গাঁধি ও বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য বানিয়ে সন্মান জানিয়েছে পশ্চিমবঙ্গ।

এটা কোলকাতার শিয়ালদা স্টেশনের ছবি। গাঁধি ও বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য বানিয়ে সন্মান জানিয়েছে পশ্চিমবঙ্গ। কোলকাতার কোন পার্টির লোকই বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য বানানোর জন্য বলেনি রাজ্যকে বাংলাদেশের করদরাজ্য করা হয়েছে! উল্টোটা যদি হতো? বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের বিশাল অবদানের জন্য শ্রীমতি ইন্দিরা গাঁধির একটি ভাস্কর্য বানানো হলে বাংলাদেশ যে ভারতের অঙ্গরাজ্য হয়ে গেছে তার মাতম চলত!

চিন্তা করা যায় বাংলাদেশের জন্মের জন্য সে মানুষটি সারা বিশ্ব রাজনীতি চষে বেরিয়েছেন তার প্রতি বাংলাদেশ সামান্য কৃতজ্ঞতা জানায়নি! তার নামে নেই কোন স্বীকৃতি! অথচ শেষবার বঙ্গবন্ধু যুবক বয়সে যখন কোলকাতা ছেড়ে আসেন তার ইমেজ কিন্তু সেখানে ভালো ছিল না। ডাইরেক্ট একশান ডে’র রাতে তিনি থানায় সোহরাওর্দির সঙ্গে অনেকরাত পর্যন্ত ছিলেন। কোলকাতা সেকথা মনে রাখেনি। উল্টো ৭১ সালের কোলকাতা দূর্গা পূজার থিমে শেখ মুজিবকে স্থান দিয়ে তারা সন্মান জানিয়েছে। কোলকাতার উদার মনোভাবের কথা বললেই সেটা এখন ভারতপ্রীতি হবে!

ভাবুন তো, দেশভাগে উচ্ছেদ পূর্ববঙ্গের হিন্দুরা সহায় সম্বলহীন উদ্বাস্ত হয়ে তখন কোলকাতায় গিজগিজ করছিল। মাত্র ২৩ বছর হয়েছে তখন দেশভাগ। একটা পুরো জেনারেশন তখনো দেশভাগের কারণে প্রতিদিন কোলকাতার জীবনে মূল্য দিচ্ছে। তাদের কাছ থেকে পূর্ব পাকিস্তানের মুসলমানদের রাজনৈতিক এই সংকটে কেমন আচরণ আশা করা যায়? যদি বাঙালি মুসলমান দেশভাগের কারণে উচ্ছেদ হতো আর হিন্দুরা কোন কারণে তাদের দেশে উদ্বাস্তু হতো কেমন আচরণ ছফা-সলিমুল্লাহরা করত?

ভারতীয় পণ্য বয়কটের এই সময় কোলকাতায় বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য দুই বাংলার মানুষের মানসিকতার তফাত পরিস্কার করছে।

একটা অপ্রিয় তিতা সত্য বলে লেখাটা শেষ করি। বঙ্গবন্ধুর কোন ভাস্কর্য একদিন বাংলাদেশে থাকবে না। এদেশের মুসলমান ১০০ ভাগ হলেই মূর্তি ভাস্কর্য উচ্ছেদ হবে। কোলকাতার শিয়ালদা স্টেশন ও বেকার হোস্টেলের বঙ্গবন্ধু ভাস্কর্যটাই থাকবে শেষপর্যন্ত কারণ কোলকাতা মুসলমানদের শহর হবে না! তাই শিল্প ভাস্কর্য গান সংগীত ছবি কবিতা উপন্যাস এখানেই থাকবে। অন্তত পশ্চিমবঙ্গ আফগানিস্থান হবে না হিন্দু সংখ্যাগরিষ্ঠতার কারণেই। এই সত্য কি সহ্য হবে?

©সুষুপ্ত পাঠক

0/Post a Comment/Comments

যুক্তি সংগত কথা বলুন.................

Stay Conneted