গান্ধির একজন সহযাত্রী তাঁর দৈনিক খাদ্য তালিকা দেখে তাঁকে প্রশ্ন করেছিলেন তাঁর খাবারের মূল্য কি ৬ পয়সা?

গান্ধীজির খাওয়া দাওয়া
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
মানুষের কাছে গান্ধীজি ছিলেন দরিদ্র ভারতের প্রতীক। এখানে অধিকাংশ মানুষের বলতে গেলে লজ্জা ঢাকার মত বস্ত্র মেলে না। চরম দারিদ্র্যের মধ্যে দিন কাটে, নুন আনতে পান্তা ফুরায়। এই অবস্থায় কী করে তিনি ভালো পোশাক পরেন? কী করেই বা ভালোমন্দ খান? পোশাকের কথা তো বলা হয়েছে এবং সবাই তা দেখতেও পান। এবার আমি তাঁর যৎসামান্য খাদ্য তালিকার কথা বলব-

প্রার্থনার সময় তিনি হাততালি দিতেন। তিনি আখরোট এবং বাদাম খেতেন। সকালে সাড়ে পাঁচটার সময় তিনি ১৬ আউন্স লেবু অথবা মুসাম্বির রস খেতেন। সকাল সাতটার সময় ১৬ আউন্স ছাগলের দুধ এবং ৮ আউন্স লেবু অথবা মুসাম্বির রস খেতেন। বারটার সময় ১৬ আউন্স ছাগলের দুধ জ্বালিয়ে এবং চার আউন্স তৈরি করে খেতেন। ৫ থেকে ৮ আউন্স রান্না করা সবজি খেতেন। কাচা সবজি খেতেন যেমন— টমেটা, গাজর, ইত্যাদি ৮ আউন্স। সবুজ পাতার সালাদ খেতেন যেমন—পালং অথবা ধনে পাতা ২ আউন্স। দুটার সময় তিনি এক গ্লাস ডাবের জল খেতেন। বিকেল পাঁচটার সময় ১৬ আউন্স ছাগলের দুধ জ্বালিয়ে চার আউন্স তৈরি করে খেতেন। ১৯ আউন্স খেজুর দুধে জ্বাল দিয়ে খেতেন। কিছু ফল খেতেন তাঁর মধ্যে নারকেলের শাঁসও ছিলো। প্রায়ই তিনি আধঘন্টা শুয়ে থাকতেন তলপেটে মাটির আস্ত্ররণ দিয়ে এবং কপালে ন্যাকড়ায় জড়ানো ঠাণ্ডা মাটির পুল্টিস দিয়ে।

গান্ধির একজন সহযাত্রী তাঁর দৈনিক খাদ্য তালিকা দেখে তাঁকে প্রশ্ন করেছিলেন তাঁর খাবারের মূল্য কি ৬ পয়সা? তিনি গান্ধীর কঠর সমালোচনা করে বলেছেন তিনি কেন গরিবের মত জীবনযাপন করছেন না। খাবার সময় তিনি এক সেট নকল দাঁত ব্যবহার করতেন। তিনি দীর্ঘ দিনের আমাশায়ের রোগে ভুগছিলেন। তাঁর উচ্চ রক্ত চাপ ছিল এবং কপালের নাড়ী ধড়ফড় করত যা তাঁকে খুব কষ্ট দিত।

শ্রী প্রকাশ একজন ঘনিষ্ট গান্ধীভক্ত, তিনি লিখেছেন- গান্ধীজি যখন কাছের কোন অঞ্চলে যেতেন তখন অতিথি সেবকদের তাঁর জন্য ছাগলের দুধ সংগ্রহ করতে বেশ অসুবিধ হত। কারণ ছাগলের দুধের দাম বেশি ছিল। আমি যদি ঠিক মত স্মরণ করতে পারি, তাঁর জন্য প্রতিদিন তিন সের দুধ লাগত এবং আমি আরো স্মরণ করতে পারছি যে, আমাকে প্রতি সের দুধের দাম দিতে হত তিন টাকা করে। গান্ধীজির জীবনযাত্রা সাদাসিধে মনে হলেও, ব্যয়বহুল ছিল এবং

সরজীনি নাইডু একদিন গান্ধীজিকে বলেছিলেন ‘বাপু, আপনাকে দারিদ্র্যের মত রাখতে অনেক অর্থ ব্যয় করতে হচ্ছে’।

উপরোক্ত তালিকার বাইরে তিনি প্রতিদিন মধু খেতেন এবং গুজরাটি রুটি খেতেন। ঘি দিয়ে পা মালিশ করাতেন।

এই হচ্ছেন গরিবের প্রতিভূ গান্ধী মহারাজ। অনেক জিনিসেরই আসল সত্য ধীরে ধীরেই প্রকাশ পায়। গান্ধীজির অপকর্মও এখন এই ভাবে একের পর এক প্রকাশিত হচ্ছে। গান্ধী মিথ ভেঙ্গে যাচ্ছে।
----------------------------------------------------------

সূত্র :

বই : গান্ধীজির অপকর্ম - লেখক- অলোককৃষ্ণ চক্রবর্তী

0/Post a Comment/Comments

যুক্তি সংগত কথা বলুন.................

Stay Conneted