হিন্দু জাতির মূল সমস্যাটি চিহ্নিত করতে হবে। মূল সমস্যাটি হচ্ছে 'সেক্যুলারিজম'। হিন্দু নামধারী এই সব সেক্যুলারদের ষড়যন্ত্রের কারণে,শত্রুর আক্রমণের মুখে হিন্দুরা একত্রিত হতে পারছে না। এই সেক্যুলাররা ভয়ঙ্কর বর্ণবাদী - এরা ভারতে আইন করে বর্ণভেদ প্রথা টিকিয়ে রেখেছে। সেক্যুলাররা হিন্দু জাতিকে বিভক্ত করে রেখে, শত্রু পক্ষকে সুযোগ করে দিচ্ছে।
পশ্চিমবঙ্গে একজন ধর্মান্তরিত মহিলাকে সবাই চেনেন। ওই মহিলার নাম উচ্চারণ করাও পাপ। ওই মহিলার সেক্যুলার পেটোয়া বাহিনীর অত্যাচারে,পশ্চিমবঙ্গে বসবাসকারী হিন্দুদের নাভিশ্বাস উঠে গেছে। ওদের আছে একদল ভাড়াটে সেক্যুলার বুদ্ধিজীবী। এইসব বুদ্ধিবেশ্যারা দিনরাত প্রচার করে চলেছে, 'যত মত তত পথ', 'সর্বধর্ম সমন্বয়' ইত্যাদি ; অথচ এরা হিন্দুদের মধ্যে বিভেদ-বিদ্বেষ উস্কে দিচ্ছে। কিছুদিন আগে তৃণমূলের এক বুদ্ধিজীবীর সাথে আলোচনা হচ্ছিল। আমি বলছিলাম, সমগ্র ভারতবর্ষের মধ্যে অবিভক্ত বঙ্গে বর্ণভেদের প্রকোপ তুলনামূলক অনেক কম ; এজন্য দু'জন মহামানবের অবদান শ্রদ্ধাবনত চিত্তে স্মরণ করতে হবে : একজন শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু, অপরজন শ্রী শ্রী হরিচাঁদ ঠাকুর। শুয়োরের বাচ্চায় বলে উঠলো, হরিচাঁদ ঠাকুর নমঃশূদ্র। আমার ইচ্ছে করছিল,জুতো খুলে ওকে দু'ঘা লাগাই। তবুও ধৈর্য রেখে বললাম,শ্রী শ্রী হরিচাঁদ ঠাকুর কিংবা কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর যদি ব্রাহ্মণ না হ'ন, তাহলে ভারতবর্ষে কোন ব্রাহ্মণ নেই।
ক্ষমতাধর ব্রাহ্মণ-বিদ্বেষী শাসকগোষ্ঠী এবং বিদেশি দখলদার স্বৈরশাসকরা ,যুগ যুগ ধরে অসহায়-দুর্বল-দরিদ্র ব্রাহ্মণদের সমাজচ্যুত করেছে - অস্পৃশ্যে পরিণত করেছে। শ্রী শ্রী হরিচাঁদ ঠাকুর কিংবা কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর-এর পূর্বপুরুষরাও, ওই বর্বর সমাজপতিদের আক্রোশ থেকে রেহাই পাননি।
কতিপয় অসাধু বংশানুক্রমিক ব্রাহ্মণ,পেটের দায়ে কিংবা প্রাণের ভয়ে, সমাজপতিদের দালালি করতে বাধ্য হতো। ব্রাহ্মণ-বিদ্বেষী শাসকগোষ্ঠী ও সমাজপতিরা ওই সব দালাল ব্রাহ্মণদের ব্যবহার করে, সমাজের উপর ছড়ি ঘোরাতো। এভাবে ব্রাহ্মণদের মাথায় কাঁঠাল ভাঙতে গিয়ে,এমন ব্রাহ্মণ-বিদ্বেষ সৃষ্টি হয়েছে - বাংলাদেশে ব্রাহ্মণের সংখ্যা এখন ১%-এ নেমে এসেছে ; পশ্চিমবঙ্গে সংখ্যাটা একটু বেশি,কিন্তু সেখানে ব্রাহ্মণরা একেবারেই প্রভাব-প্রতিপত্তিহীন। ব্রহ্মজ্ঞানীর সংখ্যাধিক্য ব্যতীত জাতীয় অগ্রগতি সম্ভব নয়। সমস্ত সনাতন হিন্দু-কে ব্রহ্মজ্ঞানে আলোকিত করে - যদি অতীতের মতো একটিমাত্র বর্ণ, ব্রাহ্মণ-এ উন্নীত করা না যায়, তাহলে কোনদিন হিন্দু জাতি ঐক্যবদ্ধ হতে পারবে না - সামনে আগাতে পারবে না - ধীরে ধীরে নিঃশেষ হয়ে যাবে।
অতীতের অবিবেচক বর্বর শাসকগোষ্ঠীর অন্যায্য সিদ্ধান্ত আমরা মানবো কেন! দলিত ও নমঃশূদ্র-রা অতীতে বংশানুক্রমিক ব্রাহ্মণ ছিল। আমরা উপনয়ন সংস্কার-এর মাধ্যমে, তাদের উচ্চ মর্যাদায় ব্রাহ্মণ-সমাজে ফিরিয়ে আনবো।
ওই সেক্যুলার বুদ্ধিজীবী যেরকম নমঃশূদ্র বিদ্বেষী, ঠিক সেইরকম ব্রাহ্মণ বিদ্বেষী। ওই লোকের বর্ণপরিচয়টা নাইবা দিলাম ; কারণ আর বিভেদ বাড়াতে চাই না । মোদ্দাকথা হিন্দু নামধারী সেক্যুলারদের মতো আহাম্মক, পৃথিবীতে নাই। আমি অন্য ধর্মের সেক্যুলারদের সাথে মিশে দেখেছি, তারা উপর উপর দারুণ সব মুখরোচক কথা বলে, কিন্তু ভিতরে ভিতরে প্রচণ্ড বিধর্মী-বিদ্বেষী।
Post a Comment
যুক্তি সংগত কথা বলুন.................