করুনা ভাইরাস সংক্রমিত হচ্ছে হিউম্যান টু হিউম্যান।

অনেকেই বলছেন করুনা ভাইরাসে আক্রান্ত  চায়নার উহান  থেকে আটকে পড়া ছাত্রদের কেন ফিরিয়ে আনছে না সরকার? 
উদাহরণ স্বরূপ তারা বিভিন্ন দেশের সরকারের পদক্ষেপ তুলে ধরেছেন এবং আবেগের বশবর্তী হয়ে যার যার মতো করে বিভিন্ন সাজেশন দিয়ে যাচ্ছেন তাদের বলছি শুনুন.....


করুনা ভাইরাস সংক্রমিত হচ্ছে হিউম্যান টু হিউম্যান।  মানে এটা যেকোনো আক্রান্ত ব্যক্তি দ্বারা অন্য ব্যক্তি আক্রান্ত হচ্ছে। 
এমনকি এই রোগের প্রকোপ যখন দেখা দেয়, তখন কি হচ্ছে কিছু বুঝে উঠার আগেই অনেকে অলরেডি আক্রান্ত হয়ে গেছে। 
সেই সাথে তাদের চিকিৎসক এবং নার্স রা ও আক্রান্ত হয়েছে। 

প্রাইমারী ভাবে যেসব দেশ তাদের নাগরিক দের স্বদেশে ফিরিয়ে আনে, সেসব দেশ ও এখন আক্রান্ত।  যেমন- সিঙ্গাপুর, ফিলিপাইন, ভারত,ফ্রান্স এবং আমেরিকা। 

এই মুহূর্তে চীন ওই উহান শহর কে লকডাউন করে দিয়েছে।  মানে ওই শহরের সাথে পাশ্ববর্তী অন্যান্য শহরের কোন যোগাযোগ নেই। তারপর ও অন্তত ১২ টি শহরে এই ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর দেখা মিলছে। আর তাই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা WHO এটাকে এপিডেমিক হিসেবে ঘোষণা দিয়েছে চীনের জন্য। 

অর্থাৎ খোদ চীনারাই ওই শহরে যাওয়া আসা করতে পারবে না রোগ ছড়িয়ে পড়ার আশংকায়।  অন্তত ততদিন পর্যন্ত না, যতদিন না কর্তৃপক্ষ এটাকে নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম হবে। 

যারা ভাবছেন প্লেইনে করে নিয়ে কেন আসে না... তাদের বলছি...  অবস্থা এখন আর প্লেইনে চড়ানোর মতো নেই।
যে প্লেইনে চড়বে, সে প্লেইনের সবাই ভাইরাসে সংক্রমিত  হবে। কারন এটা হিউম্যান টু হিউম্যান ইনফেক্টেড ভাইরাস।
দ্বিতীয়ত, দেশে আসার পর তাদের সংস্পর্শে যারাই আসবে তারাই সংক্রমিত হবে।

আর ভাইরাস ছড়িয়ে পরা মানেই মৃত্যু না,এইটা ভাইরাল রোগের মত ফ্লু লাইক সিম্পটম করে সেরেও যাচ্ছে অনেকের। যেমনটা আমাদের দেশে ডেংগু মহামারীর সময় দেখেছেন। কিন্তু যাদের অভ্যন্তরীণ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দূর্বল,  তারাই মারা পরবে। প্লাস তাদের কাছ থেকে তা দ্রুত চারদিকে অনেক মানুষে ছড়িয়ে পরবে। এবং ওই তাদের কাছ থেকে আরো অনেকের।
এটা অনেকটা এটম বোমার মতো। কিন্তু চোখে দেখার উপায় নাই।  

যেহেতু নতুন ভাইরাস,অনেক কিছুই অজানা! তাই নিশ্চিত হবার জন্য উহান শহর লক ডাউন সাথে বাকি পুরো চীনে থার্মো-চেক ছাড়া বিমানবন্দর পার হতে দিচ্ছে না চায়না। বুঝতেই পারছেন এ ছাড়া উপায় নেই।

যেহেতু উহান লক-ডাউন,চাইলেও দূতাবাস এদের বাইরে আনতে পারবে না,শুধু বাংলাদেশ না,সব দেশের জন্যই একই কথা। আইসোলেশনে রাখা শহর থেকে কাউকেই বের করা সম্ভব না। 

এই ব্যাপার টা আরো সহজভাবে ব্যাখ্যা করেছেন ডাঃ মৌরি! 

// আপনাদের  বুঝার  জন্য সহজ ভাবে বলি,এই ছাত্রদের  ধরেন এখন দেশে আনা হল, এদের অনেকেই এখন সংক্রমিত কিন্তু আক্রান্ত নয়। দেশে আসার পর তাদের জীবানু দ্বারা তাদের বাবা সংক্রমিত হল,যে বাবার বয়স ৭০,  যার ডায়াবেটিস আছে এবং বুকে এই শীতে ঠান্ডা কাশি ,এই লোকটি তার উহান-ফেরত সংক্রামিত কিন্তু আপাত সুস্থ ছেলেটি দ্বারা সংক্রামিত হয়ে আক্রান্ত হয়ে মারাও যেতে পারে।

আক্রান্ত হতে পারে পারে তাদের বাসার ছোট শিশুটি অথচ উহান থেকে আসা ছাত্রটি কিন্তু সুস্থ থাকবে। 

সংক্রামন আর আক্রান্ত হওয়ার মাঝে  বিশাল পার্থক্য। উহানে থাকা আমাদের ছাত্ররা এখনো কেউ আক্রান্ত নয় কিন্তু তাদের প্রায় প্রত্যেকেই কিছু না কিছু পরিমানে সংক্রামিত! ( হয়তো) 

এদের কেউ যদি করে দেশে আনার দুই তিনদন পর আক্রান্ত/রোগের লক্ষণ শুরু হয়,আমারা কিন্তু ততোটা চিকিৎসা সাপোর্ট সেই স্টুডেন্টকে দিতে পারব না কারণ আমাদের এই ভাইরাসে আক্রান্তদের চিকিৎসা দেয়ার পূর্ব অভিজ্ঞতা নেই!  যেটা চীনের উহানের বা অন্য হাসপাতালের হয়েছে! ওরা নিশ্চয় চিকিৎসা -প্রটোকল ও তৈরী করেছে! 

এমন করে ফেসবুকে বা নিউজ করে সরকারকে চাপ দেয়া আসলে কিছুটা অযৌক্তিক এখন কারণ চায়না গভঃ এর নির্দেশ ছাড়া লক-ডাউন শহর থেকে কাউকে বের  করার কোন অনুমতি নেই, সেটা যারা ভেতরে আছে আর বাইরে থাকা সারা পৃথিবীর মানুষের জন্যই ভাল। 

শহরে থাকা মানুষদের সহযোগিতায় এই ভাইরাস এর ছড়িয়ে পরা ওইখানেই থামিয়ে দেয়া সম্ভব ছিল,যেটা বুঝতে দেরী হওয়ায় উহান থেকে মানুষ হংকং,আমেরিকা,অস্ট্রেলিয়া,নেপাল ভারতে ফেরত এসেছে এবং কেউ সংক্রমন নিয়ে,কেউ আক্রান্ত হয়ে। 
দেরীতে হলেও বুঝতে পারার পর চায়না উহান লক ডাউন করেছে,যেটা সংক্রমন অনেকটাই কমাবে। 
আমাদের একটু সময় দেয়া উচিত ওদের। // 

তাই এই চাপ না দিয়ে বরং দূতাবাস যেন সার্বক্ষনিক তাদের সহযোগিতা করার জন্য চায়না সরকারকে রিকুয়েস্ট করে এটাই এই মুহুর্ত্বে কাম্য।

(তথ্যসূত্রঃ ডঃ মৌরি)

0/Post a Comment/Comments

যুক্তি সংগত কথা বলুন.................

Stay Conneted