ধরে নিলাম এদেশের হিন্দুরা বাংলাদেশকে নিজের দেশ মনে করতে পারে না তাই তারা আনন্দে, স্বাদে, আহ্লাদে দেশত্যাগ করে ভারত চলে যায়। কিন্তু দুনিয়ার সব মুসলিম দেশেই কেনো অমুসলিম জনসংখ্যা কমে সেটার উত্তর কী; তারাও কী সবাই ভারত চলে আসে?
পাকিস্তানে হিন্দু - বৌদ্ধ নেই বললেই চলে। আফগানিস্তান শতভাগ মুসলমানের দেশ অথচ একসময় সেখানে একটি বড়ো সংখ্যক বৌদ্ধ জনগোষ্ঠীর বাস ছিলো। ইরাক - ইরান - সিরিয়া - লিবিয়া - মিশর - মরক্কো - আলজেরিয়া - নাইজেরিয়া - সুদান - সোমালিয়া থেকে ক্রমাগতভাবে ক্রিশ্চিয়ান কমে গেছে কারণ এইসব দেশগুলোতে অমুসলিমরা ক্রমাগত হুমকি, হেইট স্পীচ ও মারাত্মক রকম শারীরিক আক্রমণের স্বীকার হয়। এর বিপরীতে যুক্তরাষ্ট্র - যুক্তরাজ্য - ফ্রান্স - জার্মানি - ইতালি - স্পেন - পর্তুগাল - সুইডেন - সুইজারল্যান্ড - ডেনমার্ক - এ মুসলমানের সংখ্যা বিস্ময়করভাবে বেড়ে গেছে। এর কিছু কারণ হয়তো মুসলমানদের জন্মহার বেশি কিন্তু বড়ো কারণ ওইসব দেশে সকল ধর্মের মানুষের বসবাসের জন্য নিরাপদ; রাষ্ট্রীয় বৈষম্য কম।
রাষ্ট্র যখন সব ধর্ম, মত ও চিন্তার মানুষকে সমান মর্যাদা দিতে "ধর্মনিরপেক্ষ সংবিধান" প্রণয়ন করে তখন কিন্তু সংখ্যালঘু এবং ভিন্নমতাবলম্বীরা নির্যাতিত হলেও তারা দেশত্যাগ করে না কারণ তারা মানসিক ভাবে শক্তি পায় এই ভেবে দেশটা তো আমারও। কিন্তু রাষ্ট্র যখন সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের "ধর্ম" কে স্বীকৃতি দিয়ে সংবিধান প্রণয়ন করে তখন বাকি সব সম্প্রদায়ের মানুষ রাষ্ট্রের কাছে দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিক হয়ে যায় এবং তারা যে কোন সময় দেশত্যাগ করে।
যেহেতু অধিকাংশ মুসলমান সংখ্যাগরিষ্ঠ রাষ্ট্রগুলোর "রাষ্ট্রধর্ম" থাকে সেহেতু অমুসলিমরা মুসলমান সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশে থাকতে মানসিক শক্তি পায় না তাই দেশত্যাগ করে চলে যায়। কারণ তারা বুঝে নেয় এইদেশ তাদের না!
সুতরাং রাষ্ট্রের ধর্ম থাকা মানেই উক্ত রাষ্ট্রে সংখ্যালঘু কমে যাবে এটা বোঝার জন্য কার্ল মার্ক্সস, হেগেল কিংবা অগাস্ট কোঁৎ'র সমাজবিজ্ঞান অথবা হার্বাট স্পেনসারের নৃবিজ্ঞান পড়তে হয় না।
Post a Comment
যুক্তি সংগত কথা বলুন.................