দেশে রেমিটেন্সের পাশাপাশি তার ‘সহি ইসলাম’ টেলিফোনে পাঠাতে থাকে পরিবারের কাছে।

বাংলা ভাষা নিয়ে আমার একটা দুঃশ্চিন্তা আছে। এটা কি ইসলামী বা মুসলমানী ভাষা হিসেবে উর্দুর মত আলাদা পরিচয়ের একটি ভাষা হিসেবে রূপ নিবে বাংলাদেশে অদূর ভবিষ্যতে?

ভাষা টিকে থাকে সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষদের মাধ্যমে। হিন্দি থেকে মুসলমানদের জন্য উর্দু ভাষার জন্ম হয়েছিলো। মূলত ভীনদেশী মুসলমান ফৌজিদের হাতে উর্দুর জন্ম হয়। তাই উপমহাদেশের মুসলমানদের কাছে উর্দু স্রেফ 'মুসলমানদের ভাষা'।



#বাংলাদেশের সামাজিক পরিবর্তনে ভাষায় তার প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে। অশিক্ষিত থেকে স্বল্প শিক্ষিত নিন্মবিত্ত শ্রেণী মধ্যপাচ্যে লেবার হিসেবে শ্রমবাজারে বাংলাদেশ এখন এক নম্বরে আছে। ফলে গ্রামীণ সমাজ আশির দশকের পর থেকে দ্রুত পরিবর্তন হতে থাকে। আরবের ইসলাম দ্বারা তারা নতুন করে মুসলমাননিত্ব ঝালাই করে নেয়। দেশে রেমিটেন্সের পাশাপাশি তার ‘সহি ইসলাম’ টেলিফোনে পাঠাতে থাকে পরিবারের কাছে। আরবের টাকায় মাদ্রাসা গড়ে উঠে আনাচেকানাচে। সেখান থেকে ধর্মব্যসায়ীদের মাধ্যমে আরেকটা আঘাত আসে। এদিকে কায়কোবাদ গোলাম মুস্তফা ফরুক আহমদরা পাকিস্তান ভেঙ্গে যাবার পর সাময়িকভাবে তাদের মুসলিম বাংলা বাধাগ্রস্থ হলেও স্বাধীনতার পর আহমদ ছফার বাঙালি থেকে আলাদা স্বাতন্ত্র্য জাতিসত্তা হিসেবে “বাঙালি মুসলমান” দাঁড় করাতে চেষ্টা করেন। এখন সেই ধারাবাহিকতায় দেখায় যায় সচেতনভাবে বাংলাদেশে একটা প্রজন্ম কবিতায়, গদ্যে আরবী উর্দু ফারসী শব্দ বসিয়ে লিখছে। তারা বলছে ব্রাহ্মণ্যবাদী সংস্কৃত, কোলকাতার ব্রাহ্মণ্যবাদী বাংলা ভাষা নয়, মুসলমানদের ভাষা তাদের থেকে পৃথক...। অর্থ্যাত, গণমানুষের মধ্যে একটা পরিবর্তন যারা ভাষাকে বাঁচিয়ে রাখে, তারপর শিক্ষিত সাহিত্যকারীদের চেষ্টা সিরিয়াসলী ভাবাচ্ছে বাংলা ভাষা কি মুসলমানদের আলাদা কোন শাখা হিসেবে বিকাশ লাভ করবে কিনা? কেননা খুব সচেতনভাবে সাধারণ শ্রমজীবী, নিন্মবৃত্ত, মধ্যবিত্তরা ‘মাংস’ না বলে ‘গোস্ত’ বলছে। ‘খাবার’ না বলে ‘খানা’ বলছে। ‘বউ’ না বলে ‘বিবি’ বলছে।...

আমার দুঃশ্চিন্তা অমূলক হোক। না হলে বাঙালি মুসলমান বলতে এখন যাদেরকে বুঝায় তারা স্রেফ অন্য একটি পরিচয়ে সব হারাবে!

#সুষুপ্ত #পাঠক #Urdu #Hindi #Bengali #language

Copyright © 2023 Susupto Pathok aka সুষুপ্ত পাঠক all rights reserved.

0/Post a Comment/Comments

যুক্তি সংগত কথা বলুন.................

Stay Conneted