ইসলাম মতে কোন মুসলমান কাফেরদের দাফন বা শেষকৃত্য করা নাজায়েজ বা হারাম!

“হিন্দুদের দাহ করে খোরশেদ প্রমাণ করেছে ইসলামের সম্প্রীতি ও শিক্ষার সত্য লক্ষণ”

আমি ভীত ছিলাম কমিশনার খোরশেদের মানবিক এই উদ্যোগকে ইসলামবাদীরা ধর্মীয়ভাবে কুলষিত করতে আসবেই। সেটিই হয়েছে!



করোনায় আক্রান্ত লাশগুলো মুসলিম ও হিন্দু পরিবারগুলোও যখন শেষকৃত্য করতে অপারগ হচ্ছিল তখন কমিশনার খোরশেদ নিজের জীবন বিপন্ন করে এগিয়ে এসেছেন। এখানে ব্যক্তি খোরশেদই বাহবা পাবে, ইসলাম নয়। 

কেঁচো খুড়তে সাপ বেরিয়ে এলে কিন্তু পরিবেশটা আর সুন্দর থাকবে না! আপনি যদি খোরশেদ কমিশনারের এই মহত্ত্বকে ইসলামের উপর চাপাতে চান তাহলে বিতর্কে যা উঠে আসবে তা হজম করার ক্ষমতা কি আপনার আছে?

হিন্দুদের শশ্মানে গিয়ে যে লাশগুলো খোরশেদ দাহ করেছেন, মুখাগ্নি করেছেন তাতে হিন্দুরা দুই হাত তুলে সারা বাংলাদেশে অভিনন্দন জানিয়েছে। হিন্দুদের কোন ধর্মীয় সংগঠন বা ব্যক্তি কেউ খোরশেদের শেষকৃত্য করা নিয়ে প্রশ্ন তোলেনি। এই উদার্যতা কি আপনি ইসলামে পাবেন?

কোন মুসলিমকে একদল হিন্দু জানাজা দিয়ে দাফন করতে পারবে কি? এরকম ঘটনা কোথাও ঘটলে তৌহদী জনতা খুশি হবে নাকি মুসলিম মুর্দার ইসলামিক শেষকৃত্য না করার জন্য উল্টো এ্যাকশনে যাবে আমরা কেউ আগাম বলতে পারি না। 

মুসলিম হয়ে হিন্দু বন্ধুর লাশ দাহ করা, সব রকম হিন্দু আনুষ্ঠানিকতা পালন করার নিউজ আনন্দবাজার ঘাটলে দুই একটা পাবেন। মুসলিমদের কাছে হিন্দুদের ধর্ম হচ্ছে পুতুল খেলা। এসব যে কেউ করলেই হয়। কিন্তু মুসলিমদের জানাজা পড়াতে তাকে মুসলিম হতেই হবে! আমার ইচ্ছা ছিলো না খোরশেদের মানবিক উদ্যোগকে নিয়ে অপ্রিয় কিছু লিখি। কিন্তু ইসলামিক ধান্দাবাজদের কারণে তা আর সম্ভব হলো কই? 

জাতীয় দৈনিকগুলোও প্রকাশ করছে ‘ইসলামের উদারতা মহানতায়’ হিন্দুদেরও দাহ করছে খোরশেদ! এখন আমাকে তাই বলতে বাধ্য করছে ইসলাম মতে কোন মুসলমান কাফেরদের দাফন বা শেষকৃত্য করা নাজায়েজ বা হারাম! সুরা তওবা ৮৪ নম্বর আয়াতকে দলিল ধরে এটাকে হারাম ধরা হয়েছে।

“কখনো তাদের কেউ মারা গেলে তুমি তার জানাযা পড়ো না এবং তার কবরের পাশে দাঁড়িও না (দুআ-ইস্তিগফারের জন্য বা দাফন-কাফনের জন্য)। তারা তো আল্লাহ ও তাঁর রাসূলকে প্রত্যাখ্যান করেছে এবং না-ফরমান অবস্থায় মারা গেছে।(সূরা তাওবা আয়াত ৮৪)

ইমাম কুরতুবী রাহ. আয়াতটি তাফসিরে বলেন, এটি সকল কাফেরের জানাযা(শেষকৃত্য) নিষিদ্ধ হওয়ার সুস্পষ্ট দলিল।(আলজামি’ লিআহকামিল কুরআনিল কারীম ৮/১৪০)।

দেখুন ভাই, খোরশেদের এই মানবিক কাজের মধ্যে ইসলামকে ডেকে এনে পুরো বিষয়টা কি করকম কুৎসিত হয়ে গেলো! খোরশেদকে কাজ করতে দিন। তাকে মুসলমান বা ইসলাম বানাতে চেয়ে আপনারাই বিতর্ক তৈরি করছেন। এরপর এসব বিষয় নিয়ে মুফতি ইব্রাহিম কিংবা রাজ্জাক বিন ইউসুফ কথা বলা শুরু করলে পরিবেশ কিন্তু আরো অসুন্দর হয়ে যাবে!

0/Post a Comment/Comments

যুক্তি সংগত কথা বলুন.................

Stay Conneted