স্কুলের বইয়ে বিবর্তনবাদ পড়ানো হলে এদেশের মানুষ ঈমানহারা হয়ে আলেম ওলামাদের বিরক্তিকর মনে করবে।– মাওলান নূর হোসাইন কাশেমী, জমিয়তে ওলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ।
#নিজেকে পেশাগতভাবে অস্তিত্বহীন বলে আশংকা সৃষ্টি হলে মানুষ এইভাবে সত্য বলে ফেলে। পাঠ্যপুস্তকে বিবর্তনবাদ পড়ানোর শুরু পর থেকে বেশ শোরগোল শুরু হয়েছে। মাওলানা কাশেমী রাজাকার মাওলানা মান্নান প্রতিষ্ঠিত দৈনিক ইনকিলাবে ২০১৯ সালে বিবর্তনবাদ পড়ানো হলে কি হতে পারে সে আশংকা জানিয়ে কলাম লিখেছিলেন। মাদ্রাসার কাশেমী হুজুরদের জন্য সুখবর হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়ে ঠিক তাদের জ্ঞান-বিদ্যার সাইজে বহু ‘হুজুর’ এখন শিক্ষকতা করছেন। এইসব হুজুরদের অনেকের পোস্ট ফেইসবুকে ঘুরছে যারা দাবী করছেন বিবর্তনবাদ ভ্রান্ত, বিজ্ঞানসম্মত নয়। এটা পড়ানো হলে ছেলেমেয়েরা ধর্মহীন হয়ে মদ গাঁজা ফ্রি-#সেক্স করে বেড়াবে...।
#ইসলাম সত্য হলে বিবর্তনবাদের কি সাধ্য যে ইসলামকে নিশ্চিহ্ন করে দিবে?এটা আমাকে ধার্মিক ভাইরা কেউ একটু বুঝিয়ে দিবেন? আপনাদের ভয়টা কিসের? আল্লায় অগাধ বিশ্বাস রেখেও মাদ্রাসাগুলিতে শিশুদের উপর যৌন নির্যাতন করতে যাদের বাঁধে না তারাই এখন বলছে বিবর্তনবাদ পড়ে আল্লায় বিশ্বাস হারিয়ে সবাই মদ গাঁজা ফ্রি-#সেক্সে জড়িয়ে পড়বে!
#পৃথিবীতে যেদিন ডারউনের ‘অরিজিন অব স্পিসিস’ প্রকাশিত হয়েছিলো সেদিন পৃথিবীর আল্লা-ভগবান-জিহোবা-গডের শেষকৃত্য অনুষ্ঠিত হয়ে গিয়েছিলো। ইউরোপের ছোট ছোট বাচ্চারাও জানে মানুষ ও শিপাঞ্জী একই পূর্বপুরুষ থেকে এসেছে। এভাবে ধরে ধরে প্রাণীদের অস্তিত্বে গিয়ে দেখা যায় একেকোষী জীব থেকে সমস্ত প্রজাতির প্রাণী বিবর্তনের মাধ্যমে বংশবিস্তার করেছে। মোটেই ঈশ্বরের প্রথম মানব মানবী বানানো গল্প আর চলবে না। বিবর্তনবাদ কেবল মানুষের শুরুর নির্দেশ দেয়নি, মানুষের শরীরের রোগশোকের জন্য দায়ী ভাইরাস ব্যাকটিরিয়ার বিবর্তন দেখে বিজ্ঞানীরা চিকিত্সাবিজ্ঞানের অভূতপূর্ব সাফল্য লাভ করেছেন। কাশেমীদের ভয় হচ্ছে তাদেরকে মানুষ আর ভয় পাবে না যদি মানুষের সূচনাকে জেনে যায়। তাদেরকে আর কেউ মান্য করবে না। সমাজে তাদের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে প্রশ্ন তুলবে। কয়েক হাজার বছর ধরে কাশেমী ও তাদের জ্ঞাতী ভাইরা (মুল্লা-পুরোহিত-ফাদার-ভান্তে) কোন রকম কাজ না করে অন্যের ফলানো ধান চালে ভাগ বসিয়েছে কেবলমাত্র পরকালের ভয়ে। মানুষ পরকালের ভয়ে দান খয়রাত করে। আলেমদের সন্মান করে আল্লাকে খুশি করতে। শিপাঞ্জীদের জ্ঞাতী ভাই এটা জানার পর কাশেমীদের কিচ্ছাকাহিনী আর কে বিশ্বাস করবে?
#যাই হোক, এত কিছুর পর যেটা বেশ ভাবাচ্ছে, বিবর্তনবাদ শেষ পর্যন্ত পাঠ্যবইতে টিকে থাকবে তো? সর্বসময় ক্ষমতাবান ধার্মিক হলে তিনি যখন জানবেন বিবর্তনবাদে ধর্মের মূলে আঘাত করার রসদ সত্যিই আছে তখন কি তিনি চাইবেন সেটা এই দেশের মুসলমান ছেলেমেয়েরা পড়ে ইসলামে বিশ্বাস হারিয়ে ফেলুক? বিরাট প্রশ্ন এটা। দেখার অপেক্ষায় আছি।
#সুষুপ্ত #পাঠক #Evolution #Syllabus #Darwin #OriginofSpecies
Post a Comment
যুক্তি সংগত কথা বলুন.................