M.M college ইতিহাস
যশোরে উচ্চ শিক্ষার সুবিধার্থে একটি কলেজ স্থাপনের প্রয়োজনীয়তা বহু পূর্ব থেকেই অনুভূত হয়ে আসছিল এবং সময়ে নিষ্ফল উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছিল। অবশেষে ১৯৪১ ইং সনের জুলাই মাসে বিষয়টি একটি সুনির্দিষ্ট রূপ নেয়। ঝিকরগাছা উপজেলার গঙ্গানন্দনপুর গ্রামের বাসিন্দা অধ্যাপক শ্রীযুক্ত মহিতোষ রায় চৌধুরীর (প্রাক্তন অধ্যাপক বঙ্গবাসী কলেজ কলকাতা ও দীর্ঘদিন যাব পশ্চিম বাংলা রাজ্য সরকারের একজন সংসদ সদস্য) পদক্ষেপে ১৯৪০ইং সনের আগস্ট মাসে রায় বাহাদুর কেশব লাল রায় চৌধুরীর এবং যশোর পৌরসভার সভাপতি শ্রীযুক্ত সুরেন্দ্রনাথ হালদারের স্বীয় উদ্দেশ্য বাস্তবায়ন কল্পে এক জনসভার আহবান করা হয়। এ সভায় সভাপতিত্ব করেন যশোরের তদানীন্তন জেলা জজ এস, কে, গুপ্ত আই, সি, এস। এই অধিবেশনেই সর্ব সম্মতিক্রমে স্থির করা হয় যে যশোর শহরে একটি প্রথম শ্রেণীর কলেজ প্রতিষ্ঠা করা প্রয়োজন। এই পরিকল্পনাকে বাস্তবায়ন করার জন্য ১৯৪১ সালের জুলাই মাস থেকে উচ্চ মাধ্যমিক কলা শ্রেণীর কার্যক্রম শুরু করার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। এই উদ্দেশ্যে শ্রীযুক্ত ক্ষিতিনাথ ঘোষ এবং শ্রীযুক্ত মহিতোষ রায় চৌধুরীকে যথাক্রমে সম্পাদক ও যুগ্ন সম্পাদক করে ড. জীবন রতন ধর এম, বি,-কে কোষাধ্যক্ষ করে এবং শ্রীযুক্ত প্রফুল্ল কুমার রায় চৌধুরী (এম, এ, বি-এল) কে সহকারী সম্পাদক করে চৌত্রিশ (৩৪) সদস্য বিশিষ্ট সর্বময় ক্ষমতা সম্পন্ন একটি কার্যনির্বাহী কমিটি গঠন করা হয়। এই পরিকল্পনাকে লোকপ্রিয় করার জন্য ১৫০ সদস্য বিশিষ্ট আরও একটি সাধারণ কমিটি গঠন করা হয়। এছাড়াও অর্থ সংগ্রহ, সরকারী সাহায্য ও বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বীকৃতি লাভের জন্য উক্ত পরিকল্পের প্রতি ফলদায়ক প্রয়োজনীয় অন্যান্য সকল বিষয়াদি সম্পাদন কল্পে কোলকাতায় একটি উপ-কমিটি গঠনের জন্য কমিটি কর্তৃক শ্রীযুক্ত মহিতোষ রায় চৌধুরীকে ক্ষমতা প্রদার করা হয়।
শাসনতন্ত্র প্রনয়ণের পর কার্যনির্বাহী কমিটি স্থানীয় মেডিকেল ইনস্টিটিউট কর্র্তৃপক্ষের স্মরণাপন্ন হন। যেহেতু মেডিকেল ইনস্টিটিউট স্বীকৃতি লাভে অকৃতকার্য হয়, ফলে তাঁদের সম্পাত্তি অব্যবহৃত অবস্থায় পড়েছিল। প্রশংসনীয় মহনুভবতাসহ ১৯৪১ সালের মার্চ মাসের ১৮ তারিখে ৮টি শর্তের ভিত্তিতে কলেজ পরিচালনা কমিটির সম্পাদক ক্ষিতিনাথ ঘোষ ও সহ সম্পাদক প্রফুল্ল কুমার রায় চৌধুরী একটি দলিল সম্পাদন করেন। এই সম্পাদিত দলিলের প্রেক্ষিতে মেডিকেল ইনস্টিটিউটের সভাপতি কেশব লাল রায় চৌধুরী ও সম্পাদক পূর্ণ গোপালবসু কলেজ প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্যে চুক্তি দলিল সম্পদন করেন। এ সময় কলেজটির নাম ছিল “যশোর কলেজ”।
কার্যনির্বাহী কমিটি বেশ কিছু জায়গাসহ একটি বৃহৎ দোতলা ইমারত এবং একটি একতলা ইমারত বিশিষ্ট শহরের সর্বোৎকৃষ্ট স্থানে ৪০,০০০ টাকার অধিক মূল্যে সম্পদের অনুদানটির আশ্বাস প্রাপ্তির পর অন্যান্যদের মধ্যে স্যার পি, সি রায়, স্যার মন্মথ নাথ মুখ্যার্জী, কে, টি ড. শ্যামা প্রসাদ মুখ্যার্জী, এ, কে ফজলুক হক, স্যার খাজা নাজীমুদ্দীন এবং এইচ, এস, সোহরাওয়ার্দী স্বাক্ষরিত একটি মুদ্রিত আবেদন আপিল লাভ করলে অর্থ সংগ্রহ আরম্ভ করেন।
১৯২৬ সালের দিকে কলেজের এই ইমারতটির স্বত্তাধিকারী ছিলেন “ব্যাপটিস্ট জেনানা মিশান”। পরবর্তীতে মিশন কর্তৃক ইমারতটি মেডিকেল ইনস্টিটিউটের নিকট বিক্রয় করা হয়। ১৯৪১ সালে মেডিকেল ইনস্টিটিউট ইমারতটি ৮টি শর্ত সাপেক্ষে দানপত্র করে দেন।
প্রথম ছাত্র-ছাত্রী ভর্তি শুরু হয় ১৯৪১ সালের ১লা জুলাই মাসে। প্রথম অধ্যক্ষ হিসেবে নিয়োগ পান ড. ডি, এন, রায়। ১৯৪১-১৯৪২ শিক্ষা বর্ষের মোট ছাত্র-ছাত্রী সংখ্যা ছিল ১৪৬ জন। এই কলেজের প্রথম ছাত্র শ্রীমান অনন্ত কুমার ঘোষ। প্রথম বছর যে চারজন ছাত্রী ভর্তি হয় তাঁরা হলেন এফ-২০ লীলা রায়, এফ-৫২ কল্যাণী দত্ত, এফ-৯৬ মোসাম্মৎ মনোয়ারা খাতুন এবং শান্তি মুখার্জ্জী। ছাত্রদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ২৫-আব্দুল হাই (পরবর্তী অধ্যক্ষ), ১৯ মোঃ নুরুল হুদা ও মোঃ শামছুল হুদা। হিন্দু ছাত্রের সংখ্যা ছিল ১০৯ জন এবং মুসলিম ছাত্রের সংখ্যা ছিল ৩৭ জন। কলেজের প্রথম অধ্যক্ষ ছিলেন ড. ধীরেন্দ্র নাথ রায়। কলেজটির উন্নয়নের ক্ষেত্রে তাঁর বিশেষ ভূমিকা ছিল। সূচনা লগ্নে পুরাতন ইমারতটি সংস্কার করে আরও একটি সুবৃহৎ বক্তৃতাকক্ষ নির্মাণের প্রয়োজন হলে কলেজ কমিটি উহা সম্পাদনের দায়িত্ব গ্রহণ করেন এবং ঠিক ঐসময় কলেজ পরিদর্শক এসে কাজের বেশ অগ্রগতি দেখে কলেজ কর্তৃপক্ষের ভূয়সী প্রশংসা করেন। এসময় যশোর নিবাসী বিশিষ্ট আইনবিধ শ্রীযুক্ত মনীন্দ্রনাথ মিত্রের সদয় অনুদানের ফলে সেখানে ক্লাস অনুষ্ঠিত হওয়ার জন্য ঠিক সময়মত নির্মাণ কার্য সমাপ্ত হয়। কলেজের অধিকাংশ ছাত্রই ছিল স্থানীয়। বহিরাগত ছাত্রদের জন্য দুটি পৃথক ছাত্রাবাস ছিল। একটি মুসলিম ছাত্রাবাস অপরটি হিন্দু ছাত্রাবাস।
কলেজটির প্রথম অনুমোদিত বিষয় সমুহ ঃ-
আই,এ ঃ- ইংরেজী, বাংলা, সংস্কৃতি, আরবী, ফার্শী, ইতিহাস, যুক্তিবিদ্যা, অংক, পৌরনীতি, বাণিজ্যিক ভূগোল, বাণিজ্যিক গণিত এবং বুক কিপিং।
বি,এ ঃ- ইংরেজী, বাংলা, বাংলা ২য় ভাষা ও সংস্কৃতি, ইতিহাস, অর্থনীতি ও দর্শন শাস্ত্র।
বর্তমান অনুমোদিত কোর্স ও বিষয় সমুহ ঃ-
বি, এঃ- (পাস) বা, ই, বা (সা) ই (সা), আরবী, উর্দু, অর্থনীতি, রাষ্ট্র দর্শন, সমাজ বিজ্ঞান, ইসলামিক-স্টাডিজ, গণিত, ইতিহাস , ইসলামের-ইতিহাস, ভূগোল।
বি, কম ( পাস ) --
বি, এস-সি, (পাস) ঃ পদার্থবিদ্যা, রসায়ন, উদ্ভিদবিদ্যা, প্রাণিবিদ্যা গণিত, ভূগোল।
সম্মান ঃ বাংলা, ভূগোল, অর্থনীতি, ইতিহাস।
১৯৪২ সালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে মিত্র বাহিনী কলেজে ঘাঁটি স্থাপন করায় কলেজে শিক্ষার পরিবেশ বিঘ্নিত হয়। এই সময় কলেজ কর্তৃপক্ষ হাট বাড়ীয়ার জমিদারের কাচারী বাড়ীতে (বর্তমান ফায়ার ব্রিগিড অফিস) কলেজটিকে স্থানান্তরিত করেন। এখানে লম্বা চালাঘর তৈরী করে ক্লাস শুরু করা হয়। ১৯৪৫ সালে যুদ্ধ শেষে কলেজটি পুনরায় পূর্বের স্থানে ফিরে আসে। ঐ সময়েই কলেজের পূর্বের নামটি পরিবর্তন করে যশোরের কৃতি সন্তান মহাকবি মাইকেল মধুসূদন দত্তের নামানুসারে নামকরণ করা হয় “মাইকেল মধুসূদন কলেজ” সংক্ষেপে এম. এম. কলেজ।
কলেজের এই সকল মহৎ কাজে উল্লেখিত ব্যক্তিবর্গের সাথে যে সকল মহৎ প্রাণ ব্যক্তিবর্গের অবদানও বিশেষভাবে স্মরণীয় তাঁরা হলেন শ্রী নীল রতনধর, বিজয় কৃষ্ণরায়, বিজয় রায়, নগেন্দ্রনাথ ঘোষ, খান বাহাদুর লুৎফুর রহমান, এ্যাড আঃ রউফ, বি. সরকার (বিশ্বেশ্বর সরকার), দানবীর রনদা প্রসাদ সাহা ও তৎকালীন কলেজের শিক্ষক বৃন্দ।
১৯৪৭ সালে পাকিস্তান প্রতিষ্ঠিত হবার পর অধিকাংশ প্রতিষ্ঠিত হিন্দু সমপ্রদায় এ দেশ ত্যাগ করায় কলেজটির সাময়িক সংকট দেখা দেয়। কিন্তু অল্প সময়ের মধ্যেই স্থানীয় বিদ্যোৎসাহী ব্যক্তিবর্গের সহায়তায় সংকট কাটিয়ে উঠা সম্ভব হয়। এই সময় কলেজ পরিচালনার জন্য বিদ্যানুরাগী ব্যক্তিদের সমন্বয়ে গঠন করা হয় নতুন কলেজ পরিচালনা কমিটি। এই কমিটি সংকটকালীন সকল অবস্থার মোকাবিলা করে কলেজটি সুষ্ঠভাবে পরিচালনা করতে সক্ষম হন। এই কলেজ পরিচালনা কমিটির রূপরেখা ছিল নিম্নরূপ-
(১) সভাপতি, জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এইচ. এস নোমানী
(২) সম্পাদক, এ্যাডভোকেট সৈয়দ সামছুর রহমান
(৩) সদস্য, খান বাহাদুর লুৎফর রহমান
(৪) সদস্য, আব্দুর রহমান
(৫) সদস্য, আব্দুস সোবহান
(৬) সদস্য, পশুপতি বসু
(৭) সদস্য, গেন্দ্রনাথ ঘোষ
(৮) সদস্য, বিজয় রায়
(৯) সদস্য, ওয়াহেদ আলী আনসারী ও অন্যান্য সদস্যগণ।
১৯৪৯ সালে আব্দুর রহিম জোয়াদ্দার কলেজের অধ্যক্ষের দায়িত্বভার গ্রহণ করে কলেজটির বেশ কিছু উন্নয়ণ সাধন করেন। ১৯৫৬ সালে কলেজে বি. কম (পাস) বিভাগটি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক অনুমোদন লাভ করে। ১৯৫০ সালে এ্যাডভোকেট হাবিবুর রহমান কলেজ পরিচালনা কমিটির সম্পাদকের দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। তিনি বিভিন্ন উৎস হতে অর্থ সংগ্রহ করে কলেজটির ব্যাপক উন্নতি সাধন করেন। ১৯৫৬ সালে অধ্যক্ষের দায়িত্বভার গ্রহণ করেন মোঃ আব্দুল হাই। তাঁর সময়ে কলেজটিতে বি, এস-সি (পাস) কোর্স সহ অর্থনীতি, ভূগোল ও বাংলা বিভাগের সম্মান শ্রেণীর জন্য রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক অনুমোদন লাভ করে। পরবর্তীতে ১৯৭১ সালে ইতিহাস বিভাগে সম্মান শ্রেণীর জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমোদন পাওয়া যায়। ১৯৫৯ সালের দিকে অধ্যক্ষ মোঃ আব্দুল হাই ও যশোর জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট, কলেজ পরিচালনা কমিটির সভাপতি এম, রুহুল কুদ্দুস এর ঐকান্তিুক প্রচেষ্টায় কলেজটিকে প্রশস্ততর পরিবেশে স্থাপনের (বর্তমান স্থানে) ব্যবস্থা গ্রহণ এবং তৎকালীন সরকারের উন্নয়ণ পরিকল্পনার অন্তুর্ভুক্ত করা সম্ভব হয়।
প্রশস্ত পরিবেশে কলেজের জন্য স্থান নির্ধারণ ও জমি সংগ্রহের ক্ষেত্রে পীর মরহুম মোঃ আব্দুল খায়ের, হাজী মোঃ মোরশেদ সহ যশোরের বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গের অবদান বিশেষ স্মরণীয়। খড়কীর যে সকল মহৎপ্রান ব্যক্তিবর্গ অল্প মূল্যে কলেজটির জন্য জমি দিতে আগ্রহী হন তাঁদের মধ্যে খড়কীর মুন্সী নছিম উদ্দীন ১৫ বিঘা জমি কলেজকে দেন। এছাড়া মোঃ আব্দুল লতিফ, মোঃ মহাতাব বিশ্বাস, মোহাম্মদ আলী, জবুর আলী জোয়াদ্দার, মোঃ দলিল উদ্দীন, শরীফ শামছুর রহমান, মোঃ ইমান আলী, আব্দুস ছোবহান প্রমুখ ব্যক্তিরা সর্বমোট ৫১ বিঘা জমি দিয়ে কলেজকে সাহায্য করেন। কলেজ সীমানার ভেতর পরিত্যক্ত যশোর, ঝিনাইদহ রেল লাইন ছিল। এই পরিত্যক্ত রেইল লাইনের তিন বিঘা খাস জমিও কলেজ পেয়েছে। কলেজের কাজ সঠিকভাবে পরিচালনার জন্য দুটি কমিটি গঠন করা হয়। একটি প্রকল্প কমিটি এবং অপরটি নির্মাণ কমিটি। প্রকল্প ও নির্মাণ কমিটির রূপরেখা ছিল নিম্নরূপ। সভাপতি ম্যাজিস্ট্রেট এম রুহুল কুদ্দুস, সদস্য ছিলেন ইঞ্জিনিয়ার ফারুকী, পুলিশ সুপার মুর্তজা আলী, পৌরসভা চেয়ারম্যান নগেন্দ্র নাথ ঘোষ, এম. পি আহম্মহ আলী সরদার, এ্যাডভোকেট সৈয়দ শামছুর রহমান, এ্যাডভোকেট রওশন আলী ও বাবু পশুপতি বসু বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ। নির্মাণ কমিটিতে ছিলেন, শ্রী সতীশ কুমার দত্ত, মোঃ ঈমান আলী মাস্টার ও সুধীর কুমার ঘোষ। এই দুটি কমিটির তত্ত্বাবধায়ক ছিলেন মরহুম অধ্যক্ষ আব্দুল হাই। তিনি প্রথম পর্যায়ে ১৯৬৪ সাল পর্যন্ত এই কলেজের অধ্যক্ষের দায়িত্বে নিয়োজিত ছিলেন।
১৯৬০ সালে তৎকালীন জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এম রুহুল কুদ্দুস পরিত্যক্ত রেইল লাইনের পরিত্যক্ত জমির উপর কলেজের কলা ভবনটির ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেন। ১৯৬০ সালের ১৪ই সেপ্টেম্বর জেলা প্রশাসক হাসান জহির যশোর জেলার দায়িত্বভার গ্রহণ করে কলেজের কলা ভবনসহ বিভিন্ন উন্নয়নের ক্ষেত্রে বিশেষ পদপেক্ষ গ্রহণ করেন। এই সময় কলেজ প্রকল্প কমিটি ও নির্মাণ কমিটির সদস্য বৃন্দসহ অধ্যাপক দিগের মধ্যে মরহুম অধ্যাপক লুৎফুল হক, অধ্যাপক আজিজুল হক, অধ্যাপক সিরাজ উদ্দীন মৃধা প্রমুখ ছিলেন। অধ্যাপক সৈয়দ সিদ্দিক হোসেন, অধ্যাপক কাজী মুহাম্মদ কামরুজ্জামান, প্রধান সহকারী মোঃ আতিয়ার রহমান ও আব্দুল হোসেন (বর্তমান মহিলা কলেজের অফিস সহকারী) বিশেষ ভূমিকা রাখেন। এই সময় কলেজের নতুন ভবন নির্মাণসহ বিভিন্ন উন্নয়নে ১৯ লক্ষ টাকা ব্যয় করা হয়। ১৯৬২ সালে এই নতুন ভবনে কলেজের শ্রেণী কার্যক্রম শুরু হয়।
নতুন কলেজ ভবনে ১৮.১৮ একর জমি আছে। বর্তমানে কলেজটিতে ত্রিতল কলা ভবন, ত্রিতল বিজ্ঞান ভবন, ছাত্র/ছাত্রী কমন রুম, অধ্যক্ষ ও উপাধ্যক্ষের বাস ভবন, মসজিদ, শহীদ মিনার, শহীদ আসাদ ছাত্রাবাস (ত্রিতল), নতুন ছাত্রীবাস, পুরাতন ভবনে শাহ সুফি আব্দুল করিম ছাত্রাবাস, মুন্সী মেহেরুল্লাহ ছাত্রাবাস, মশিউর রহমান ছাত্রাবাস, গরীব শাহ ছাত্রাবাস, গোলাম মোস্তফা ছাত্রাবাস ও শিক্ষকবৃন্দের বাসের জন্য একটি মেসসহ বিভিন্ন ভবন আছে।
যে সকল অধ্যক্ষবৃন্দ কৃতিত্বের সাথে তাঁদের দায়িত্ব পালন করে কলেজটিকে মহীয়ান করেছেন তাঁরা হলেন ঃ-
(১) ড. ডি, এ, রায় ১৯৪১
(২) ড. এ, সি, বোস
(৩) কে, পি, মিত্র
(৪) ভোলা নাথ হালদার
(৫) এ, আর, জোয়াদ্দার
(৬) মোঃ আব্দুল ওয়াদুদ
(৭) সৈয়দ আহম্মদ আলী
(৮) মোঃ আব্দুল হাই
(৯) মোঃ ফজলুর রহমান
(১০) মোঃ সামসুল করিম
(১১) মোঃ নূরু হাসান
(১২) মোঃ আব্দুর রশিদ
(১৩) মোঃ আনোয়ারুল ইসলাম
(১৪) মোঃ সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী
(১৫) মোঃ আব্দুল হাই
(১৬) মোঃ তমিজুল হক
(১৭) মোঃ হানিফ
(১৮) মোঃ মোহাম্মদ শরীফ হোসেন
১৯৬৮ সালে ১লা মে কলেজটি সরকারী করণের সময় কলেজের অ্যধক্ষের দায়িত্বে নিয়োজিত ছিলেন অধ্যক্ষ মোঃ ফজলুর রহমান। ১৯৭৪ সালে বিজ্ঞান শাখা পুরাতন ভবন হতে নতুন স্থানে স্থানান্তরিত করা হয়। ১৯৭৬ সালে দ্বিতীয় বারের জন্য কলেজের অধ্যক্ষের দায়িত্বভার গ্রহণ করেন অধ্যক্ষ আব্দুল হাই। ৯/১/৮১ সালে অধ্যক্ষ থাকাকালীন অবস্থায় তিনি মৃত্যু বরণ করেন। তাঁর প্রচেষ্টায় কলেজের মসজিদটির নির্মাণ কাজ শুরু হয়। এ ব্যাপারে ছাত্রদের আর্থিক সহযোগিতা ও অধ্যাপক মওলানা আব্দুল ওয়াহেদ, অধ্যাপক কাজী মুহাম্মদ কামরুজ্জামান, অধ্যাপক মোঃ শওকত আলী, অধ্যাপক মোঃ আব্দুল হাই (রসায়ন বিভাগ) এর অবদান বিশেষ স্মরণীয়। ৯/১২/৮৯ তারিখে অধ্যক্ষের দায়িত্বভার গ্রহণ করেন প্রফেসর মোহাম্মদ শরীফ হোসেন। এই সময় কলেজ মসজিদটিসহ কলেজের সার্বিক উন্নতি সাধিত হয় এবং লেখাপড়ার সুষ্ঠু পরিবেশ পরিলক্ষিত হয়। তাঁর প্রচেষ্টায় এই কলেজের মেধাবী, মনোযোগী, স্বল্প বিত্ত ও অভাব গ্রস্থ শিক্ষর্থীদের লেখাপড়ার সুবিধার্থে দীর্ঘ মেয়াদী পাঠ্য বই ঋণ প্রদানের জন্য “বই ব্যাংক” প্রকল্প চালু করা হয় এবং কৃতি ছাত্র-ছাত্রীদেরকে উৎসাহীত করার উদ্দেশ্যে প্রতিটি পরীক্ষার ফলের ভিত্তিতে পুরস্কার প্রদানের ব্যবস্থা করা হয়েছে। কলেজটি বাংলাদেশের একটি প্রাচীনতম ঐতিহ্যবাহী আদর্শ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।
তথ্য সূত্র : শিক্ষালয়ের ইতিকথা
লেখক : কাজী শওকত শাহী
Post a Comment
যুক্তি সংগত কথা বলুন.................