বাংলাদেশ ভূখণ্ডে 'ইসলাম' আসার পূর্বে নিশ্চই এখানে সবাই হিন্দু এবং সনাতনী ধর্মের ছিল?

বাংলাদেশ ভূখণ্ডে 'ইসলাম' আসার পূর্বে নিশ্চই এখানে সবাই হিন্দু এবং সনাতনী ধর্মের ছিল? আর হিন্দু বা সনাতনীরাই ছিল বাঙালি সংস্কৃতির মূল ধারক বাহক একটি জাতি গোষ্ঠী! পরে বখতিয়ার খলজির আক্রমণের মাধ্যমে যখন এই অঞ্চলে 'মুসলমানাইজেশন' প্রক্রিয়া শুরু হয়! তখন ধীরে ধীরে সনাতনী হিন্দু বাঙালিরা শুধু ধর্মটাই 'পরিবর্তন' করে 'মুসলমান' হয়েছে মাত্র! কিন্তু নিজস্ব 'বঙ্গীয় সংস্কৃতি' তারা আদৌ ত্যাগ করেনি! বা করতে পারেনি! 

কারণ জাতিগত 'সাংস্কৃতিক' পরিচয় কোনো শাসকের তলোয়ারের কোপাকুপি দ্বারা তৈরী হয়না! ঠিক তেমনি এটি তলোয়ারের ভয়ে বিলুপ্তও হয়না! 'সংস্কৃতি' হলো একটা জাতির নৃ গোষ্ঠীও পরিচয়ের সাথে কানেক্টেড একটি ফেনোমেনা! এটির সাথে ধর্মের কুনু সম্পর্ক নেই! পৃথিবীতে হাজার হাজার ধর্ম 'বাটপার'রা তৈরী করেছে নিজ ক্ষমতার স্বার্থে! অতঃপর অসংখ্য ধর্ম বিলুপ্তও হয়েছে! কিন্তু 'সংস্কৃতি' কুনু ধর্মগুরুরা বা 'আইডিওলোজি' দ্বারা তৈরী হওয়ার বিষয় নয়! 'সংস্কৃতি' ধীরে ধীরে গড়ে উঠে মানুষের নৃতাত্বিক বৈশিষ্ট, মনন, ঐতিহ্য, কৃষ্টি ও অভ্যাসের অনুষঙ্গ দ্বারা বিভিন্ন জাতি ও উপজাতী পরিচয়ে! 

আরব জাতি খুবই 'ভাগ্যবান' এই অর্থে যে, তারা 'ইসলাম' ধর্মে রূপান্তরিত হওয়ার পরেও! তাদের হাজার বছরের পুরোনো আরবীয় সংস্কৃতির এক চুল পরিমানও 'পরিবর্তন' করতে হয়নি! কারণ ইসলাম ধর্ম তৈরী হয়েছে আরব সংস্কৃতির ভিতর থেকেই! ঠিক একইভাবে, আল্লাফাক যদি নবীকে বাংলাদেশে পাঠাইতেন! তাহলে কোরানের ভাষা হতো বাংলায়! পবিত্র ফল হতো আম অথবা কাডল! বেহেস্তি মাছ হতো পদ্মার ইলিশ! জান্নাতের হুরদের পরনে থাকতো সোনা রুপার সুতা দিয়ে তৈরী ঢাকার মসলিন শাড়ি, ইত্যাদি কাহিনী! 

আর পয়লা বৈশাখ বা মঙ্গল শোভাযাত্রাকে হয়তো আল্লাহ একটি 'বেহেস্তি' উৎসবের মর্যাদাও দিয়ে দিতেন! আর এতে নবীপাক থাকতেন মঙ্গল শোভাযাত্রার পুরোভাগে, এগারো বিবি সমেত (অবশ্য বোরকা পরিয়ে) দাসী সহ, হাতে থাকতো লেম (কুপি) অথবা মশাল বাত্তি!

মুমিনরা এই লেখাটি পড়ে যদি বুঝতে ভয়ঙ্কর অসুবিধা হয়, কাঁডালপাতায় দুয়েকটা একস্ট্রা কামড় দিয়েন! হয়তো আল্লার রহমতে কিছুটা বুঝে ফেলতেও পারেন!!..

0/Post a Comment/Comments

যুক্তি সংগত কথা বলুন.................

Stay Conneted