প্যাগন ধর্মটির অস্তিত্ব থাকতো, আর তারা যদি কাবাঘর ফিরে পাবার দাবী করতো সেটা হতো অত্যন্ত যৌক্তিক একটি দাবী।

আজ যদি আরবের প্যাগন ধর্মটির অস্তিত্ব থাকতো, আর তারা যদি কাবাঘর ফিরে পাবার দাবী করতো সেটা হতো অত্যন্ত যৌক্তিক একটি দাবী। ইসলাম আরব প্যাগনদের অর্থ্যাত মুহাম্মদের বাপ দাদার ধর্মটিকে নিশ্চিহৃ করে ফেলেছিলো। প্যাগনদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় পরব হজ, বছরে একবার কাবাঘরে এসে তীর্থ করে যাওয়া- এই পুরো জিনিসটি ইসলাম হাইজ্যাক করে নেয়। ইহুদীদের খুশি করতে ইহুদীদের পূর্ণভূমি জেরুজালেমের বাইতুল মোকাদ্দেস বরাবর নামাজ পড়ত মুহাম্মদ। প্রথম দিকে মুহাম্মদ ইহুদীদের অনেক প্রশংসা করতেন। তার আশা ছিলো এতে ইহুদীরা তাকে নবী হিসেবে স্বীকৃতি দিবে। সেটা না হওয়ার কারণে মুহাম্মদের ইহুদী প্রেমও মরে যায়। উল্টো ইহুদী রাব্বিরা এসে তাকে নবী যাচাইয়ের প্রশ্ন করে তাকে সত্য নবী হিসেবে অস্বীকৃতি দেবার পর তিনি ক্ষু্ব্ধ হয়ে পড়েন। ফলে মদিনার ইহুদীদের নানা রকম গায়েবী ষড়যন্ত্রের দাবী করে তাদের মদিনা থেকে উচ্ছেদ করতে থাকেন। মদিনায় ইহুদী জেনোসাইড হাদিসের পাতায় পাতায় ভর্তি।

জেরুজালেমের সঙ্গে আরবের মক্কা-মদিনার লোকজনের সম্পর্ক সেকালে গড়ে উঠা স্বপ্নেও সম্ভব ছিলো না। মরুভূমির উপর দিয়ে দেড় হাজার কিলোমিটার দুরত্বের জেরুজালেমের সঙ্গে আরবদের না ছিলো ব্যবসায়ী সম্পর্ক না ছিলো ধর্মীয় উত্তরাধিকার। ইসলাম ধর্মটির জন্ম মক্কা নগরিতে। এখানে বসে কেউ যদি অদেখা অজানা লোক মুখে শুনে জেরুজালেমের একটি মন্দির বরাবর মাথা ঠেকাতে শুরু করে তাতেই কি সে স্থানটি তাদের হয়ে যাবে? এতটাই তাদের যে অন্য যারা এখানে তাদের প্রধান তীর্থ বানিয়েছে হাজার বছর ধরে তাদের দাবীই হয়ে যাবে গৌণ?

বিষয়টি হচ্ছে কী, ভারতের হিন্দুদের কাছে গয়া-কাশি হচ্ছে মুসলমানদের মক্কা মদিনার মত। সেই কাশিতে কোন আক্কেলে জ্ঞানবাপী নামের একটা মসজিদ মুসলিম শাসকরা বানালো? ভারতে “মুসলিম শাসন” যদি আজকে পর্যন্ত জারি থাকতো, তাহলে এই ২০২৩ সালের শুক্রবারগুলিতে কেবলমাত্র জ্ঞানবাপী মসজিদে জুম্মা পড়তে লক্ষ লক্ষ মুসল্লি জড়ো হতো। ফলে কাশি যে হিন্দুদের প্রধান তীর্থ সেটি চাপা পড়ে হয়ে যেতো মুসলমানদের অন্যতম তীর্থ! হিন্দুদের কাছে দেখাতে, তাদের উপর আধিপত্য সৃষ্টিতে, যেমনটা আল আকসায় ভোরবেলার নামাজ ফজরের সময় এক লক্ষ মুসলমান নামাজ পড়তে একসঙ্গে ‘আল্লাহ আকবর’ তাকবির পড়ে- যাতে ইহুদীদের তীর্থে তাদের আল্লার নাম প্রধান হয়ে উঠে, চিন্তা করেন ইহুদীদের প্রধান তীর্থে মাইকে পাঁচবেলা আজান হবে- একজন বিশ্বাসী মুসলমান হিসেবে বুকে হাত দিয়ে বলেন তো এটা আপনি মক্কা-মদিনা দূরে থাক- আজমীর শরীফের মত কোন পীরের দরগায়ও মেনে নিতে পারবেন? ফিলিস্তিনি মসজিদগুলির মাইকগুলো ইজরাইল মুখী করে বসানো হয়। ইজরাইল সীমান্ত এলাকায় আজানের সময় একটা আতংকের সৃষ্টি হয়। ইউরোপ থেকে ইজরাইল ভ্রমণকারীদের ভোররাতের অভিজ্ঞতা ছিলো ভয়াবহ। তারা শত শত মাইকে শেষরাতের নিরবতা ভেঙ্গে বিকট চিত্কারের জেগে উঠে ভীত হয়ে পড়েছিলো...। জ্ঞানবাপী মসজিদ থেকেও মাইকে আজান হয় ‘দেবনগরী’ কাশিতে। মুসলমানরা অন্যদের প্রধান তীর্থস্থানে মসজিদ বানিয়ে বসে আছে। কিন্তু কাবার আশেপাশে কেউ মন্দির গির্জা কিচ্ছু বানায়নি। গির্জাকে মসজিদ বানানো, মন্দিরকে মসজিদ বানানোর ইতিহাস তো কেউ গায়ের জোরে অস্বীকার করতে পারবে না। মুসলমানদের ও শিক্ষিত মুসলিম লীগারদের অঘোষিত সুলতান এরদোয়ান হাইয়া সোফিয়া গির্জাকে মসজিদ বানিয়ে চালু করলেও বিশ্বে কোথাও বাবরী মসজিদের মত আলোড়ন সৃষ্টি করেনি। কারণ “মুসলিম লীগ” সক্রিয়। পৃথিবীতে এ একটি ধর্মই আছে যারা জাতীয়তাবাদী সাম্রাজ্যবাদ প্রচার করে। ফিলিস্তিনের স্বাধীনতা সংগ্রাম বহুকাল আগেই এই উগ্র জাতীয়তাবাদী সাম্রাজ্যবাদের হাতে চলে গেছে। আর বাঙ্গু ফিলিস্তিনিপ্রেমীদের সকলেই সেই জাতীয়তাবাদ ও সাম্রাজ্যবাদের অনুরাগী। এখানে তাই কখনোই ইহুদী ও ইজরায়েল সম্পর্কে কোন ন্যায্য কথা কেউ বলবে না। সত্যনিষ্ঠতা এখানে আশা করা ভুল।

©সুষুপ্ত পাঠক

0/Post a Comment/Comments

যুক্তি সংগত কথা বলুন.................

Stay Conneted