হিন্দু পুন:র্জাগরনে সলিমুল্লা খাঁনেরা দিশেহারা।

হিন্দু পুন:র্জাগরনে সলিমুল্লা খাঁনেরা দিশেহারা।
✍️✍️✍️✍️✍️✍️✍️✍️✍️✍️✍️✍️

সুষুপ্ত পাঠকের থাপ্পড়টা সলিমুল্লা খাঁনের গালে বেশ ভালো ভাবেই লেগেছে বলে মনে হচ্ছে।সলিমুল্লা খাঁন বলেছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য নবাব সলিমুল্লা জমি দিয়েছিলেন কোন হিন্দুর জমিতে বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে উঠেনি।কিন্তু তার কথা বুমেরাং হয়েছে।নবাব সলিমুল্লা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য কোন জমি দেননি।কারণ মৃত মানুষতো আর জমি দিতে পারেনা।নবাব সলিমুল্লার মৃত্যু হয়েছিল ১৯১৫ সালে আর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল ১৯২১ সালে।এই মিথ্যা কথাটি সলিমুল্লা খাঁন  জাতিবিদ্বেষে উদ্বুদ্ধ হয়ে বলেছিলেন।

প্রকৃত সত্য হলো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল সরকারি খাস জমি এবং কিছু হিন্দু জমিদারদের দান করা জমিতে।সলিমুল্লা খাঁনের উদ্দেশ্য ছিল হিন্দুরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য কিছু করেনি এটা প্রতিষ্ঠিত করা।সলিমুল্লা খাঁন ভুলে গিয়েছেন তার পূর্বপুরুষরাও
এক সময় হিন্দু ছিলেন।তিনি নিজেও হিন্দুদের প্রতিষ্ঠিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে লেখাপড়া করে শিক্ষিত হয়েছেন।সারা জীবন কাফের নাসারাদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে  শিক্ষালাভ করে এখন তার মনে হয়েছে ইউরোপের সব বিশ্ববিদ্যালয় একসময় মাদ্রাসা ছিল।

যে সময় সারা পৃথিবীতে হিন্দু পুন:র্জাগরনের ঢেউ আছড়ে পড়েছে চারিদিকে হিন্দুদের জয়গান।আন্তর্জাতিক পরিসরে বানিজ্যি অর্থনীতি রাজনীতি এবং প্রযুক্তিগত প্রতিষ্ঠানগুলোর শীর্ষস্থান যখন ভারতীয় হিন্দুদের দখলে তখন সলিমুল্লা খাঁনের মতো একজন হিপোক্রেট মাঠে নেমেছে হিন্দু ঐতিহ্যকে কালিমালিপ্ত করার জন্য।

যে মহর্ষি কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর সারা বিশ্বে বাঙালির আত্মপরিচয় ঐতিহ্য এবং সাহিত্যকে পরিচয় করিয়েছেন সেই মহান ব্যাক্তির নামে নানান কুৎসা রটিয়ে বাঙালির আজন্ম লালিত পরম্পরাকে ধূলোয় মিশিয়ে দিতে চায় শুধু ধর্মের নামে।অথচ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর একজন অসাম্প্রদায়িক কবি হিসাবে পরিচিত।ভারত বাংলাদেশ এবং শ্রীলঙ্কার  জাতীয় সঙ্গীতের লিখক রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।

সেই কবিকে কালিমালিপ্ত করার জন্য বলা হলো তিনি নাকি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠায় বিরোধিতা করেছিলেন।প্রমাণ হিসাবে বলা হলো ১৯১২ সালের ২৮শে মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে কলকাতার গড়ের মাঠে এক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছিল।সেই সমাবেশের সভাপতি  নাকি রবি ঠাকুর ছিলেন।এই বিতর্ক প্রথম উত্থাপিত হয়েছিল ২০০০সনে মেজর জেনারেল এমএ মতিনের লিখিত আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রামের ধারাবাহিকতা সম্বন্ধে কিছু কথা নামে একটি  গবেষণা মূলত প্রবন্ধে।সেখানে বলা হয়েছে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর সেই সভায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠায় বিরোধিতা করেছিলেন। 

সত্য ঘটনা হলো ১৯১২সালের ২৮শে মার্চ রবি ঠাকুর কুষ্টিয়ার শিলাইদহে ছিলেন এবং ১২ই মার্চ পর্যন্ত তিনি  সেখানে ছিলেন।সেই সময় রবি ঠাকুর অসুস্থ ছিলেন যারজন্য ১৯শে এপ্রিল তার ইংল্যান্ড সফর বাতিল করতে হয়েছিল।১৯২১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর পূর্ববঙ্গের বিভিন্ন পন্ডিতগন রবি ঠাকুরকে আমন্ত্রন জানিয়েছিলেন।১৯২৬সালে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ঢাকায় এসেছিলেন।ড:বিশ্বজিৎ ঘোষের লিখা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর প্রবন্ধে বলা হয়েছিল রবিঠাকুরকে সেদিন ঢাকার মানুষ আন্তরিকভাবে স্বাগত জানিয়েছিলেন।সম্বর্ধনা দিয়েছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ ও মুসলিম হল ছাত্র পরিষদ।১৯৩৬ সালের ২৯শে জুলাই  ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কাউন্সিল এক বিশেষ সমাবর্তন অনুষ্ঠানে রবিঠাকুরকে ডিলিট প্রদান করেছিল।যে ব্যক্তি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠায় বিরোধিতা করেছিলেন তাকে আমন্ত্রন করে কি সম্বর্ধনা এবং ডিলিট প্রদান করা যায়? এই কথাটি সলিমুল্লা খাঁনেদের মগজে ঢুকবে না কারণ তারা পাকিস্তানের প্রেতাত্মা ধর্মান্ধ।

এবার তার অনুগামীরা বলতে শুরু করেছে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর নজরুলের লেখা চুরি করে নোবেল পেয়েছিল।রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর নোবেল পান ১৯১৩ সালে।তখন কবির বয়েস ৫২এবং কাজী নজরুল ইসলামের বয়স মাত্র ১৪।তখনও তার একটি কবিতাও প্রকাশিত হয়নি।নজরুলের বিদ্রোহী কবিতা প্রকাশিত হয়েছিল ১৯২১সালের ডিসেম্বর মাসে।তখন তার উপন্যাস বাধনহারা,ব্যাথার দান এবং অল্প কিছু কাব্যগ্রন্থ বাহির হয়েছিল।

জন্মসূত্রে নজরুল বাংলাদেশের লোক নন।তারপরও তার লেখা কেন বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রেক্ষাপটে রচিত হয়েছিল সে কথা কেউ বলে না।আসলে উদ্দেশ্য হলো জাতি বিদ্বেষ টেনে এনে ধর্মের বেড়াজালে রবিঠাকুরকে অসম্মান করা।এর শেষ পরিনতি যে কোথায় আমরা কেউ জানিনা।

0/Post a Comment/Comments

যুক্তি সংগত কথা বলুন.................

Stay Conneted