কার পীর হাক্বানি? পরীক্ষা দিবেন?
বাংলাদেশে প্রধান তিনজন ইসলামিক স্কলার—
১) মিজানুর রহমান আল-আযহারী বলেন, তিনি কায়রো থেকে কাতার যাওয়ার পথে হিমালয় দেখেন৷ তিনি মহানবী সা.কে সিক্সপ্যাক বডিবিল্ডার আখ্যা দেন৷ দুটোসহ তার বহু দাবিই সম্পূর্ণ মিথ্যা৷
২) তারেক মনোয়ার বলেন, তিনি ইংলিশ প্রিমিয়ার লীগের ফুটবলার ছিলেন৷ তিনি রকেটে যাতায়াত করেছেন৷ দুটোসহ তার বহু দাবিই সম্পূর্ণ মিথ্যা৷
৩) কাজী মোঃ ইব্রাহিম বলেন, মাটির নিচে আরো সাতটি পৃথিবী আছে, সেখানে সাতটি সূর্য ও আকাশ আছে৷ সেক্সপিয়র ও নিউটন ছিলেন মুসলিম৷ তার এদুটোসহ বহু দাবিই সম্পূর্ণ মিথ্যা৷
অনেকেই বলে তারা হাক্কানি পীর! আসলেই কি? এরা অনবরত মিথ্যা কথা বলে, ভুয়া গল্প বানায় ও এসব মিথ্যা বিক্রি করে কোটি কোটি টাকা কামায়৷ তাহলে হাক্কানি পীর কে? আমরা লিটমাস পরীক্ষা করতে পারি৷
হক থেকেই হাক্কানি৷ হক অর্থ সত্য৷ অর্থাৎ যে পীর সত্য, যিনি হাশরের ময়দানে নবীর শাফায়াত প্রাপ্তিতে ভূমিকা রাখতে পারবেন এবং অলৌকিক আধ্যাত্মিক ক্ষমতার মালিক তিনিই হাক্কানি পীর৷ যার রিযিক অবশ্যই হালাল আর নফস পরিশুদ্ধ৷ আচার আচরণ ও সভাব চরিত্র অর্থাৎ আখলাক হবে নির্মল৷
আমরা পীরদের রিযিককে লিটমাস ধরেই প্রাথমিক প্রমাণ করতে পারি তিনি বুজুর্গ না ভণ্ড? কোরআন কি বলে?
সুরা বাকারাঃ ১৭৪
"বস্তুত, যারা আল্লাহ কেতাবে যা অবতীর্ণ করেছেন তা গোপন করে এবং এর বিনিময়ে পার্থিব তুচ্ছ মূল্য গ্রহণ করে, তারা তাদের পেটে আগুন ছাড়া আর কিছুই ঢুকায় না। এবং আল্লাহ হাশরের দিন তাদের সঙ্গে কথাও বলবেন না, তাদেরকে পরিশুদ্ধও করবেন না। এবং তাদের জন্য রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক আজাব। এরাই হচ্ছে সেই সমস্ত মানুষ যারা সঠিক পথের (হেদায়াহ) পরিবর্তে পথভ্রষ্টতা (দালালাহ) এবং ক্ষমার পরিবর্তে শাস্তি ক্রয় করে নিয়েছে। আগুন সহ্য করতে তারা কতই না ধৈর্যশীল।"
কোরআনে অন্তত ১৬টি স্থানে আল্লাহর কালামের বিনিময় মূল্যের কথা রয়েছে৷ এর একটিই বিনিময় মূল্য আর তা হল- আল্লাহর রহমত পাওয়া৷ স্রষ্টার প্রতি মানুষের দায়িত্ব হিসেবেই তাঁর বাণি প্রচারের কথা বলেছেন৷ পীরগণ আল্লাহর বাণি প্রচার করেন৷ যদি তিনি বিনিময় মূল্য গ্রহণ করেন তবে তার জন্য যন্ত্রণাদায়ক আযাবের কথাই আল্লাহ বলেছেন৷ এই টাকা খাওয়ার সাথে আগুন খাওয়ার তুলনা করেছেন স্বয়ং আল্লাহ!
তাহলে এই যে, যারা দরদাম করে টাকার বিনিময়ে আল্লাহর বাণি প্রচারে আসেন তাদের পরকালে কি অবস্থা হবে? আল্লাহ বলেছেন তারা পথভ্রষ্ট এবং তারা শাস্তি ক্রয় করে নিয়েছে৷ এ নিয়েই মাওলানা সাদ ছাহেব মন্তব্য করে বাংলাদেশে বিপদে পড়েছিলেন৷ তিনি এ ধরনের আয়কে বেশ্যার আয়ের চেয়ে মন্দ বলেছেন৷ আল্লাহ বলেছেন, তারা আগুন সহ্য করার জন্য ধৈর্য ধরে আছেন৷
এবার পরীক্ষা করেন৷ বাংলাদেশের এমন কোন পীর কী আছেন, যিনি আল্লাহর বাণি প্রচার করে মূল্য গ্রহণ করেন না? যদি মূল্য গ্রহণ না করা কোন পীর থাকেন তবেই না তিনি হাক্কানি কিনা সে প্রশ্ন আসবে৷ সেটাও হবে কোরআন অনুযায়ী দ্বিতীয় পরীক্ষা! থাকলে আওয়াজ দিবেন৷
দ্বিতীয় লিটমাস পরীক্ষার নাম- নফস!
তৃতীয় লিটমাস পরীক্ষার নাম- আখলাক!!
উক্ত পরীক্ষা দুটি আমরা যে কেউই করে দেখতে পারি৷
রিজিক, নফস ও আখলাক এর পরীক্ষায় কেউ কি উত্তীর্ণ হবেন? যদি কোন ইমাম পরীক্ষা দিতে চান তাহলে প্রথম পরীক্ষায় আসুন৷ আপনিতো বিনিময়ে পার্থিব মূল্য গ্রহণ করছেন৷ আপনিতো আগুন ক্রয় করে রেখেছেন! কি হবে আপনার? ওহ আপনি পীর? এই যে দুই হাত দিয়ে টাকা নিয়ে পকেটে ভরছেন! এই যে বাক্সের টাকা গণাচ্ছেন ব্যাংকের স্টাফ নিয়ে৷ মানে বিনিময় নিয়ে আগুন কিনেছেন! কি হবে আপনার? কিভাবে আপনারা অন্যের সাফায়াত করবেন? আপনাদের দোজখইতো নিশ্চিত! আগুন সহ্য করতে আপনারা কতই না ধৈর্যশীল!
Post a Comment
যুক্তি সংগত কথা বলুন.................