ফান্ডামেন্টালিস্ট মুমিন বনাম মুক্তিযুদ্ধের চেতনার মুমিন বাংলাদেশ।
……………………………………………………………
কাবাঘরে ৩৬০টা মূর্তি ভাঙ্গার পরে সেখানে একটা মেরির হাতে আঁকা ছবি পাওয়া গিয়েছিলো। সেই ছবিটা কিন্তু নবীজি সরিয়ে ফেলেনি বা নষ্ট করে ফেলেননি। এ থেকে আমরা কি বুঝতে পারি? নবীজি শিল্পকর্মের অনুরাগী ছিলেন। তিনি মূর্তি ভেঙ্গেছিলেন। কিন্তু শিল্পকর্মে হাত দেননি। আমরাও হুজুর শেখ সাহেবের মূর্তি বানাইনি, আমরা শেখ সাহেবের ভাস্কর্য বানাইছি। ভাস্কর্য হচ্ছে শিল্প। মূর্তি বানায় হিন্দুরা পুজা করতে। মূর্তি বানায় তারা সেই মূর্তির নিচে মাথা ঠেকায়। আমরা কি শেখ সাহেবের সামনে মাথা নত করি বলেন? শহীদ মিনারে যে আমরা ফুল দেই সেটাও কিন্তু পুজা না। আমরা তো শহীদ মিনারের কাছে কিছু চাই না। এগুলি হিন্দুদের কাজ। তারা মাটি পাথর দিয়া কিছু বানাইয়া তার কাছে প্রার্থনা করে। কিন্তু শহীদ মিনার হচ্ছে আমাদের স্বাধীনতার প্রথম প্রহর। তাই সন্মান জানাই। আপনাদের আসলে ভুল বুঝানো হয়েছে। ঐ মৌদুদি জামাত ইসলাম এইসব ছড়িয়েছে। আমরা হুজুর জামাত বিরোধী, ইসলাম বিরোধী না। আমরা হজ করি, তাহাজ্জুত পড়ি। হালাল খাই। মাঝে মাঝে রবীন্দ্র সংগীত শুনি তবে রোজ সকালবেলা কুরআন পড়ি। …তাই হুজুরের কাছে বিনিত আবেদন, শেখ সাহেবের ভাস্কর্যকে মূর্তি বলে আপনাদের ভুল বুঝানো হয়েছে। এর পিছনে স্বাধীনতা বিরোধী বিএনপি-জামাতের হাত দেখতে পাচ্ছি। হুজুর যেন অনুগ্রহ করে সব দিক বিবেচনা করে ভাস্কর্য আর মূর্তির তফাত বুঝতে পারেন তাহলে চিরকৃতজ্ঞ থাকিব…।
অনেকটা এরকমই কন্ঠস্বর অনেকের।
হেফাজত ইসলামের ১৩ দফার পরও দেখেছিলাম আওয়ামী এক্টিভিস্টরা ১৩ দফাকে কুরআন হাদিস পরিপন্থি বলছিলো। মানে ১৩ দফা কুরআন হাদিস পরিপন্থি না হলে তাদের আপত্তি ছিলো না। সেদিন সরকারী এক আলেমকে দেখলাম বলছে, ইসলাম মিথ্যা গুজব ছড়িয়ে সংখ্যালঘুদের উপর আক্রমন সমর্থন করে না। এ কথার মানে কি? গুজব সত্য হলে আক্রমন সঠিক হত? কিংবা ইসলাম এগুলোকে সমর্থন করলে কোন সমস্যা ছিলো না? বারবার কেন নৈতিকতাকে ধর্ম দিয়ে জাস্টিফাই করা হচ্ছে? মূর্তি আর ভাস্কর্যের তফাত যারা শেখাচ্ছেন তারা আসলে বলতে চাইছেন মূর্তি ভাঙ্গা দোষের নয়? প্রতি বছর শরৎকালে হিন্দুদের মূর্তি ভাঙ্গার সময় এই কারণেই আপনারা চুপ থাকেন? সরকার মূর্তি ভাংচুর নিয়ে কখনই কোন ব্যবস্থা এই কারণেই নেয় না?
চিন্তা করেন আওয়ামী লীগ জাতির পিতার সন্মান রক্ষার জন্য আইন বানিয়েছে। অনলাইনে চিপায় চাপায় কে কার অনুভূতি ডলে দিলো ওমনি সরকারের পুলিশ গিয়ে তাকে ধরে আনছে। অথচ ৪৮ ঘন্টা পার হয়ে গেছে চরমোনাই পীরকে কেউ টাচ করতে পারল না! বেরিস্টার সুমন তো যুবলীগের কেন্দ্রিয় কমিটিতে জায়গা পেয়েছে। সে তো প্রিয়া সাহার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহিতার মামলা করতে আদালতে গিয়েছিলো। এখন কেন চরমোনাই পীরের বিরুদ্ধে মামলা করতে যাচ্ছে না? ঢাকার একটা উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী ভোট পেয়েছে সাড়ে তিন লাখ। বিএনপির প্রার্থী পেয়েছে মাত্র সাড়ে চারশো ভোট! এমন জনপ্রিয় ও জন সমর্থিত দল চরমোনাই পীরের মত একটা লোককে ভয় পাচ্ছে কেন? ছাত্রলীগরা তাহলে কোথায়? দেশের ৬৪ জেলায় মামলা করে সাংবাদিক নির্যাতনকারী আওয়ামী উকিলরা কোথায়? আরে ব্যাটা যে মানুষটা বাংলাদেশের জন্মের জন্য জেল খেটেছে, বাঙালী মুসলমানের রাজনৈতিক অধিকার আদায়ে পাঞ্জাবী পাঠান সিন্ধিদের সঙ্গে লড়াই করেছে, যার আত্মত্যাগের কারণে এখন দেশের টাকা পাচার করে সুইস ব্যাংকে ভরে ফেলছিস, অন্তত এই সুযোগ করে দেয়ার জন্য তাঁর অপমানের বিরুদ্ধে সোচ্চার হ! দেখি চরমোনাই পীরকে বুড়িগঙ্গায় চুবাতে পারিস নাকি নিজেরাই নাকানিচুবানি খাস!
Post a Comment
যুক্তি সংগত কথা বলুন.................