লিখেছেন : সুষুপ্ত পাঠক Susupto Pathok
#কাতার #বিশ্বকাপ আয়োজনের অন্যতম একটি লক্ষ্য যে ইসলাম প্রচার, পশ্চিমা অমুসলিমদের মুসলমান বানানোর উদ্দেশ্য- সেটি এখন স্পষ্টভাবে সংশ্লিষ্টরা স্বীকার করছেন। সেই উদ্দেশ্য আয়োজকদের কতটুকু পূরণ হয়েছে সেটা প্রশ্ন নয়, প্রশ্ন হচ্ছে ফুটবলের এরকম একটি আসরকে ধর্ম প্রচারের উদ্দেশ্যে কাজে লাগানো নিয়ে। মধ্যপাচ্যের এইসব দেশগুলি ৫০-৬০ বছর আগে অর্থনৈতিকভাবে ছিলো দরিদ্র। ডাকাতী বাটপারীই ছিলো তখন তাদের পেশা। অশিক্ষাই কেবল নয়, পশ্চাতপত শিক্ষা ছাড়া এদের কোন উন্নত সংস্কৃতিও ছিলো না। তেল পাবার পর এইসব দেশগুলির কেবল অবকাঠামোগত বিপুল উন্নতি ঘটেছে। এইসব অবকাঠামো থেকে শুরু করে তাদের বাণিজ্যিক মস্তিষ্কগুলি ভাড়া করে আনা বিদেশী যাদের ৯৯ ভাগই অমুসলিম সম্প্রদায়। এই কথাকথিত ‘মুসলিম দেশগুলি’ জনগণকে আধুনিক শিক্ষা দিয়ে দক্ষ করে তোলার বদলে আমোদ প্রমোদে ভাসিয়ে দিয়েছে। তারাই এখন পশ্চিমাদের কাছে ‘ইসলামের ধর্মের মহাত্ম্য’ তুলে ধরতে চাইছে। তেল পাবার আগেও আরবদের কাছে ইসলাম ছিলো। বস্তুত ইসলাম ছাড়া আর কিছু ছিলোও না। কাজেই পশ্চিমারা জানে ইসলাম দিয়ে একমুঠো গমও ফলানো যায় না। ধর্মকে যেদিন পশ্চিমারা নিজের জীবন থেকে বিদায় করেছিলো সেদিন থেকেই তাদের প্রগতির চাকা ঘুরে চলেছিলো। আরবদের কাছে তারা কেন ১৪০০ বছর পেছনে ঘুরতে চাইবে?
#কাতারের ‘গেস্ট সেন্টার’ যারা বিদেশীদের বিশ্বকাপ উপলক্ষ্যে কতার ঘুরিয়ে দেখানোর দায়িত্ব পেয়েছে তারা এই দায়িত্বের পাশাপাশি ইসলাম ধর্ম সম্পর্কে টুরিস্টদের মধ্যে আগ্রহ সৃষ্টির লক্ষ্যে বিভিন্ন স্থান থেকে ইসলাম ধর্ম প্রচারকদের এনে ইসলাম সম্পর্কে টুরিস্টদের জন্য লেকচারের ব্যবস্থা নিয়েছে। ফ্রি খেজুর কফি শপের সামনেই রাখা হচ্ছে বিভিন্ন ভাষায় ইসলামী বই। কাতারে অবস্থানরত সিরিয়ার স্বেচ্ছাসেবক জিয়াদ ফাতেহ বলেন, বিশ্বকাপ ফুটবল হলো লাখো মানুষকে ইসলামের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার একটি সুযোগ। ইসলাম ধর্ম সম্পর্কে ‘ভুল’ ধারণা পাল্টে দেওয়ার একটি সুযোগ (দৈনিক প্রথম আলো)।
#ইসলাম সম্পর্কে ‘ভুল ধারণা’ পাল্টে দিতে এইসব সেচ্ছাসেবকদের তো সবার আগে উচিত আইএস, আল কায়দাদের মধ্যে ইসলাম প্রচার করা তাই না? তারা সেটা না করে পশ্চিমা সাধারণ নাগরিকদের মধ্যে কেন ইসলাম প্রচার করতে যাচ্ছে? যারা বোমা মারছে, মানুষ মারছে তাদের গিয়ে ইসলাম বুঝাক! ইসলামের বড় বড় শায়েখ, মুফতি যারা বোকো হারাম, আল কায়দা, আইএসের নেতৃত্বে আছে তাদের কাছে কেন ‘ইসলামের মহাত্ম্য’ বুঝাতে যায় না? ইসলামের মহাত্ম্য তো ইরানী ফুটবল দলের খেলোয়াড়রাই মাঠে তাদের প্রতিবাদ দিয়ে জানিয়ে দিয়েছে। স্টেডিয়ামে প্লেকার্ড ধরে ইরানীরা জানিয়ে দিয়েছে। হিজাব বিরোধী আন্দোলন কি বিশ্বকে জানায়নি ইসলামের মহাত্ম্য? আফগানিস্থান কি জানাচ্ছে না ইসলামের মহাত্ম্য?
#কাতার বিশ্ববিদ্যালয়ের শরিয়াহ আইনের অধ্যাপক সুলতান বিন ইব্রাহিম আল হাশেমি। তিনি ভয়েস অব ইসলাম রেডিও স্টেশনেরও প্রধান। তিনি বলেন, যাঁরা ধর্মান্তরিত হতে চান, তাঁদের খুঁজে বের করার কাজে বিশ্বকাপ ফুটবলকে ব্যবহার করা উচিত। পাশাপাশি ইসলামভীতি মোকাবিলায় এই আয়োজনকে কাজে লাগানো উচিত (দৈনিক প্রথম আলো)।
#একদম রাখরাখ কিছুই রাখেনি এই অধ্যাপক! কিন্তু ইউরোপের কোন দেশ যদি বিশ্বকাপ উপলক্ষ্যে খ্রিস্টান ফাদার নানদের খ্রিস্টান মিশনারীদের লেলিয়ে দিতো ধর্ম প্রচার করতে? এতখানি শান্ত হৈ চৈ হীন বিশ্ববিবেক কি আমরা দেখতে পেতাম? একটা খেলাকে ধর্ম দিয়ে এভাবে বিতর্কিত করার চেষ্টা, ‘প্রথম কোন মুসলিম দেশে বিশ্বকাপ আয়োজন’ যে কতখানি বিপদ সেটি কি স্পষ্টভাবে আন্তর্জাতিকভাবে সুপরিচিত কোন সেক্যুলার লিবারাল নেই যিনি বলতে পারেন?
Copyright © 2022 Susupto Pathok aka সুষুপ্ত পাঠক all rights reserved.
Post a Comment
যুক্তি সংগত কথা বলুন.................