে। কিন্তু মন্দির আশ্রম থেকে তারা কখনোই কারোর গলা কাটার কথা বলে না। বলে না অমুকদের বিরুদ্ধে বিজয়ী হয়ে তাদেরকে দাস বানানো হবে। হুজুরদের চেহারা ছুরতে একটা ভয়ংকর ভাব থাকে। ধ্যানস্থ তাপসের মত মুখে কোন উদাসিন বৈরাগ্য আপনি পাবেন না। প্রচুর পরিমাণে মাংস খেয়ে খেয়ে চোখে মুখে একটা কামুকতার জেল্লা ঠিকরে পরে। তাদের দেখে কোন ভক্তি আসে না। এই যে সত্য কথাগুলি বললাম এটাকেই পশ্চিমা বামরা নাম দিয়েছে ‘ইসলামোফোবিয়া’ অথবা ‘মুসলিমফোবিয়া’!
রাজস্থানের যে দর্জিকে নূপুর শর্মাকে সমর্থন করায় মোহাম্মদ রিজওয়ান ও মোহাম্মদ শরিফ নামের দুইজন সুন্নতী লেবাস সুরতের মুমিন হত্যা করেছে তাদের আইডোলজি, তাদের হত্যার পিছনে যে ঐশ্বী নির্দেশনা সেসব নিয়ে কোন কথা বলাটাই হচ্ছে ‘ইসলামোফোবিয়া’! মানে আপনি ইসলামকে অহেতুক দৈত্য হিসেবে উপস্থাপন করছেন। এগুলি ছড়িয়ে আপনি নিরহ মুসলমানদের অন্যের কাছে খারাপ করে তুলছেন। কিছুতেই মূলে হাত দিতে দিবে না। যে দর্জিকে খুন করা হয়েছে তার সঙ্গে খুনিদের কোন ব্যক্তিগত শত্রুতা ছিলো না। ইউরোপে ভীরে লরি উঠিয়ে আল্লা আকবর বলে যে পশ্চিমা সাধারণ জনগণের উপর প্রতিশোধ নেয় সেই প্রতিশোধ হচ্ছে ‘মুসলিম উম্মাহর’ প্রতিশোধ। এটা সেই জিহাদ যা কোন একজন মুসলমানের আদায় করে নিলেই বাকীদের উসুল হয়ে যায়। এই ঠান্ডা মাথায় খুন, সম্পত্তি ব্যক্তিগত রেষারেষি ছাড়াই নৃসংশ ক্রোধে সম্পূর্ণ অচেনা একজনকে খুন করতে প্ররোচিত করে যে আইডোলজি তাকে চিহ্নিত করতে গেলেই একটা শ্রেণী আপনাকে ‘ইসলামোফোবিয়া’ বলে শোরগোল তুলে দিবে। ভারতে এদের শক্ত ঘাঁটি বুদ্ধিজীবী মহলে। দুর্ভাগ্যজনকভাবে ভারতে প্রগতিশীল শিবির ভ্রান্ত ‘ইসলামোফোবিয়া’-তে বিশ্বাস করে। আপনি তাদের কাছে গজওয়াতুল হিন্দে বিশ্বাসী মুসলমানদের বিষয়ে কথা বললে দেখবেন আপনাকে মুসলিম বিরোধী হিসেবে তারা টিট করছে!
সামান্য একটি বক্তব্যের প্রতিক্রিয়া দেখুন। প্রফেট মুহাম্মদ আয়েশাকে ছয় বছর বয়সে বিয়ে করে নয় বছর বয়সে তার সঙ্গে বাসর করেছেন। এটি হাদিসে স্পষ্ট করে লেখা আছে সেটিই নূপুর শর্মা বলেছেন, এভাবে বলেছেন যদি আমি এখন বলি মুহাম্মদ আয়েশাকে ছয় বছর বয়সে বিয়ে করেছেন... তখন কি হবে,... নূপুর শর্মা হিন্দুদের শিবলিঙ্গ নিয়ে ট্রলের জবাবে তুলনা করে বুঝাতে চাচ্ছেন ধর্মানুভূতিতে আঘাত তো কারোর একার নয়। এই আসল ঘটনা, সেটি কিন্তু কেউ শুনতে রাজি নয়। যেহেতু হিন্দুত্ববাদী বিজেপির কেউ এটা বলেছে তাই রাজনৈতিক কারণে ভারতের বিরোধী দলগুলি এটাকে ইস্যু করেছে। কিন্তু এটা তো রাজনৈতিক বিষয় দিয়ে সমাধান করা যাবে না। নূপুর শর্মার বক্তব্যের পর বাংলাদেশের হিন্দুদের নাজেহাল হতে হয়েছে। ভারতে খুন হলো। স্বয়ং নূপুর শর্মা রেপ ও তার পরিবারকে হত্যার করার থ্রেট পেতে হয়েছে। এসব থ্রেট যে ফাঁকা বুলি নয় সেটি দর্জি খুনের ঘটনায় আশা করি কেউ দ্বিমত করবে না। ভারত সরকারের ভূমিকা এখানে খুবই বিতর্কিত। কেন তারা মোহাম্মদ জুবায়েরকে গ্রেফতার করছে না? বিদেশে থাকলে তাকে সন্ত্রাস উশকে দেয়ার অভিযোগে আন্তর্জাতিক রেড এলার্ট জারি করতে পারত। নূপুর শর্মাকে রেপ থ্রেট দেয়া লোকগুলিকে চিহ্নিত করল না কেন? আরবদের সঙ্গে ব্যবসাপাতি জারি রাখতেই ইস্যুটিকে আর বাড়াতে চায়নি সম্ভবত। কিন্তু ঘটনা তো থেমে যাবে না। কারণ ঘটনা থেমে যাবার জন্য ঘটনানো হয়নি। মোহাম্মদ জুবায়ের এডিংটিং ভিডিও আপলোড করেছিলেন ঘটনা থেমে যেতে নয়। আগুন লাগাতে। অথচ দেখুন, আফগানরা বুদ্ধ মূর্তিগুলি কামান দাগিয়ে ধ্বংস করার পর বৌদ্ধ অধ্যুষিত কোন দেশে কোন প্রতিক্রিয়া দেখেছেন? পাকিস্তানে গুরুদুয়ার, মন্দির গির্জাতে হামলার পর কোন প্রতিক্রিয়া হতে দেখেন? কোথাও আপনি মুসলিমদের বিরুদ্ধে ‘হিন্দুফোবিয়া’ খ্রিস্টানফোবিয়া’ ‘ইহুদীফোবিয়া’ ‘বৌদ্ধফোবিয়া’ উঠতে দেখেছেন? আমি হতাশ এই কারণে যে মুসলিমদের এই আচরণ থেকে সারা বিশ্বে একটি সাম্প্রদায়িক ও জাতিগত জাতীয়তাবাদ মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে। তারা ইসলাম থেকেই শিক্ষা নিতে চাচ্ছে। একই রকম প্রতিক্রিয়া দেখানোকেই টিকে থাকা মনে করতে পারে। সভ্যতা তো তখন পিছিয়ে গেলো।...
-সুষুপ্ত পাঠক
#সুষুপ্তপাঠক
29 June 2022
Post a Comment
যুক্তি সংগত কথা বলুন.................