প্রসঙ্গ: ধর্ম ও রাজনীতি।
ধর্ম রাজনীতির বড় হাতিয়ার। মানুষকে সহজে শোষন-শাসন করার প্রয়োজনেই ধর্মের উৎপত্তি।রাষ্ট্রের ধারনার পূর্বে বা মানুষ সমাজবদ্ধভাবে বসবাস শুরুর আগে কোন ধর্মেরই সৃষ্টি হয় নি।কিন্তু তখনও পৃথিবীর নানা প্রান্তে মানুষ ছিল।
আশ্চর্যের বিষয় হচ্ছে, এই একবিংশ শতাব্দীর বিজ্ঞানের চরম উৎকর্ষতার যুগেও ধর্মের কাল্পনিক কাহিনি গুলি মানুষ বিশ্বাস করে।আর বিশ্বাস করে বলেই রাজনীতিবিদেরা তা ব্যবহার করে। ধর্মের আজগুবি বাণী শুনিয়ে মানুষকে অন্ধকারে রাখতে পারলেই শাসকেরা তাদের সহজে ও বিনা বাধায় শাসন-শোষন করতে পারে। আর সেই জন্যেই তারা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা ধংস করে। জেলায় জেলায় থানায় থানায় ভাল গ্রন্থাগার না বানিয়ে ভাল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান না স্থাপন করে হাজার হাজার কোটি টাকা খরচ করে উপাসনালয় বানায়।
শিক্ষিত সমাজে বা শিক্ষিত ও উন্নত জাতীতে ধর্ম রাজনীতে নিয়ামকের ভূমিকা পালন করতে পারে না যদিও যার যার ধর্ম পালনে সেখানে কোন রাষ্ট্রীয় বা সামাজিক বাধা-নিষেধ নেই।চীন-জাপানের শতকরা ৯৫ ভাগ মানুষই কোন ধর্মে বিশ্বাস করে না।ইউরোপ এমেরিকায় ধর্ম আছে নামে মাত্র।তাই এসব দেশের রাজনীতিতেও ধর্মের কোন ব্যবহার নেই।
পিছিয়ে পরা জাতী সমূহ অনুন্নত ও দরিদ্র দেশ গুলিতে এবং মধ্য প্রাচ্যের কিছু ধনী কিন্তু অশিক্ষিত দেশেই ধর্মের ব্যবহার তথা ব্যবসা রমরমা।এসব দেশের শাসক গুষ্টি তাদের রাষ্ট্র ক্ষমতা টিকিয়ে রাখার জন্য বা ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য ধর্মকে ব্যবহার করে ইচ্ছেমত কিন্তু বাস্তবে তারা নিজেরা ধর্ম মানে না। মানার বা পালন করার ভান করে শুধু। ইলেকশনের আগে তারা তীর্থ ভ্রমন করে, প্রার্থনারত ছবি ফলাও করে প্রচার প্রকাশ করে, কেউ চিল্লায় যায় কেউ ধ্যানে বলে।এ সবই বোকা মানুষ গুলিকে ধোকা দেয়ার কৌশল ছাড়া আর কিছুই নয়।
দূর্বল ও দূর্নীতিপরায়ন শাসক গোষ্টি জনগনকে ধর্মের আফিম খাইয়ে পরকালে স্বর্গের ও নারীর লোভ এবং নরকের ভয় দেখিয়ে বুঁদ বানিয়ে রাখতে চায়।জ্ঞান বিজ্ঞানকে তারা ভয় পায়। মানুষ প্রকৃত জ্ঞানী হলে অলীক সুখের কাল্পনিক স্বর্গের লোভ ও কাল্পনিক নরকের ভয়মুক্ত হবে। তখন তাদের আর দাবিয়ে রাখা যাবে না। তারা প্রতিবাদি হবে, সাগর চুরি, রিজার্ভ চুরি, খাম্বা টাম্বার হিসেব তখন কড়ায় গন্ডায় দিতে হবে। তাই জ্ঞানী মানুষ আলোকিত মানুষে তাদের ভয় আর সেই ভয় থেকেই তারা দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা ধ্বংস করে, অত্যন্ত ঠান্ডা মাথায় সুপরিকল্পিত ভাবে এক সময়ের প্রাচ্যের অক্সফোর্ড কে পরিনত করে বড় মাদ্রাসায়।
Ignorance is similar to darkness. অজ্ঞতা অন্ধকারের সামিল।বাস্তবে অন্ধকারের কোন অস্তিত্ব নেই। আলোর আছে। আলো এক প্রকার শক্তি। আলোকে তাপ শক্তি ও শব্দ শক্তিতে রুপান্তর করা যায়।আলোর গতি আছে। অন্ধকারের কিছুই নেই। আলোর অভাবই অন্ধকার।অজ্ঞানতাই অন্ধকার।জ্ঞানই আলো। তাই ধর্মপ্রাণ বা ধার্মিক মানুষ নয়, আলোকিত মানুষ চাই।আলোকিত মানুষই পারে নিজের, পরিবারের, রাষ্ট্রের ও সমাজের এমন কি পৃথিবীর এবং বিধাতারও কল্যান সাধন করতে !
পার্ক এভিনিউ
ব্রোন্ক্স, ইয়র্ক
০২.০২.২০ সোমবার।
Post a Comment
যুক্তি সংগত কথা বলুন.................