শিশু বলৎকারে মাদ্রাসাগুলো একটু বেশী এগিয়ে? বা বিষয়টা কি এমন যে অন্যান্য স্থানেও শিশু বলৎকার হচ্ছে কিন্তু সেগুলো আলোর মুখ দেখছে না? মাদ্রাসার শিক্ষকগণ ইসলামকে মনে প্রাণে ধারণ করেন কিনা সেটা বিতর্কিত বিষয়। কিন্তু এটা নিশ্চিত এরা শিশুকাম বা সমকাম এর বিষয়ে ইসলামের নির্দেশনা সাধারন মানুষের চাইতে বেশী জানেন। তবু একজন ধর্মিয় শিক্ষায় শিক্ষিত লোক কি করে বা কেন হারাম হওয়া সত্ত্বেও সমকাম শিশুকামকে রন্ধ্রে রন্ধ্রে এডাপ্ট করে নিয়েছেন সেটা খুবই জটিল বিষয়।
আফগানিস্তানে বাচ্চাবাজি মোটামুটি সামাজিক স্বীকৃত একটা ওপেন সিক্রেট। সেখানে নারীদের ঘরের বাইরে পর্দাহীন চলাফেরা নিষিদ্ধ। সারাদিন একজন পুরুষ নিজের মা বোন ছাড়া বলতে গেলে আর কোন নারীর চেহারা দেখেন না। পর্দা আরোপিত সমাজে পুরুষরা কিন্তু থেমে নেই। তারা শিশুদের উপর তাদের বিকারগ্রস্ত যৌনতা উগড়ে দিচ্ছেন দিনের পর দিন। বাচ্চাবাজীর নামে সেখানে শিশুকাম সমকাম চলছে যুগের পর যুগ। আফগানিস্তানে নারীদের পর্দার ভিতরে রাখার ফল বাচ্চাবাজি এরকম অনুসিদ্ধান্ত দিলে এদেশের মুসলমানরা ক্ষেপে যাবেন। উপমহাদেশে ইসলামের যখন স্বর্নযুগ ছিলো তখনো প্রভাবশালীরা সমকামিতার চর্চ্চা করেছেন শিশুকামিতায় মেতে থেকেছেন। অথচ ধর্ম তাদের এই যৌনতা অনুমোদন দেয় না। এটা প্রমাণ করে ধর্মিয় বিধিনিষেধ আসলে কাউকেই ক্রাইম থেকে বিরত রাখতে তেমন কোন সহায়তা করে না। বরং ধর্মিয় আবেগ থেকে ধর্ষক বা এবিউসিভ পুরুষরা 'আল্লা চাইলে সব কিছু মাফ করতে পারেন' এমন তত্বের দ্বারস্থ হয়ে তারা মনে মনে নিজেদের সন্তুষ্ট করে নিতে সুযোগ পেয়ে যান। ক্ষমতার জন্য জোড় জবরদস্তি করা মানুষগুলাও কিন্তু খুব ধার্মিক। তারাও একইভাবে নিজেদের প্রবোধ দেয় এবং প্রচন্ড আত্মবিশ্বাস নিয়ে নিজের জোড়জবরদস্তির পক্ষে সাফাই গায়। এটা করা সম্ভব হয় কারণ তিনি ইবাদতে বসে তার স্রষ্টার কাছে কান্নাকাটি করে মাফ পেয়ে যাওয়ারও বন্দোবস্ত করে নিয়েছেন।
মাদ্রাসাগুলোতে অবস্থান করা শিক্ষকদের ধর্ষকামি হয়ে উঠার অনেক কারণ আছে। প্রথমত তারা নির্জন আয়োজন করতে পারেন চাইলেই। দ্বিতীয়ত তারা নারী দেখতে পান খুব কম সময়ের জন্য। যখন বিশ্ববিদ্যালেয় পড়তাম তখন দেখেছি মেরিনার বা আর্মিতে ঢোকা সমবয়েসিরা যখন ছুটি পেতেন তখন ওরা শহরে আসতেনই নারী দেখতে এবং তাদের দৃষ্টিতে প্রচন্ড উৎসাহের সাথে লালশাও চোখে পরত। এর প্রধান কারণ ওরা দীর্ঘদিন কোন নারী দ্যাখে নি। এটা খুবই স্বাভাবিক চরিত্র পুরুষদের। এটা স্পষ্টই প্রমাণ করে নারীদের না দেখে যৌবন কাটানো মনোজগতে বেশ কিছু প্রভাব ফ্যালে। তার আচার আচরন বদলে দেয় এমনকি তার মধ্যে অকারণ অতৃপ্তি সৃষ্টি করে। একই বিষয় নারীর ক্ষেত্রেও ঘটতে পারে। এই অকারণ অতৃপ্তি মানুষকে হিংস্র করে দিতে পারে, বিবেক বুদ্ধিহীন কাপুরুষ বানিয়ে দিতে পারে।
মাদ্রাসার হুজুরগণ এমন অতৃপ্তি নিয়েই থাকেন এবং সুযোগ খুঁজতে থাকেন তৃপ্ত হওয়ার। তিনি যখন শিশু ছিলেন তিনিও হয়তো একই লালশার শিকার হয়েছেন। তিনি অনেকটা ভিন্ডিকটিভ আচরন করেন নিজের অবস্থান বদলে যাবার পর। বাচ্চারা যখন যৌনতা বোঝেই না তখন তার উপর এই আক্রমনের হেতুও সে বুঝতে পারে না। তবে সে সমবয়েসী অন্যদের কাছ থেকে জানতে পারে যে বিষয়টা লজ্জার এবং এ নিয়ে চুপ থাকাই ভালো। সে সত্যি চুপ থাকে। লালশার শিকার শিশু শারীরিক এবং মানসিক পেইন নিয়েও ভুলে থাকতে চায় সবকিছু। অবাক করা বিষয় হল সে শিক্ষককে সম্মান দেখাতেও বাধ্য হয় নিয়ম করে। এটা একটা ভয়াবহ মানসিক অবস্থা।
আরেকটা সঙ্কটে পরে বাচ্চারা। সে হল সমবয়েসিরা সবাই তাকে হীন দৃষ্টিতে দেখে এবং এনিয়ে তাকে মানসিকভাবে নিয়মিত উত্যক্ত করে থাকে। সেকারণে ওরা এসব শেয়ার করতে চায় না। শিশুকামিরা ঠিক এটাকেই অস্ত্র হিসাবে নেয়। যেহেতু শিশুরা বিষয়টা কাউকে বলে না তাই ওরা মোটামুটি নিজেদের নিরাপদ মনে করেই কাউকে ভিক্টিম বানানোর জন্য প্রতিনিয়ত পথ খুঁজতে থাকে। সেই পথ খুঁজে পেতে সবচে সুবিধাজনক অবস্থানে থাকে হুজুরেরা। কারণ ওরা বাচ্চাদের খুব কাছে থেকে সারাদিন ধরে অবজার্ভেশন করে সহজেই বুঝতে পারে কে প্রতিবাদ করবে আর কে করবে না। ভিক্টিম বাছাই করতে এমন বদ্ধ পরিবেশ ওদের অনুকুলেই কাজ করে।
শিশুকামি পুরুষরা যে কেবল আমাদের দেশেই বাস করে তেমন নয়। সারা পৃথিবীতেই শিশুকামিতার চর্চ্চা হচ্ছে। কিন্তু পশ্চিম এগুলোকে এড্রেস করে যথাযথ ব্যবস্থা নিয়েছে। ওরা একটা চেকপয়েন্টে বাচ্চাদের কাছ থেকে জেনে নেয় তার উপর এবিউসিভ কিছু করা হয়েছে কি না। শিক্ষকরা প্রতিদিনই একটা বাচ্চাকে গতকাল সে সারাদিন কি কি করেছে এমন সব প্রশ্ন করে সবকিছু জেনে নেয় এবং আইনি কাঠামোসহ প্রশাসনকে এসব মনিটর করতে কাজে লাগায়। বাচ্চাদের কাছে জীবন যাপনের ধারাবাহিক বর্ণনা শুনেই ওরা বুঝতে সে কারো লালশার শিকার হয়েছে কিনা বা সেরকম কোন সম্ভাবনার মধ্যে আছে কিনা। সরকারের নিয়োজিত সোস্যাল কর্মিরাও শিশুদের অজান্তেই তাদের জেরা করে সবকিছু জেনে নেয় নিয়ম করে।
যে পদ্ধতি পশ্চিম অনুসরন করছে সেটা নাগরিকদের প্রতি পশ্চিমের কমিটমেন্ট এর স্তর সম্পর্কে ধারনা দেয়। এদেশে রাষ্ট্র কদাচিৎ নাগরিকদের জন্য হা হুতাশ করলেও একটা বিজ্ঞানভিত্তিক পদক্ষেও গ্রহণ করে নি এখনো। মাদ্রাসাগুলোকে বাপদাদার সম্পদ মনে করে যারা এগুলো পরিচালনা করে তারা। কোন রকম জবাবদিহীতার প্রয়োজনই মনে করে না মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ বা রাষ্ট্রের কোন দপ্তর। শিশু বলৎকারের যতগুলো ঘটনা আমরা প্রতিদিন শুনি তার চাইতে লক্ষগুন ঘটনা ঘটে প্রতিদিন দেশের নানাপ্রান্তে। যে বাচ্চাটা রাস্তার মোড়ে গাড়ি মোছার জন্য দাঁড়িয়ে থাকে সে যেমন নিরাপদ নয় তেমনি গাড়িতে বসে থাকা কোন শিশুও নিরাপদ নয় দেশের আপামর পুরুষদের কাছে। পদ্ধতিগত কোন মেজার না নিলে এবং নারী ও শিশুদের প্রতি জাতীয় কমিটমেন্ট গড়ে না তুললে একদিন উত্তরপুরুষেরা আমাদের অভিশাপ দেবে আমাদের অনুসৃত ক্ষমতালোভী অযোগ্য পন্থা অবলম্বন করার জন্য।
Post a Comment
যুক্তি সংগত কথা বলুন.................