‘হিন্দ জামাতুল আনসার’ মানে বুঝছেন তো?

কুমিল্লাসহ সারাদেশ থেকে হিযরতের উদ্দেশ্যে ঘরছাড়া পঞ্চাশ তরুণদের নেতা কুমিল্লার কোবা মসজিদের পেশ ইমাম। তার নাম হাবিবুল্লাহ। এই মসজিদে সে নামাজ পড়াতেন। আপনি যেমন আপনার এলাকার মসজিদের ইমামের পিছনে নামাজ পড়েন। কুমিল্লা শহরের কোবা মসজিদেও তেমনি সবাই এই হুজুরের পিছনে নামাজ পড়ত। কেন এভাবে বলছি একটু অপেক্ষা করুন। এই হাবিবুল্লাহ মসজিদে চাকরির পাশাপাশি মাদ্রাসাতেও ক্লাশ নিতো। ২০২০ সাল থেকে ‘জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়া’ (পূর্বাঞ্চলীয় হিন্দের জামাতুল আনসার) সংগঠনটিতে সে যুক্ত হয়। পার্বত্য অঞ্চলের নাইক্ষ্যংছড়িতে সে প্রায় দুই বছর ধরে একটি মাদ্রাসা পরিচালনা করেছে। সে পাহাড়ের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে ছাত্র সংগ্রহ করে তাঁর মাদ্রাসায় রাখত।  এ পর্যন্ত ১৫ থেকে ২০ জন সদস্য সংগ্রহ ও প্রশিক্ষণে পাঠিয়েছে সে। 

‘হিন্দ জামাতুল আনসার’ মানে বুঝছেন তো? মাহদি যখন ইন্ডিয়াতে হামলা করতে যাবে তখন এই ‘আনসার’ মানে সাহায্যকারীরা তার সঙ্গে যোগ দিবে। ইন্ডিয়াতে গিয়ে হিন্দুদের হাত থেকে ক্ষমতা কেড়ে নিয়ে, তাদের নারীদের গণিমতের মাল বানিয়ে, পুরুষদের হত্যা করে মাহদী বাইতুল মোকাদ্দেসের দিকে এগিয়ে আসবে। এমনটাই বুখারী মুসলিম শরীফের হাদিসে বলা হয়েছে। অস্ট্রেলিয়া নিউজিল্যান্ড আমেরিকা মাহদী কি প্রকারে ঘোড়ায় চড়ে যাবে সেকথা কোথাও লেখা নেই অবশ্য! আমার এসব নিয়ে মজা নিতে পারি নিচ্ছিও কিন্তু মাহদী বিশ্বাসে আপনার কচি ছেলেটি একদিন নিরুদ্দেশ হয়ে যাবে সেটি বুঝতে পারছেন তো? ছেলে মসজিদে গিয়ে ওয়াক্তে ওয়াক্তে গিয়ে নামাজ পড়ছে দেখে ভাবছেন যাক, এই যুগের বখাটে ছেলেদের মত আপনার ছেলে হবে না। নেশা করছে না বা সন্ত্রাসী হচ্ছে না। কিন্তু আপনি জানেন না বা মানেন না ভয়ানক এক ধর্ম মাদকে আপনার ছেলে আসক্ত হয়ে পড়েছে। এমন এক ব্যক্তিতে সে আসক্ত বাবা-মার চেয়ে বেশি ভালোবাসতে হবে তাকে, তার জন্য জীবন দিতে পারলে পরকাল ইহকাল সব ফকফকা, তার নির্দেশ অমান্য করলে ইহকাল পরকাল সব বরবাদ- এরকম মাদক একবার গিলে ফেললে সন্তান ঠান্ডা মাথার খুনি হয়ে উঠবে সেটি কিন্তু ভাবতে পারেননি।

হিন্দুর ছেলে অতি ধার্মিক হতে হতে সন্ন্যাসী হয়ে যাবে। বৌদ্ধের ছেলে সংসার ছেড়ে মঠবাসী হয়ে যাবে। খ্রিস্টানের ছেলে যাযক সন্ন্যাসী হয়ে যাবে। কিন্তু মুসলমানের ছেলে অতি ধার্মিক হলে কাফের মেরে খিলাফত প্রতিষ্ঠার জন্য ঘর ছাড়বে! উপরের হাবিবুল্লার মত ইমাম বাংলাদেশে টিনসেড মসজিদ থেকে পাঁচতলা এসি মসজিদ সবখানেই আছে। মাহদী কাফের মারতে আসবে এটা ইসলামী ফাউন্ডেশন থেকে প্রকাশিত হাদিসের বইতেই আছে। কাজেই আপনি যে হুজুরের পিছনে নামাজ পড়ছেন তিনি জঙ্গিবাদে কোন দলের সঙ্গে যুক্ত না হলেও গজওয়াতুল হিন্দে বিশ্বাস না করে যায় না। ‘জঙ্গিরা মাদ্রাসা থেকে আসে না’ ‘আইএস মানে ইজরাইল স্ট্রেট’ এরকম আমরা শুনেছি দেশের বড় বড় মুখগুলি থেকে। জঙ্গিবাদ আমেরিকার সৃষ্টি শুনতে শুনতে কানের পোকাও মরে গেছে! কিন্তু মসজিদ মাদ্রাসা থেকে বের হওয়া হুজুররাই স্কুল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের ধর্মগুরু হিসেবে আবির্ভূত হতে দেখছি। আফগানিস্থান দেশটাই দখল করে নিয়েছে কওমি মাদ্রাসা। বাংলাদেশের কওমি আলীয়া মাদ্রাসাগুলি এখন প্রচলিত রাজনীতির মাধ্যমে দেশটাকে ইসলামী শাসনে নিয়ে যাওয়ার কৌশল ধরে প্যারারালভাবে জেনারেল লাইনের শিক্ষার্থীদের দিয়ে সশস্ত্র জিহাদের ধামাকা দেওয়ার চেষ্টা করছে। এতে দুটি লাভ। একদিকে জঙ্গিবাদে মাদ্রাসার ছাত্রদের দেখা যাবে না। কিন্তু সশস্ত্র জিহাদ জারি রইল। অন্যদিকে চররমোনাই হেফাজত ইসলাম প্রচলিত রাজনীতি ও সামাজিক ইস্যুতে কাজ করে রাজনৈতিক শুন্যস্থান দখল করে ফেলতে পারলে ইসলামী শাসনে এগিয়ে যাওয়া সময়ের ব্যাপার। সেটাই হচ্ছে বাংলাদেশে। তাই আরো বেশি করে বলতে থাকুন- মসজিদ মাদ্রাসায় জঙ্গি হয় না, জঙ্গিবাদের জন্য আমেরিকা দায়ী!...

Written by : সুষুপ্ত পাঠক

#copyrightfree

0/Post a Comment/Comments

যুক্তি সংগত কথা বলুন.................

Stay Conneted