#আল আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রান্ড মুফতি বলেছেন, আফগানিস্থানে তালেবান সরকার নারী শিক্ষা নিষিদ্ধ করাটা ইসলাম বিরুদ্ধ কাজ হয়েছে। ইসলাম নারী পুরুষ উভয়কে জ্ঞান অর্জনের কথা বলে। এরকম বক্তব্য আসবে আশা করেছিলাম। এটাই নিয়ম। একদিকে গাছের গোঁড়া কাটা হবে অন্যদিকে ভালো সাজার জন্য সেই গাছের মাথায় জল ঢালা হবে। একদিকে কাফের মেরে জিহাদ করা হবে অন্যদিকে বলা হবে জিহাদ মানে নিজের সঙ্গে লড়াই করা...। ১৪০০ বছর ধরে এটাই চলে এসেছে। মিশরের আল আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ের মুফতি সাহেব কি তালেবান হাক্কানি আলেমদের চেয়ে ইসলাম বেশি জানেন? দেওবন্ধের হুজুররা কি ভিন্ন ইসলাম বিশ্বাস করেন? মোটেই না। ইসলাম একই রকম মিশর থেকে ভারত সবখানে একই রকম। তড়িকা বিভিন্ন হতে পারে। যেমন তালেবানরা দেওবন্ধি। আবার আল কায়দার মত দল আল আজহারপন্থি। আইএস যেমন সৌদি সালাফিপন্থি। তাদের সকলের নবী একজনই। সকলের কুরআন একটাই। সেই নবী নারীদের সম্পর্কে কি বলেছে সেটা জানা জরুরী। একজন নারী আসলে উচ্চশিক্ষা দূরে থাক স্কুলের শিক্ষাই শেষ করতে পারে কিনা ইসলামী শরীয়া অনুসরণ করে দেখা যাক।
#ইসলামে সব মাহযাবই একমত নারীদের মাহরাম মানতে হবে। প্রথমে ‘মাহরাম’ যারা বুঝেন না তাদের জন্য বলি, মাহরাম হচ্ছে সেই পুরুষদের বুঝায় যাদের সঙ্গে বিয়ে হারাম নারীদের। যেমন আপন বাবা, ভাই, সন্তান। এরাই হচ্ছে একজন সাবালিকা নাবালিক নারীর সমস্ত কিছু সিদ্ধান্ত নেবার মালিক। ইসলাম ধর্ম কোন নারীকে তার জীবন নিয়ে স্বাধীন সিদ্ধান্ত নেবার সুযোগ দেয় না। কোন মুসলিম নারী ইসলামী শরীয়া মতে ৪৮ মাইল (৭৭ কিলোমিটার) থেকে বেশি দূরে যেতে অবশ্যই সঙ্গে একজন ‘মাহরাম’ নিবে। হজরত ইবনে উমর (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, মাহরামকে সঙ্গে না নিয়ে কোনো নারী তিন দিন দূরত্বের পথে সফর করবে না। (সহিহ বুখারি, হাদিস ১০৮৬; সহিহ মুসলিম, হাদিস ১৩৩৮)।
অন্য আরেকটি হাদিস থেকে জানা যায়, হজরত আবু সাঈদ খুদরি (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলে কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে নারী আল্লাহ এবং আখেরাতের প্রতি বিশ্বাস রাখে, তার জন্য নিজের বাবা, ছেলে, স্বামী, ভাই বা অন্য কোনো মাহরামকে সঙ্গে না নিয়ে তিন দিন বা ততোধিক দূরত্বের পথ সফর করা বৈধ নয়। (সহিহ মুসলিম, হাদিস ১৩৪০; সুনানে কুবরা, বাইহাকি ৩/১৩৮)।
#এর মানে হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিকেল, ইঞ্জিনিয়ারিং পড়তে হোস্টেলে কোন মেয়ে কি করে মাসের পর মাস থাকবে মাহরাম ছাড়া? তাছাড়া তাদেরকে কি কোন মাহরাম এসে পড়াবে নাকি? ‘মাহরাম’ ছাড়া যে মুসলিম নারীদের একাকী কোথাও অবস্থান জায়েজ নেই সেটি নিয়ে ইসলামের ৭২ ফিকরার কোন পক্ষই দ্বিমত প্রকাশ করে না। কাজেই যেসব বোরখা পড়ুয়া ছাত্রী বিশ্ববিদ্যালয়ের হোস্টেলে থেকে নামাজের স্থানের জন্য আন্দোলন করে, মেডিকেলে পড়া হিজাবীনী, সরকারী চাকরি করা ইসলামিক মাইন্ডের মহিলা কর্মকর্তা যিনি ‘মাহরাম’ ছাড়াই সরকারী সফরে যান কাজেই জেনে রাখুন ইসলাম আপনাদের এই সুযোগ গুলোকে স্বীকার করে না। বরং বলে এগুলোর জন্য মুসলিম নারীদের পরকালে কঠিন শাস্তি পেতে হবে এবং ইসলামী রাষ্ট্র হলে এগুলো চিরতরে বন্ধ করে দেওয়ার অঙ্গিকার করে। তাই যেসকল পর্দানশীল মুসলিম মেয়ে দেশে ইসলামী শাসনের জন্য ফেইসবুকে সরব হোন, ইসলামের জয়গান গান, নবীর প্রেমে দিয়ানা হোন, তারা জেনে রাখুন আফগানিস্থানের মুল্লারা নিজেরা বানিয়ে কোন আইন কারোর উপর চাপিয়ে দেয়নি। আফগান কওমিদের অভিভাবক ভারতের দেওবন্ধ মাদ্রাসা, বাংলাদেশের হেফাজত চরমোনাই সকলেই দেওবন্দের মুরিদ- কাজেই তারা ক্ষমতায় এসে ‘মাহরাম আইন’ পাশ করলে আর হোস্টেলে কষ্ট করে পড়া লাগবে না, নামাজের ঘরের জন্য আন্দোলনও দরকার হবে না। কি ভালো হবে না?
#প্রশ্ন উঠতে পারে, নারী পুরুষের জন্য জ্ঞান অর্জন ফরজ বলা হয়েছে সেটা তাহলে কি? আরে ভাই সেটা তো কুরআন হাদিসের জ্ঞান অর্জনের কথা বলা হয়েছে! এই বিষয়ে নারীদেরও জ্ঞান অর্জন করতে হবে। আর সেটা করবে কোন নারীর কাছ থেকে। এটাকেই মডারেট মুসলমান ও তাকিয়াবাজ মুল্লারা সময় মত নিজেদের স্বার্থে ঘুরিয়ে পেঁচিয়ে ব্যবহার করে ইসলামকে মহান করে তুলতে...।
ফটো : সুষুপ্ত পাঠক
#Afghanistan #Women's #Education #Mahram #Hadith #Islam
Post a Comment
যুক্তি সংগত কথা বলুন.................