বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা একটা অপ্রিয় সত্য বলেছে ফেলেছে, তারা বলেছে, সুদান বিষয়ে বৈশ্বিক আগ্রহ খুব কম! অ্যামনেষ্টি ইন্টান্যাশনালও বিস্ময় নিয়ে বলেছে, সুদান নিয়ে বিশ্বের আগ্রহ কম! অথচ দেড় লাখ সুদানিকে মেরে ফেলা হয়েছে! দেড় কোটি সুদানি বাস্তুচ্যুত। এটাকে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় মানবিক সংকট বলছে জাতিসংঘ। এতবড় মানবিক বিপর্যয় কিন্তু কবিরা কবিতা লিখছে না, গায়ক গাই গাইছে না, কলামিস্ট কলাম লিখছে না- কারণ বাজার নেই! সুদানের সবাই মুসলমান, এই সংঘাত নিয়ে তাই কারোর আগ্রহ নেই। সুদানে ২ কোটি ৪০ লাখ মানুষ খাদ্য নিরাপত্তার বাইরে অথচ দুদিন আগেও গাজায় খাদ্য নেই বলে আহাজারী করা লোকগুলো এখন পুটুতে আঙ্গুল দিয়ে বসে আছে!
বিশ্ব বামাতী বুদ্ধিজীবীদের কারোর সুদান নিয়ে আগ্রহ নেই। আরব আমিরাতের প্রিন্স ও মিসর সুদানের গণহত্যার দুই পক্ষকে মদত দিচ্ছে। কিন্তু নেতানিয়াহুকে নিয়ে গালি দিলে বাজার চাঙ্গা হয়ে উঠে তাই আমিরাতের বাদশাহকে কেউ কসাই বলবে না! কেউ আমিরাতের পতাকায় আগুন দিবে না! সুদান পৃথিবীর সবচেয়ে বড় মানবিক বিপর্যয় ঘটেছে দুটি মুসলিম দেশের মদতে তাই অরুন্ধতী বা অভিনেতা প্রকাশ রাজ এসব নিয়ে কোন কথা বলবেন না। রাস্তায় রাস্তায় নিরহ সুদানিদের মেরে ফেলে রাখা হয়েছে, অ-আরব মুসলমানদের উপর জাতিগত নিধন ঘটছে কিন্তু সেসব ছবি ভিডিও’র বাজার খুবই খারাপ! ছবি ও ভিডিওগুলো জমা করে রাখা হয়েছে ভবিষ্যতে রোহিঙ্গা বা গাজায় গণহত্যার বলে চালিয়ে দেয়া যাবে!
আফগানিস্থান ইরাক সিরিয়াতে বিগত দশকে যে পরিমাণ মন্দির ও গির্জা ইসলামিক মিলিশিয়া গ্রুপগুলো ধ্বংস করেছে তার বাজার ছিল খুবই নিস্প্রভ। কিন্তু ভারতের পরিত্যাক্ত বাবরী মসজিদ, যেটিতে তখন কেউ নামাজ পড়ত না- সেটিকে উগ্র হিন্দুত্ববাদীরা ভাঙতে গেলে বিশ্ব বাজারে এমন শোরগোল উঠে যে আজো ভারতকে বিশ্ব বাঁকা চোখ দেখে। অথচ খুবই সম্প্রতিকালে হাইয়া সোফিয়া গির্জাকে মসজিদ বানিয়ে ফেলার ঘটনায় বিশ্ব লিবারেল ও বামাতী সম্প্রদায় শীত ঘুমের আগে হাই তোলার কাজে ব্যস্ত ছিল।
বাংলাদেশের গণসংগীতের কিং ফকির আলমগীরকে দেখেছি ফিলিস্তিন নিয়ে গান গাইত, মেন্ডেলাকে নিয়ে গান বানাতো, কিন্তু কোনদিন নিজ দেশের পাহাড়ে অন্যায় অবিচার নিয়ে গান বানায়নি! নিজ দেশের সংখ্যালঘু নিপীড়ন নিয়ে গান বানায়নি। কারণ গানের বাজার দর আছে। সব বিষয় নিয়ে গান বানালে বাজার খাবে না!
নিরহ সুদানিদের জন্য দুঃখ প্রকাশ করা ছাড়া আর কিছু করার নেই। পৃথিবীতে মুসলমানরা একটি সেনাবাহিনীর অধিনে উম্মাহ চেতনায় বিশ্বাস করে। তার উপর তাদের আরব বিশ্বে আছে তেল ও সোনার খনি। আরব শেখদের কারণেই মুসলমান ইস্যুতে বৈশ্বিক হাইপ উঠে বেশি। ফলে মুসলিমফোবিয়া, ইসলাম বিদ্বেষ, ফিলিস্তিনি, রোহিঙ্গা নিয়ে লেকচার দিলে বাজার ধরা যায়। কিন্তু দুটি মুসলমান যখন কাটাকাটি খেলে তখন বাজার পড়ে যায়! সুদানের পড়ে গেছে!
©সুষুপ্ত পাঠক

Post a Comment
যুক্তি সংগত কথা বলুন.................